ভুয়া নথিপত্র দেখিয়ে ব্যাংকের সিএসআর তহবিলের ‘কোটি কোটি টাকা আত্মসাতে’ জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
Published : 12 Mar 2025, 08:51 PM
ইউনিয়ন ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের একটি অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ বি এম মোকাম্মেল হক চৌধুরীকে তলব করা হলেও তিনি হাজির হননি।
মোকাম্মেল হকসহ আট কর্মকর্তাকে মঙ্গলবার দুর্নীতি দমন কমিশনের সেগুনবাগিচা কার্যালয়ে হাজির হয়ে নিজেদের বক্তব্য জানাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু বিদেশে থাকার কথা বলে মোকাম্মেল এবং ব্যাংকের এফএডি শাখার প্রধান রুহুল আমিন দুদকে যাননি।
দুদকের উপসহকারী পরিচালক সাবিকুন নাহার তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে একটি চিঠি ইউনিয়ন ব্যাংকের এমডির কাছে পাঠান।
যাদের ডাকা হয়েছিল, তাদের মধ্যে ছিলেন সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ বি এম মোকাম্মেল হক চৌধুরী, হেড অব পিআরডি এ কে এম জহির উদ্দিন ইকবাল চৌধুরী, হেড অব এফএডি রুহুল আমিন, এফএডি কর্মকর্তা মাহফুজুল করিম, গুলশান শাখার কর্মকর্তা বোরহান উদ্দিন, গুলশান শাখার ক্যাশ ইনচার্জ আবদুল হালিম, অপারেশন ম্যানেজার রাশিদ শহীদ এবং নারায়ণগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক হাবিবুর রহমান খান।
মোকাম্মেল ও রুহুল আমিন যে জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হননি, সাবিকুন নাহার তা নিশ্চিত করলেও এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে রাজি হননি।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঠানো দুদকের চিঠিতে বলা হয়, ওই ব্যাংক কর্মকর্তারা ‘পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে ভুয়া বিল ভাউচার দেখিয়ে’ ব্যাংকের সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) তহবিলের কোটি কোটি টাকা ‘আত্মসাৎ’ করেছেন এবং ‘অপ্রয়োজনীয় ব্যয় দেখিয়ে আরও অর্থ লোপাট’ করেছেন।
এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে এ জে কনস্ট্রাকশনসের নামে একটি মুদারাবা টার্ম ডপোজিটের (এমটিডিআর) বিপরীতে ১৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা ‘আত্মসাতের’ অভিযোগ রয়েছে।
দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "ইউনিয়ন ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে কয়েকজন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছিল। তবে তাদের মধ্যে দুইজন বিদেশে থাকায় তারা জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হননি, এমনটি অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন।"
এই দুদক কর্মকর্তা বলেন, “হাজির হয়ে বক্তব্য দেওয়ার মাধ্যমে অভিযুক্তরা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পান। যদি কাউকে জিজ্ঞাসাবাদে ডাকা হয়, তবে তাকে আসতে বাধ্য করার বিষয়ে আইনে কোনো সুস্পষ্ট নির্দেশনা নেই। যদি কেউ উপস্থিত না হন, তবে ধরে নেওয়া হবে যে তার কোনো বক্তব্য নেই।
“তবে, অভিযুক্তদের সময় চাওয়ার অধিকার রয়েছে। যদি তারা সময় চান, কমিশন তাদের ১৫ দিন সময় দিতে পারে। সময় দেওয়ার পরও যদি তারা দুদকের কাছে উপস্থিত না হন, তাহলে ধরে নেওয়া হবে এই বিষয়ে তার কোনো বক্তব্য নেই। এরপর, যদি অভিযোগ নথিপত্রে প্রমাণিত হয়, তবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে। কমিশন আইনে এসব বিধান রয়েছে।''