কূটনীতিকদের নিরাপত্তায় অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ: শাহরিয়ার

কূটনীতিকদের বাড়তি নিরাপত্তা প্রত্যাহার নিয়ে আর কথা বলতে নারাজ প্রতিমন্ত্রী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2023, 04:38 PM
Updated : 18 May 2023, 04:38 PM

বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশ ‘ভালোভাবে ও দক্ষতার’ সঙ্গে কূটনীতিকদের নিরাপত্তা দিচ্ছে বলে দাবি করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারতসহ ছয়টি দেশের রাষ্ট্রদূতদের বাড়তি নিরাপত্তা প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনার মধ্যে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় কূটনীতিকদের এক ব্রিফিং শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই দাবি করেন তিনি।

আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থার (আইএমও) মহাসচিব পদে বাংলাদেশের প্রার্থিতার পক্ষে প্রচারের অংশ হিসেবে প্রতিমন্ত্রী ঢাকায় প্রায় দুই ডজন দেশের মিশন প্রধান ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেন।

বৈঠকে ‘বাড়তি নিরাপত্তা’ বাতিলের প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলিন, “না, এটি নিয়ে আলোচনার সুযোগও নেই। কারণ এটা ইস্যুভিত্তিক, আমরা শুধু নির্বাচন (আইএমও) নিয়ে আলোচনা করেছি।”

আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, “কূটনীতিকদের নিরাপত্তার দায়িত্ব বাংলাদেশ পৃথিবীর অনেক দেশের চেয়ে অনেক ভালোভাবে, দক্ষতার সঙ্গে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী, সরকার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অব্যাহতভাবে দিয়ে যাচ্ছে, দিয়ে যাবে।

“কিন্তু এ রিলেটেড ভুল তথ্যের ভিত্তিতে যে প্রশ্নের উদ্ভব হয়েছে, সে ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট ব্যাখ্যা দিয়েছি। আমার মনে এটা এখানে শেষ হওয়া উচিৎ। এ বিষয়ে আর কোনো কথা বলতে চাই না।”

Also Read: ছয় রাষ্ট্রদূতের চলাচলে ‘বাড়তি নিরাপত্তা’ আর দেবে না সরকার

Also Read: কূটনীতিকদের ‘বাড়তি নিরাপত্তা’ প্রত্যাহার সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে না: পররাষ্ট্র সচিব

সম্প্রতি সরকার যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, সৌদি আরবসহ ছয়টি দেশের কূটনীতিকদের নিরাপত্তায় কয়েক বছর আগের নেওয়া বাড়তি ব্যবস্থা (পুলিশ এসকর্ট) প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার প্রেক্ষিতে এই কূটনীতিকদের অতিরিক্ত ব্যবস্থা হিসেবে পুলিশ এসকর্ট দেওয়া হচ্ছিল। তবে এখন বাংলাদেশে নিরাপত্তা নিয়ে কোনো হুমকি নেই বলে তার প্রয়োজন ফুরিয়েছে।

তবে কোনো দূতাবাস চাইলে নিজ খরচে ‘ব্যাটালিয়ন আনসারের’ মাধ্যমে ওই সুবিধা নিতে পারবেন বলে জানান হয়েছে।

পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন দুদিন আগে জানিয়েছিলেন, বিকল্প এই সুবিধার বিষয়ে দূতাবাসগুলোকে চিঠি দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।

ওই চিঠি দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রগতির বিষয়ে এক প্রশ্নে বৃহস্পতিবার শাহরিয়ার আলম বলেন, “এটা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে। আমাদের হাতে প্রচুর কাজ আছে, আমাদের অনেক লক্ষ্য অর্জন করার আছে।

“আমরা এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন বা এনগেজমেন্টে যেতে চাচ্ছি না। বিকজ ইটস নট অ্যান ইস্যু। এটা আমাদের নিয়মিত কার্যপরিধির একটা অংশ এবং সবাইকে ব্যাখ্যা করে দেওয়া হয়েছে।”

কূটনীতিকদের পতাকা ব্যবহার বন্ধের বিষয়েও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনকে উদ্ধৃত করে সংবাদ মাধ্যমে খবর আসে।

বৃহস্পতিবারের ব্রিফিংয়ে আসা যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের গাড়িতে তার দেশের পতাকা না দেখার বিষয়টি তুলে প্রতিমন্ত্রীর কাছে এ বিষয়ে প্রশ্ন করেন এক সাংবাদিক।

জবাবে শাহরিয়ার বলেন, “ফ্ল্যাগ রিলেটেড কোনো নির্দেশনা আমাদের নেই।”

এদিকে বাংলাদেশের উপর যারা নিষেধাজ্ঞা দেবে, সেসব দেশের কাছ থেকে কেনাকাটা না করার জন্য সরকারি ক্রয় নীতিমালায় নতুন ধারা যুক্ত করার কথা সোমবার জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের দুদিন পর বুধবার রাষ্ট্রীয় বিপণন সংস্থা টিসিবির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়াভিত্তিক কোম্পানি অ্যাসেনচুয়েট টেকনোলজির কাছ থেকে ১২ হাজার ৫০০ টন পরিশোধিত চিনি কেনার একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয় সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সরকারি বাহিনী র‌্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে।

এই প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এটা এখনও প্রিম্যাচিওর। আমরা কূটনীতিতে আগাম কিছু বলাটা হবে অপরিপক্কতার উদাহরণ।

“যদি সরকার প্রধানের তরফ থেকে আমাদের কাছে নির্দেশনা আসে, আমরা সেটা বাস্তবায়ন করব। সুতরাং সামনের দিনে সময় বলে দিবে যে, কী হতে যাচ্ছে বা কী হবে। এটা নিয়ে বর্তমান ব্যবসা-বাণিজ্য বা ইমেডিয়েট ফিউচার ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এটার কোনো প্রভাব নেই।”

দুদেশের সম্পর্কের কথা তুলে ধরে শাহরিয়ার আলম বলেন, “আমরা শক্তিশালী বাণিজ্য অংশীদার, একে অপরের নীতির প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা আছে, আমাদের নিয়মিত আলাপ-আলোচনা আছে, এগুলো আমাদেরকে এগিয়ে নিয়ে যাবে সামনের দিনে। কিন্তু ভবিষ্যতে এটা পরিবর্তন হলে আপনাদেরকে সময়মত জানিয়ে দেওয়া হবে।”