এমন এক সময়ে ইউনূস সেই স্মৃতি মোদীকে মনে করিয়ে দিলেন, যখন দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে নানা কারণে টানাপড়েন চলছে।
Published : 04 Apr 2025, 03:21 PM
অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে প্রথম বৈঠকে এক দশক আগের স্মৃতিময় এক ছবি তাকে উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
শুক্রবার দুপুরে ব্যাংককের সাংরিলা হোটেলে ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে দুই প্রতিবেশী দেশের সরকারপ্রধানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে ২০১৫ সালের ওই আলোকচিত্র মোদীকে উপহার দেন ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বাসসকে বলেন, ২০১৫ সালের ৩ জানুয়ারি মুম্বাইয়ে ১০২তম ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূসকে স্বর্ণপদক পরিয়ে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই ছবিই দশ বছর পর মোদীকে উপহার দিলেন বাংলাদেশের আজকের সরকারপ্রধান ইউনূস।
এমন এক সময়ে ইউনূস দশ বছর আগের সেই স্মৃতি মোদীকে মনে করিয়ে দিলেন, যখন দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে নানা কারণে টানাপড়েন চলছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট ক্ষমতাচ্যুত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদিনই তিনি ভারতে চলে যান। তিন দিন পর সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নেয় মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার।
‘গণহত্যা’, ‘গুম’সহ তিন মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় তাকে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে সরকার ভারতকে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠালেও দিল্লি তার উত্তর দেয়নি।
শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর থেকেই বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কে এক ধরনের অস্বস্তি চলছে। দিল্লিতে বসে তিনি বাংলাদেশে ‘অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা’ করছেন বলে অভিযোগ করে আসছে ইউনূস সরকার।
অপরদিকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে ভারত সরকার। পাশাপাশি ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা ও অপতথ্য’ এবং ‘অতিরঞ্জিত প্রচারণার’ অভিযোগ বাংলাদেশ সরকার করেছে।
বিভিন্ন বিষয়ে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি দেওয়ার পাশাপাশি সীমান্ত ইস্যু এবং শেখ হাসিনার বক্তব্য ঘিরে পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক তলবের ঘটনাও ঘটেছে।
ইউনূস দায়িত্ব নেওয়ার পর দুই দফা মোদীর সঙ্গে দেখা হওয়ার সুযোগ তৈরি হলেও তা হয়ে ওঠেনি। ফলে বিমসটেকের সম্মেলনে তাদের বৈঠক হবে কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছিল।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বাসসকে বলেন, দুই সরকার প্রধানের মধ্যে বৈঠকটি ‘অত্যন্ত গঠনমূলক ও ফলপ্রসূ’ হয়েছে। পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
“শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ এবং ভারতে বসে তিনি উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন, এসব বিষয় বৈঠকে তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া সীমান্তে হত্যা, তিস্তা নদীর পানি বণ্টনসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।”