মাছসহ দেশের প্রাকৃতিক খাদ্য বৈচিত্র্য রক্ষার ওপর জোর দিতে বলেছেন তিনি
Published : 11 Dec 2024, 08:55 PM
‘অপরিকল্পিত উন্নয়ন’ দেশের খাদ্য জোগানে সবচেয়ে বড় বাধা বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
তিনি বলেন, “রাস্তাঘাট বানানোর মতো অপরিকল্পিত উন্নয়ন খাদ্য জোগানে সবচেয়ে বড় বাধা। অনিরাপদ কৃষিচর্চার ফলে আমরা নিরাপদ খাদ্যের যোগান নিশ্চিত করতে পারছি না। এতে পুষ্টি নিরাপত্তাও নিশ্চিত হচ্ছে না।”
বুধবার হোটেল শেরাটনে ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফে বাংলাদেশ ও কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড বাংলাদেশ আয়োজিত ‘ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশে পথে: বাধা এবং উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে ফরিদা আখতার এই মন্তব্য করেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়, বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক ২৪ প্রকাশ উপলক্ষে বেসরকারি সংস্থা দুটি যৌথভাবে আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড এবং ওয়েল্ট হাঙ্গার হিলফ যৌথভাবে বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক (জিএইচআই) প্রকাশ করে থাকে। অক্টোবরে প্রকাশিত তাদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচকে তিন ধাপ অবনমন হয়ে এবার ১২৭টি দেশের মধ্যে ৮৪তম অবস্থানে নেমেছে বাংলাদেশ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি অপুষ্টির কারণে থমকে গেছে। সূচকে বাংলাদেশের এবারের স্কোর ১৯ দশমিক ৪। গত বছর বাংলাদেশের স্কোর ছিল ১৯, ঠাঁই হয়েছিল সূচকের ৮১তম স্থানে।
ক্ষুধা সূচকে যে দেশের স্কোর যত কম, তাদের ক্ষুধার মাত্রা তত কম অর্থাৎ ক্ষুধামুক্ত বোঝায়।
অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, মাছসহ বাংলাদেশে প্রাকৃতিক খাদ্য বৈচিত্র্য রক্ষার ওপর জোর দিতে হবে। শস্য উৎপাদনে কীটনাশক ও হার্বিসাইড ব্যবহারের ফলে অসংক্রামক রোগ ক্যান্সারসহ বিভিন্ন ব্যাধি বাড়ছে।
“তাই এ বিষয়ে আমাদের ভাবতে হবে। মানুষ যদি নিজের খাবার নিজে উৎপাদন করতে পারে কেবল তাহলেই বলা যাবে আমরা ক্ষুধা মেটাতে পারছি।”
সরকারের দিক থেকেও খাদ্য আমদানি করা উচিৎ নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ফরিদা আখতার বলেন, “অনেকেই ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল ফার্মের কথা বলে থাকেন কিন্তু এখনো দেশের বিভিন্ন চরাঞ্চলে মহিলারা হাস, মুরগী, গরু, ছাগল লালন-পালন করে স্বাবলম্বী হচ্ছে। খাদ্য নিরাপত্তায় নারীর লোকজ জ্ঞানকেও গুরুত্ব দেওয়া উচিত।”
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, পৃথিবীতে এখনও খাদ্যের জন্য ‘হাহাকার’ থেমে নেই ।
“আমরা রেডিও, টিভি, ইউটিউব চ্যানেল, এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখতে পাচ্ছি, ফিলিস্তিনের গাঁজাতে শিশুরা খাদ্যের জন্য হাহাকার করছে, সেখানে আমরা কীভাবে বলতে পারি ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী আছে।”
পুরনো খবর: