ঢাকা উত্তর সিটি ধারণা করছে এবার ২০ হাজার টনের বেশি বর্জ্য হতে পারে। দক্ষিণ সিটির ধারণা ১৮ হাজার টন অপসারণ করতে হবে তাদের।
Published : 15 Jun 2024, 10:16 PM
ঢাকায় কোরবানি করা পশু এবং কোরবানির হাট মিলিয়ে অন্তত ৩৯ হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হবে ধরে নিয়ে সেগুলো দ্রুততম সময়ে অপসারণের চ্যালেঞ্জ নিয়েছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন।
ঈদের দিন দুপুর দুইটা থেকে এই বর্জ্য অপসারণ শুরু হবে। ঢাকা উত্তরের লক্ষ্য বেশ উচ্চাভিলাসী, তারা ছয় ঘণ্টার মধ্যে আর দক্ষিণ সিটি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শহর পরিচ্ছন্ন করার ঘোষণা দিয়েছে।
গতবারের ঈদের অভিজ্ঞতায় সিটি করপোরেশন যে কর্মপরিকল্পনা সাজিয়েছে তাতে এবার সাড়ে ১২ লাখ পশু কোরবানি হতে পারে বলে ধারণা করছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন।
গত বছর ঈদের তিন দিনে ১৯ হাজার ৬৪৪ টন বর্জ্য অপসারণ করেছিল ঢাকার উত্তর অংশের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা এই করপোরেশন। এবার বর্জ্য আরও কিছুটা বাড়তে পারে বলেও ধারণা করছে তারা।
অন্যদিকে ঢাকার দক্ষিণ অংশে হত বছর কত পশু কোরবানি হয়েছিল সে তথ্য নেই। তবে ওই বছর ১৭ হাজার টনের বেশি বর্জ্য উৎপন্ন হয়েছিল। এবার তা ১৮ হাজার টন ছাড়াতে পারে বলে ধারণা করছেন কর্মকর্তারা।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন কোরবানির বর্জ্য অপসারণে ১১৫টি ডাম্প ট্রাক, ১৪০টি পিক-আপ, ১২৯টি কমপেক্টরসহ ৫২০টি বিশেষায়িত যান প্রস্তুত রেখেছে
২৮টি ওয়ার্ডে ডিএনসিসির নিজস্ব ২ হাজার ৩৯৪ জন, ২৬টি ওয়ার্ডে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ২ হাজার ৩২৩ জন পরিচ্ছন্ন কর্মী, ৪ হাজার ২০০ জন ভ্যান সার্ভিস কর্মী এবং ৪২০ জন মিলিয়ে ৯ হাজার ৩৩৭ জন কর্মী এই পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে অংশ নেবে।
ডিএনসিসি কোরবানির পশুর বর্জ্য রাখার জন্য ৯ লাখ ৪০ হাজার পলিব্যাগ, এক লাখ বায়োডিগ্রেডেবল পলিব্যাগ, ৬৭ হাজার কেজি ব্লিচিং পাউডার নগরবাসীকে সরবরাহ করবে। সড়ক জীবাণুমুক্ত করতে ব্যবহার করা হবে সাড়ে চার হাজার লিটার স্যাভলন।
ঢাকা উত্তরের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এক সময় কোরবানির ঈদের বর্জ্য সরাতে কয়েকদিন সময় লেগে যেত। আস্তে আস্তে কমিয়ে গত বছর ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসা হয়। এবার সেটি আরও কমিয়ে ৬ ঘণ্টা করা হয়েছে।
“কোরবানির ঈদে আমি নিজে মাঠে থাকি। থাকেন কাউন্সিলররা। এদিন কাউকে ছুটি দেওয়া হয় না। আমাদের টার্গেট নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বর্জ্য পরিষ্কার দেওয়া। আমরা এবার হাটের ইজারাদারদের কাছ থেকে ১০ শতাংশ হারে জামানত রেখেছি। কারণ অনেক ইজারাদার হাট পরিষ্কার না করে চলে যায়। সেটা পরিষ্কার করবে কে? জামানতের টাকা থেকে ওই খরচ কেটে রাখা হবে।”
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে বর্জ্য অপসারণে ৪ হাজার ৯৯৭ জন নিজস্ব ও সাড়ে চার হাজার বেসরকারি কর্মী কাজ করবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে থাকবে ৬০ জন করে।
বর্জ্য অপসারণে ২০৭টি ডাম্প ট্রাক, ১৫০টি মিনি ট্রাক, ৪৬টি কম্পেক্টর এবং ৪৭টি পে লোডারসহ ৫৬০টি যান নিয়োজিত থাকবে।
ডিএসসিসি এলাকার ১১টি হাটের প্রতিটিতে ৭০ জন করে পরিচ্ছন্ন কর্মী কাজ করবেন। এছাড়া হাটের বর্জ্য অপসারণে নিয়োজিত থাকবে ৫৭টি ডাম্প ট্রাক, ১২টি পে লোডার এবং ১১টি টায়ার লোডার।
সড়কের বর্জ্য অপসারণের পর জীবাণুমুক্ত করতে ৪০ টন ব্লিচিং পাউডার, ১ হাজার ১১০ লিটার স্যাভলন ব্যবহার করবে ডিএসসিসি।
কোরবানির পশুর বর্জ্য রাখার জন্য ৯ লাখ ৪০ হাজার পলিব্যাগ এবং ১ লাখ বায়োডিগ্রেডেবল পলিব্যাগ নগরবাসীকে বিনামূল্যে সরবরাহ করা হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বুধবার সাংবাদিকদের বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আগের বছরের অভিজ্ঞতা পর্যালোচনা করে এবারের বর্জ্য অপসারণের কর্মকৌশল ঠিক করেছেন তারা।
“ঈদের দিন যে বর্জ্য সৃষ্টি হবে তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারিত হবে। পরের দিন যে বর্জ্য সৃষ্টি হবে সেটাও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারিত হবে। যেহেতু চাঁনরাত থেকে হাটে পশুর সংখ্যা, হাটের পরিধি ও বিক্রি কমে যায় সেহেতু সেদিন মধ্যরাত থেকে আমরা হাটের বর্জ্য অপসারণের কাজ শুরু করব”, বলেন মেয়র।