পালিয়ে আসা মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের ‘দ্রুততম সময়ে’ ফেরানোর কথা বললেও দিনক্ষণ বলতে রাজি নন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
Published : 12 Feb 2024, 06:08 PM
মিয়ানমারে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের যুদ্ধের মধ্যে রাখাইনের সিত্তে শহরে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কর্মীদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, “সিত্তে, যেটি আকিয়াব ছিল আর কি, সেটা থেকে আমাদের যারা নাগরিক ছিল, তাদেরকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলছে। আমাদের মিশনে কর্মরত যারা, তাদেরকেও ফিরিয়ে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলছে।”
মিয়ানমারের সীমান্তের ওপারে দেশটির সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের লড়াই চলছে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে। এই যুদ্ধের মধ্যে গুলি ও মর্টার শেল এসে পড়ছে এপার । এরকম ঘটনায় অন্তত দুজনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন কয়েকজন।
এসব ঘটনায় সীমান্তবর্তী অঞ্চলে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক। অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন নিরাপদ এলাকায় আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় স্কুলগুলোতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে, বিঘ্নিত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
বিদ্রোহীরা সীমান্ত চৌকি দখল করে নেওয়ায় মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের সোয়া তিনশ সদস্য গত সপ্তাহে পালিয়ে বাংলাদেশে এসে ঢুকেছে। তাদের নিরস্ত্র করে বিজিবি হেফাজতে রাখা হয়েছে ফেরত পাঠানোর জন্য।
পালিয়ে আসা এই সীমান্তরক্ষী ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের ‘দ্রুততম সময়ে’ ফেরানোর কথা বললেও দিনক্ষণ বলতে রাজি নন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “প্রথমত মিয়ানমার থেকে যে সমস্ত বর্ডার সিকিউরিটি গার্ড এবং সেনাবাহিনীর সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্য যারা এসেছেন, তাদেরকে খুব সহসাই আমরা ফেরত পাঠাব বলে আমরা ঐকমত্যে পৌঁছেছি। এবং মিয়ানমার তাদেরকে ফেরত নিয়ে যাবে।
“আমি দিনক্ষণ বলতে চাই না। কারণ, এটা গোপনীয়। সেখানে নিরাপত্তার বিষয় যুক্ত রয়েছে। তবে সহসা তাদেরকে ফেরত নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে মিয়ানমার সম্মত হয়েছে। আমরা আশা করছি, খুব সহসা তাদেরকে ফেরত পাঠাতে পারব।”
যুদ্ধের মধ্যে মিয়ানমার থেকে একদল রোহিঙ্গার বাংলাদেশে ঢোকার অপেক্ষায় থাকার খবরের কথা তুলে ধরে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে হাছান মাহমুদ বলেন, “রোহিঙ্গা আমাদের দেশে ইতোমধ্যে ১২ লাখ। এবং এই রোহিঙ্গাদের কারণে আমাদের দেশে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছে। যেমন-পরিবেশগত সমস্যা, নিরাপত্তাগত সমস্যা, ড্রাগজনিত সমস্যা, আরও অন্যান্য নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছে।
“তো, আমাদের পক্ষে কি আরও রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব?”
তিনি বলেন, “মিয়ানমারে এই রকম তাদের মধ্যে সংঘাত চলবে, তাদের মধ্যে শুধু রোহিঙ্গা নিয়ে সংঘাত চলছে, তাতো নয়। তাদের মধ্যে নানা জাতিগোষ্ঠী আছে, তাদের মধ্যকার সংঘাত চলছে।
“আর সেই সংঘাতে উত্তাপের কারণে আমাদের দেশে আমরা নানা ধরনের সমস্যাই পড়ব। সেটি কি সঙ্গত? এটি আমার বক্তব্য।”