২০২০ সালে আদালত অবমাননায় দণ্ড দেওয়া হয়েছিল অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দকে, যা ‘অসাংবিধানিক’ ছিল বলে এ আইনজীবীর দাবি।
Published : 28 Aug 2024, 01:26 PM
সাবেক তিন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও ওবায়দুল হাসান এবং আপিল বিভাগের চার সাবেক বিচারকের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ করেছেন এক আইনজীবী।
সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ বুধবার হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ অভিযোগ জমা দেন।
অন্য চার বিচারক হলেন আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. ইমান আলী, মির্জা হোসেন হায়দার, আবু বকর সিদ্দিকী ও মো. নুরুজ্জামান।
অভিযোগে বলা হয়েছে, তারা সবাই ‘ক্ষমতার অপব্যহার করে আইনগত এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে অসাংবিধানিকভাবে’ আদালত অবমাননা আইন ১৯২৬ ‘লংঘন’ করে শুনানির সুযোগ না দিয়ে আদালত অবমাননার নামে মো. ইউনুস আলী আকন্দকে শাস্তি দেন।
প্রথমে ২০২০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর শুনানির সুযোগ না দিয়ে সুপ্রিম কোর্টে তার মামলা লড়ার সুযোগ স্থগিত করাসহ আদালত অবমাননার রুল জারি করা হয়। তারপর ২০২০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর মামলা লড়ার সুযোগ তিন মাসের জন্য স্থগিত করার পাশাপাশি জরিমানা করা হয়।
ইউনুস আলী আকন্দ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আদালত অবমাননা হলে আদালত অবমাননা আইন ১৯২৬ এর ৩ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে হাই কোর্ট শাস্তি দিতে পারে, কিন্তু আপিল নয়। বার কাউন্সিল আইনের ৩২ ধারায় ট্রাইব্যুনাল আইনজীবীর পেশাগত অসদাচরণ প্রমাণিত হলে পেশা সাসপেন্ড করতে পারে, কিন্তু আপিল নয়।
“তারা হাই কোর্টে মামলা করলে আমি আপিল বিভাগে যেতে পারতাম। কিন্তু আমাকে সরাসরি আপিল বিভাগে ডেকে নিয়ে কনটেম্পট আদেশ দিয়ে দিলেন। আমার আর আপিল করার কোনো সুযোগ থাকল না।”
কী কারণে ওই সময় তাকে সাজা দেওয়া হয়েছিল, সেই প্রশ্ন করা হলে এ আইনজীবী বলেন, “এই বিচারপতিরা বিচার বিভাগকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছেন মর্মে ফেইসবুকে পোস্ট দিয়েছিলাম। ওই কারণে আদালত অবমাননার সাজা দেয় আপিল বিভাগ।”
ইউনুস আলী আকন্দ বলেন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এবং ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এক নয়। ভারতের সুপ্রিম কোর্টে সরাসরি মামলা করা যায়। আর বাংলাদেশে সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হাই কোর্ট বিভাগে সরাসরি মামলা করা যায় এবং ১০৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আপিল বিভাগে আপিল হয়। আপিল বিভাগে সরাসরি মামলা করা যায় না। হাই কোর্টের আদালত অবমাননা রায়ের বিরুদ্ধে অনুচ্ছেদ ১০৩ (২) (গ) অনুযায়ী আপিল বিভাগে আপিল হয়।
“উক্ত বিচারাপতিগণ ক্ষমতা বহির্ভূতভাবে শপথ ভঙ্গ করে আমাকে শুনানির সুযোগ না দিয়ে অন্তবর্তী আদেশ দিয়ে প্র্যাকটিস ডিবার্ড করেন, যা সংবিধানের ১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মানবাধিকার লংঘন।”
বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি মোহাম্মদ মাহবুব-উল ইসলামের কোর্টে এ আবেদনের শুনানি করবেন বলে জানান ইউনুস।