“উভয় দেশ মনে করে, ৫০ বছরের কূটনৈতিক পথচলায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সবসময় শক্তিশালী ও স্থিতিশীলভাবে এগিয়েছে।”
Published : 28 Mar 2025, 05:56 PM
জলবিদ্যুৎ, বন্যা মোকাবিলা ও দুর্যোগ হ্রাস, নদী খনন এবং পানিসম্পদ উন্নয়নের মত বিষয়ে পারষ্পরিক সহযোগিতা জোরদারে ‘একমত হয়েছে' বাংলাদেশ ও চীন।
শুক্রবার উভয় পক্ষ ইয়ারলুং জাংবো-যমুনা নদীর জলবিদ্যুৎ তথ্য বিনিময়সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক (এমনওইউ) বাস্তবায়নের ব্যাপারেও ইতিবাচক আলোচনা করেন বলে এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়।
বিবৃতির বরাতে বাসসের খবরে বলা হয়, তিস্তা নদীর সমন্বিত ব্যবস্থাপনা ও পুনঃসংস্কার প্রকল্পে চীনা কোম্পানিগুলোর অংশগ্রহণকে ঢাকা স্বাগত জানিয়েছে।
উভয় পক্ষ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং নীল অর্থনীতিতে সহযোগিতার সম্ভাবনা কাজে লাগাতেও একমত।
বিবৃতিতে বলা হয়, তারা সমুদ্রসংক্রান্ত বিষয়ে বিনিময় জোরদারে এবং পরে ‘উপযুক্ত’ সময়ে সামুদ্রিক সহযোগিতাসংক্রান্ত নতুন সংলাপ আয়োজনের বিষয়েও একমত হয়েছে।
চার দিনের চীন সফরে থাকা অধ্যাপক ইউনূস গত ২৬ ও ২৭ মার্চ হাইনান প্রদেশে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া বার্ষিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।
শুক্রবার বেইজিংয়ে তিনি বৈঠক করেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে।
আগের দিন বোয়াও ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করেন দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হান ঝেংও অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
উভয় পক্ষ সব কৌশলগত অংশীদারত্ব আরও সুসংহত ও গভীর করার জন্য প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে বলে বিবৃতিতে বলা হয়।
“উভয় দেশ মনে করে, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটে পরিবর্তন ঘটলেও ৫০ বছরের কূটনৈতিক পথচলায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সবসময় শক্তিশালী ও স্থিতিশীলভাবে এগিয়েছে।”
উভয় পক্ষ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পাঁচ নীতির প্রতি অটল থাকার, ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্ব এগিয়ে নেওয়ার, রাজনৈতিক পারস্পরিক বিশ্বাস দৃঢ় করার, উন্নয়ন কৌশলের সমন্বয় গভীর করার এবং বাংলাদেশ-চীন কৌশলগত অংশীদারত্বকে আরও সমৃদ্ধ করার বিষয়ে একমত হয়েছে।
চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি মেনে চলে। তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে শ্রদ্ধা জানায় এবং বাংলাদেশের জাতীয় স্বাধীনতা রক্ষায় সমর্থন দেয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, চীন সবসময়ই বাংলাদেশের জনগণের প্রতি সুপ্রতিবেশীসুলভ নীতির অনুসারী এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে কার্যকর শাসন পরিচালনা, জাতীয় ঐক্য ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা এবং দেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে সমর্থন দিয়ে আসছে।
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় চীন তাদের সামর্থ্যের সর্বোচ্চ সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে বলে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং চীনের জনগণকে তার ও বাংলাদেশি প্রতিনিধি দলের প্রতি উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি উভয় পক্ষের সুবিধাজনক সময়ে চীনা নেতৃত্বকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।