ওই পরীক্ষকরা নিষিদ্ধ থাকাকালীন পাবলিক পরীক্ষার খাতা দেখতে পারবেন না।
Published : 13 Nov 2024, 05:19 PM
এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে কোনো পরীক্ষক, নিরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষকের বিরুদ্ধে ‘গাফিলতির’ বলে প্রমাণ গেলে তাদেরকে ‘কালো তালিকাভুক্ত’ বা পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হবে।
ওই পরীক্ষকরা নিষিদ্ধ থাকাকালীন পাবলিক পরীক্ষার খাতা দেখতে পারবেন না।
বুধবার দুপুরে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি তপন কুমার সরকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যেসব পরীক্ষক, প্রধান পরীক্ষক ও নিরীক্ষক চলতি বছর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নে গাফিলতি করেছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
“তাদের ব্ল্যাক লিস্টেড বা কালো তালিকাভুক্ত করা হবে। এছাড়া পাঁচ বছরের জন্য পরীক্ষক হিসাবে নিষিদ্ধ করার সময়ে এসময়ে পরীক্ষক, নিরীক্ষক বা প্রধান পরীক্ষকের দায়িত্ব পাবেন না। গতবছরও আমরা গাফিলতি করা পরীক্ষকদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছি।”
এবার এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলে 'অসন্তুষ্ট' হয়ে ১ লাখ ৯৮ হাজার ১১৬ জন পরীক্ষার্থী ৫ লাখ ৮ হাজার ১১৬টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণ বা রিভিউয়ের আবেদন করেছেন।
তপন কুমার সরকার বলেছেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার খাতা পুনর্নিরীক্ষণের ফল প্রকাশ করা হবে।
পুনর্নিরীক্ষণের ফল স্ব স্ব শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। আর শিক্ষার্থীরা যে মোবাইল ফোন নম্বর থেকে পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছেন সেই নম্বরে ফল পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
গত বছর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার খাতা পুনর্নিরীক্ষণে ফেল করা ১ হাজার ৩৯৮ জন পরীক্ষার্থী পাস করেছিলেন। যশোর শিক্ষা বোর্ডের এক পরীক্ষার্থী প্রথমে প্রকাশিত ফলে আইসিটি বিষয়ে ফেল করলেও পরে পাস করে পেয়েছিলেন জিপিএ-৫।
গতবার এইচএসসি ও সমমানের ফল পুনর্নিরীক্ষণ বা খাতা চ্যালেঞ্জ করে ৫৮৫ জন পরীক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন।
চলতি বছর ১ লাখ ৮৯ হাজার ৭৬৬ জন শিক্ষার্থী সাধারণ ধারার নয়টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষার ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৪৮০টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছেন।
আর মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত আলিম পরীক্ষার ৭ হাজার ৮১৪টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছেন ২ হাজার ৭১৪ জন। আর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ৫ হাজার ৯০৮ জন পরীক্ষার্থী এইচএসসি ভোকেশনাল, বিএম ও ডিপ্লোমা ইন কমার্স পরীক্ষার ৬ হাজার ৮২২টি খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেছেন।
প্রতি বছরই এসএসসি ও সমমান এবং এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর পরীক্ষার্থীরা তা পুনর্নিরীক্ষণের সুযোগ পান। ফল প্রকাশের পরের এক সপ্তাহ নির্ধারিত ফি দিয়ে পুনর্নিরীক্ষণের আবেদনের সুযোগ থাকে। মূল ফল প্রকাশের এক মাসের মধ্যে খাতা পুনর্নিরীক্ষণের ফল প্রকাশ করে শিক্ষা বোর্ডগুলো।
গত ১৫ অক্টোবর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এরপর দিন অর্থাৎ ১৬ থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতি পত্রের জন্য ১৫০ টাকা ফি দিয়ে ‘অসন্তুষ্ট’ শিক্ষার্থীরা খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে পেরেছিলেন।
বাংলা, ইংরেজির মত যে বিষয়গুলোতে দুইটি পত্র রয়েছে সেগুলোর ক্ষেত্রে দুই পত্রের খাতাই পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে হয়েছিল।
চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানে যে বিষয়গুলোর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে শুধু ওই বিষয়গুলোর ফল পুনর্নিরীক্ষণের সুযোগ ছিল। পরীক্ষা বাতিল হওয়ায় যে বিষয়গুলোতে সাবজেক্ট ম্যাপিং করে ফল প্রকাশ করা হয়েছিল সে বিষয়গুলোতে ফল পুনর্নিরীক্ষণ করতে পারেননি শিক্ষার্থীরা।
গণ অভ্যুত্থানে সরকার পতন ঘিরে ঘটনাপ্রবাহে মাঝপথে বন্ধ হয়ে যাওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় এবার পাস করেছে ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।