বুধবার সকাল ৯টায় বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের ১১৬টি স্টেশনের মধ্যে ৯ পয়েন্টে পানি বাড়ার প্রবণতা দেখা গেলেও ১০১ পয়েন্টে কমছিল; আর অপরিবর্তিত ছিল ৬টি পয়েন্টে।
Published : 28 Aug 2024, 03:15 PM
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার দুর্যোগ কাটিয়ে নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে এসেছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
বুধবার সকাল ৯টায় বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের ১১৬টি স্টেশনের মধ্যে ৯ পয়েন্টে পানি বাড়ার প্রবণতা দেখা গেলেও ১০১ পয়েন্টে কমছিল; আর অপরিবর্তিত ছিল ৬টি পয়েন্টে।
ওই সময় দেশের কোনো নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছিল না।
বুধবার কেন্দ্রের নিয়মিত বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ফেনী জেলার সীমান্ত অঞ্চল এবং ভারতের ত্রিপুরায় উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত হয়নি। ওই অঞ্চল এবং উজানের নদীর পানি কমছে।
আবহাওয়া সংস্থাগুলোর বরাত দিয়ে সেখানে বলা হয়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় এ অঞ্চলে এবং তৎসংলগ্ন উজানে ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। ফলে এ সময় মনু- খোয়াই, ফেনী, মুহুরি, গোমতী, তিতাস নদীর পানি কমার প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।
এ সময়ে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানেও ভারি বৃষ্টির আভাস নেই। ফলে সাঙ্গু, মাতামুহুরি, কর্ণফুলি, হালদা ও অন্যান্য প্রধান নদীর পানি কমতে পারে।
উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের লঘুচাপটি দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাতের আভাস নেই। ফলে এসময় এ অঞ্চলের নদীর পানি স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজ করতে পারে।
বুলেটিনে বলা হয়েছে, দেশের প্রধান নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় গঙ্গা নদীর পানি উজানে ফারাক্কা পয়েন্টে অপরিবর্তিত আছে এবং দেশের অভ্যন্তরে সীমান্তবর্তী পাংখা পয়েন্টেও অপরিবর্তিত আছে। গঙ্গা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে, পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা এমনই থাকতে পারে।
ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, পদ্মা এবং দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি কমছে, উত্তরাঞ্চলের তিস্তা- ধরলা- দুধকুমার নদীতে স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজ করছে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত এ পরিস্থিতি থাকতে পারে বলে জানানো হয়েছে বুলেটিনে।
উজানের তীব্র ঢল এবং অতি ভারি বৃষ্টির কারণে গত ২০ অগাস্ট থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। অল্প সময়ের মধ্যে তা বিস্তৃত হয় ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজারে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, আকস্মিক এই বন্যায় মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত এসব জেলায় প্রায় ৫৬ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, মৃত্যু হয়েছে ৩১ জনের।
কোথাও কোথাও ভারি বৃষ্টির আভাস
এদিকে দেশেও কোথাও কোথাও ভারি বৃষ্টির আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়ার নিয়মিত বুরেটিনে বলা হয়েছে, বুধবার সকাল ৯টা থেকে বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও খুলনা বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি বৃষ্টি হতে পারে।
শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ ৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টি ঝরেছে নোয়াখালীর মাইজদীকোর্টে। এছাড়া কক্সবাজারের টেকনাফে ২১, ফেনীতে ২০ মিলিমিটারসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় কমবেশি বৃষ্টি হয়েছে।
সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ১ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে হালকা, ১১ থেকে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি, ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে মাঝারি ধরনের ভারি, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তাকে ভারি এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে তাকে বলা হয়ে থাকে অতি ভারি বৃষ্টিপাত বলা হয়।