তুরস্কের পাশে দাঁড়াল ডিএনসিসি

“তুরস্কের ভূমিকম্পের ঘটনা থেকে বাংলাদেশের অনেককিছু শেখার আছে। শুধু ভবন করলেই হবে না। সামনে অনেক খোলা জায়গা এবং মাঠ থাকতে হবে,” বলেন মেয়র।

ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত তুরস্কে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য গরম কাপড়, কম্বল, রুম হিটারসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সামগ্রী দিল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরশন।

সোমবার গুলশানের নগর ভবনে এক অনুষ্ঠানে এসব সামগ্রী হস্তান্তর করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। তুরস্ক সরকারের পক্ষে সহায়তা সামগ্রী গ্রহণ করেন সেদেশের তুর্কি সহযোগিতা ও সমন্বয় সংস্থার সহকারী পরিচালক আহম্মেদ ফারুক মোস্তাকঅলু।

ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম জানান, সহায়তা হিসেবে ডিএনসিসির কাউন্সিলররা তাদের এক মাসের সম্মানী দিয়েছেন। এছাড়া উত্তরার একটি সামাজিক সংগঠন, বিজিএমইএ ও কয়েকজন ব্যক্তি সহায়তা করেছে।

সব মিলিয়ে ৩৩০০টি জ্যাকেট, বাচ্চাদের জন্য ৩১০০টি জ্যাকেট, ১০০০টি রুম হিটার, ৬৬৩৬টি কম্বল, ৩৪৮২টি সোয়েটার, ৭৩৬০টি হুডি এবং ৬ কার্টন উলের কাপড় দেওয়া হয়েছে।

সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আহম্মেদ ফারুক মোস্তাকঅলু বলেন, “আমরা কিছুটা সহযোগিতা চেয়েছিলাম। কিন্তু বাংলাদেশ আমাদের জন্য যা করছে- তা আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি। বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে বিপদের বন্ধুই প্রকৃত বন্ধু। বাংলাদেশের মানুষের এসব সহায়তা তুরস্কে পৌঁছানোর জন্য প্রস্তুত।”

ডিএনসিসির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, “বিপদের সময় যে পাশে দাঁড়ায় সেই প্রকৃত বন্ধু। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত প্রকৃত বন্ধু হিসেবে বাংলাদেশের মানুষকে আশ্রয়, খাদ্য এবং মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করেছে।

“তুরস্ক বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু। তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারার একটি প্রধান সড়কে বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য করা হয়েছে, একটি পার্কের নামকরণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর নামে। আমি মনে করি, বন্ধু হিসেবে তুরস্কের বিপদে পাশে থাকা দরকার।”

মেয়র বলেন, “তুরস্কের ভূমিকম্পের ঘটনা থেকে বাংলাদেশের অনেককিছু শেখার আছে। শুধু ভবন করলেই হবে না। সামনে অনেক খোলা জায়গা এবং মাঠ থাকতে হবে।

“বারবার বলছি, খেলার মাঠ যেমন বিনোদনের জন্য দরকার, তেমনি যখন দুর্যোগ আসবে তখন ভবন থেকে নেমে যেন মানুষ আশ্রয় নিতে পারে। জরুরি অবস্থার সময় খেলার মাঠে আশ্রয় নিতে হবে।”

গত ৯ ফেব্রুয়ারি তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে দেশটিতে ব্যাপক প্রাণহানি এবং ক্ষয়ক্ষতি হয়।

১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মুস্তাফা ওসমান তুরান এক সংবাদ সম্মেলনে তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পে সৃষ্ট মানবিক সংকটে সহায়তার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের কাছ থেকে শীতের কাপড়, খাদ্যসামগ্রী ও ওষুধ চান। তবে দেশটি নগদ কোনো অর্থসহায়তা নেবে না বলে সেদিন জানিয়েছেন তিনি।