এর আগে দুই দফায় মোট পাঁচ দিন হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।
Published : 21 Sep 2024, 07:14 PM
সরকার পতনের পর নিজেদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে পুলিশ সদস্যদের সংগঠিত করে আলোচনায় আসা কনস্টেবল শোয়াইবুর রহমান জয় ও নায়েক সজিব সরকারকে তৃতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
শনিবার শুনানি নিয়ে ঢাকার মহানগর হাকিম আরাফাতুল রাকিব তাদের দুই দিন রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন।
এর আগে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে গত ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে দুই দিন এবং ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে তিন দিন রিমান্ডে নেওয়া হয়েছিল। তৃতীয় দফায় শনিবার তাদের পাঁচ দিন হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করেন ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের মতিঝিল জোনাল টিমের পরিদর্শক মো. আব্দুল্লাহেল বাকী।
রিমান্ড আবেদনে তিনি বলেন, “আসামিদের মোবাইল ফোনে থাকা অনেক তথ্য উদঘাটনসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সম্পৃক্ততার তথ্য রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তারা মোবাইল ফোনের সিকিউরিটি লক খোলার বিষয়ে তথ্য দিতে অনীহা প্রকাশ করছেন। এ অবস্থায় তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুনরায় পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।”
রিমান্ড আবেদনের কারণ হিসেবে অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার, সহযোগীদের শনাক্ত এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে তাদের উদ্দেশ্য অনুসন্ধানের কথাও বলেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখি রিমান্ড আবেদনের বিরোধিতা করে জামিন চেয়ে শুনানি করেন।
তিনি বলেন, “এ দুই পুলিশ সদস্য যে দাবি তুলেছেন, তারা যে ১১ দফা দাবিতে আন্দোলন করেছেন, সেগুলো ছিল সময় উপযোগী। প্রত্যেকটি দাবি যৌক্তিক ছিল।
“তখনকার মাননীয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেন এ দাবিগুলো মেনে নিয়েছিলেন। এমনকি সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহও ফেসবুকে ভিডিওতে এ বিষয়গুলোর পক্ষে ছিলেন। আজ কেন দফায় দফায় তাদেরকে রিমান্ডে নেওয়া হচ্ছে?”
কর্মবিরতি: সেই ২ পুলিশ সদস্য ফের রিমান্ড
পুলিশে কর্মবিরতি: আলোচনায় থাকা ২ পুলিশ সদস্য ৩ দিনের রিমান্ডে
শুনানিতে ফারজানা ইয়াসমিন রাখি আরও বলেন, “আমাদের কাছে যতটুকু তথ্য আছে, বাংলাদেশে ৪৫০টি থানা পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে, পুলিশের ৫৩৭টি গাড়ি ও ভ্যান পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে, থানা লুট হয়েছে, পুলিশের অস্ত্র লুট হয়েছে। এটার সংখ্যাই যাই হোক না কেন, এগুলো কোনো সাধারণ মানুষের কাজ হতে পারে না।
“আমরা দেখেছি কীভাবে পুলিশকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে, পুলিশকে পিটিয়ে মেরে মাথা উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। সেসময় ইউনিফর্ম পরে কোনো পুলিশ ডিউটি পালন করতে পারেনি। এই দুইজন শুধু পুলিশের সংস্কার চেয়েছে, পুলিশের নিরাপত্তা চেয়েছে। এর আগে তাদেরকে আরও দুই দফা রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তাদের কাছ থেকে কোনো তথ্য পুলিশ পায়নি। তাদেরকে আবারও রিমান্ডে নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। আমি রিমান্ড আবেদন বাতিল করে তাদের জামিনের আবেদন করছি।”
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর ৬ আগস্ট থেকে ১১ দফা দাবিতে পুলিশের কর্মবিরতি আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন কনস্টেবল শোয়াইবুর। আন্দোলনের সামনের সারিতে ছিলেন নায়েক সজিবও।
তাদের বিরুদ্ধে মামলায় ফেইসবুক আইডি ব্যবহার করে বিভিন্ন শ্রেণি ও সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা ছড়ানোর জন্য উস্কানিমূলক পোস্ট দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।