শেখ হাসিনা বলেন, “তারা কীভাবে শিক্ষা দেয়, কী কারিকুলাম শেখায়, কীভাবে কোন পদ্ধতি ব্যবহার করে, আমরা তা অনুসরণ করতে চাই।”
Published : 31 Dec 2023, 03:43 PM
বিশ্বের নামি-দামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠ্যক্রম অনুসরণ করে দেশে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যের কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের কিছু শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের 'বই উৎসব' উদ্বোধন করে এই পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।
সোমবার নতুন বছরের প্রথম দিনে সারাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে পাঠ্যবই বিতরণ করা হবে।
সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যত টাকা লাগে আমরা দেব। আন্তর্জাতিক যত নামি দামি বিশ্ববিদ্যালয় আছে- তারা কীভাবে শিক্ষা দেয়, কী কারিকুলাম শেখায়, কীভাবে কোন পদ্ধতি ব্যবহার করে, আমরা তা অনুসরণ করে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা বাংলাদেশে তৈরি করতে চাই।
“সেই সাথে হাতে কলামে শিক্ষা (দেওয়া), যাতে করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়।"
প্রাথমিকের বই উৎসব মিরপুরে, মাধ্যমিকের কুমিল্লায়
‘সমালোচনা এড়াতে’ পাঠ্যপুস্তক প্রস্তুতে বিলম্ব
সরকার প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন জাতি গড়ে তুলতে চায় জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা কখনো পিছিয়ে থাকব না। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের চলতে হবে। এজন্য আমরা চাই এই ছোট্ট বয়স থেকে আমাদের ছেলে মেয়েরা কম্পিউটার শিখতে প্রযুক্তি শিখবে। সেজন্য আমাদের শিক্ষা কারিকুলামগুলো পরিবর্তন আনা দরকার।"
শিক্ষার্থীদের মন দিয়ে লেখাপড়ার আহ্বানও জানান শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “ধন সম্পদ অনেক কিছু থাকতে পারে কিন্তু শিক্ষা এমন একটা জিনিস যা কেউ কেড়ে নিতে পারে না। আগামী দিনে এই ছেলেমেয়েরাই তো একদিন আমার মত প্রধানমন্ত্রী হবে, মন্ত্রী হবে বা ভালো শিক্ষক হবে।"
শেখ হাসিনার ভাষ্য, “আমাদের ভবিষ্যৎ কাজ হল স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। এ জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন স্মার্ট দক্ষ জনগোষ্ঠী। আর এ কাজে বহুমুখী শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে ছেলেমেয়েদের।“
দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেতে শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে সরকার প্রধান বলেন, "আমরা বাংলাদেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে চাই। শিক্ষিত জাতি ছাড়া যা সম্ভব নয়।“
আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ডামাডোলের মধ্যেই নতুন বছরের প্রথম দিন উৎসব করে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়ার আনুষ্ঠানিকতা সারবে সরকার। ৭ জানুয়ারির ভোটের কারণে বই উৎসবের তারিখে কোনো পরিবর্তন আসবে না।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই উৎসবে এদিন উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনও বক্তব্য রাখেন ।
মন্ত্রণালয়গুলো এ বছর ৩ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার ৩২৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় ৩০ কোটি ৭০ লাখ ৮৩ হাজার ৫১৭ টি নতুন বই বিতরণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।
সরকার ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত সারাদেশে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে ৪৬৪ কোটি ৭৮ লাখ ২৯ হাজার ৮৮৩ টি বই বিনামূল্যে বিতরণ করেছে।
২০১৭ সাল থেকে সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর শিশুদের তাদের মাতৃভাষায় অধ্যায়নের জন্য চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো এবং সাদরি ভাষার বই বিতরণের পাশাপাশি দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের মধ্যেও বই বিতরণ করা হচ্ছে।