‘বুনিয়া সোহেল’ গ্রেপ্তার হওয়ার খবরের পর তার প্রতিপক্ষ ‘চুয়া সেলিম’ পুরো এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করলে সোহেলের লোকজন বাধা দেয়। তাতে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
Published : 01 Nov 2024, 08:15 PM
ঢাকার মোহাম্মদপুরের জেনিভা ক্যাম্পে মাদক কারবারিদের দুই পক্ষের ধারাবাহিক সংঘর্ষের ঘটনার মধ্যে এবার ক্যাম্পের ‘শীর্ষ মাদক কারবারি’ ভূঁইয়া সোহেল ওরফে বুনিয়া সোহেলসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে র্যাব।
শুক্রবার র্যাব-২ এর পাঠানো এক বার্তায় জানানো হয়, বৃহস্পতিবার রাতে সিলেটের কোতোয়ালি ও হবিগঞ্জের মাধবপুর এলাকা থেকে র্যাব-২ ও র্যাব-৯ এর যৌথ অভিযানে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার বাকিরা হলেন- আমীর হোসেন হীরা, জামাল হোসেন, শাহীনুর বেগম, আনোয়ার হোসেন, মিঠুন, সাহিল, নাঈম, আজিম, নূর বেগম, ভানু বেগম ও সাকিব হাসান। তারা সবাই সোহেলের সহযোগী বলে র্যাবের ভাষ্য।
বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে জেনিভা ক্যাম্পে মাদক কারবারিদের দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে বোমার আঘাতে রাজা নামের একজনের প্রাণ যায়।
পুলিশ বলছে, ২৮ বছর বয়সী ওই যুবক মাদক কারবারি ‘বুনিয়া সোহেল’ গ্রুপের সদস্য। বুনিয়া সোহেল গ্রেপ্তার হওয়ার খবরের পর তার প্রতিপক্ষ ‘চুয়া সেলিম’ পুরো এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করলে সোহেলের লোকজন বাধা দেয়। তাতে মধ্যরাতে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তাদের সংঘাতে ব্যবহৃত হয় থানা থেকে লুট হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র। গত তিন মাসে সেখানকার সংঘাতে রাজাসহ অন্তত পাঁচজনের প্রাণ গেছে।
র্যাব-২ থেকে পাঠানো বার্তায় জানানো হয়, “সম্প্রতি মোহাম্মদপুর থেকে ডাকাত ও ছিনতাইকারী দলের ৩০-৪০ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-২। গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে জানা যায়, বুনিয়া সোহেলের নেতৃত্বে মোহাম্মদপুরের জেনিভা ক্যাম্প ও তার আশেপাশের এলাকার মার্কেট, বাস স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি, অপহরণ, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা, খুন, ধর্ষণসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
“এর প্রেক্ষিতে গোয়েন্দা নজরদারীর ধারাবাহিকতায় সোহেলসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোহেলের বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন থানায় হত্যা, অবৈধ অস্ত্র, মাদকসহ ১৮টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।”
জেনিভা ক্যাম্পের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বছর কয়েক আগে পুরো ক্যাম্পের মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ছিল নাদিম হোসেন ওরফে পাঁচ্চিশ ও ইশতিয়াক নামের দুই যুবকের হাতে। দুজনই মাদক কারবার করে বিপুল অর্থের মালিক হয়েছিলেন, পালতেন ব্যক্তিগত বাহিনী।
২০১৮ সালের জুলাইয়ে পূর্বাচলে র্যাবের ‘ক্রসফায়ারে’ নিহত হন পাঁচ্চিশ। এরপর ভারতে পালিয়ে যান ইশতিয়াক। মহামারীর সময় কোভিড আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান বলে ক্যাম্পে জনশ্রুতি আছে। এরপর থেকেই ইশতিয়াক আর পাঁচ্চিশের মাদক সাম্রাজ্য দখলের প্রতিযোগিতা শুরু হয়, যা এখন রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের রূপ নিয়েছে।