এসব পাস ডিজিটাল করতে ‘এভসেক আইডি সিস্টেম’ অ্যাপ চালু করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।
Published : 10 May 2023, 09:37 PM
ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে কর্মরতদের চলাচল নিয়ন্ত্রণে ১৭ হাজার নিরাপত্তা পাস ডিজিটাল করার উদ্যোগ নিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ-বেবিচক।
‘এভসেক আইডি সিস্টেম’নামের একটি অ্যাপের মাধ্যমে এই কাজটি করা হবে। ওই পাসের মাধ্যমে বিমানবন্দরের ভেতরে দায়িত্বরতদের গতিবিধিও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। যার ফলে পাসধারীরা চাইলেও নিজের দায়িত্বপূর্ণ এলাকার বাইরে যেতে পারবেন না।
এছাড়া বিমানবন্দরের যাত্রীদের জন্য একটি অ্যাপ এনেছে বেবিচক। ওই অ্যাপে‘অগমেন্টেড রিয়েলিটি’ব্যবহার করা হয়েছে। এই অ্যাপ ব্যবহার করে বিভিন্ন সেবা সম্পর্কে জানতে পারবে যাত্রীসহ বিমাবন্দর ব্যবহারকারীরা।
বেবিচক একই সঙ্গে‘হাইট ক্লিয়ারেন্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’নামে আরেকটি অ্যাপ চালু করেছে। ওই অ্যাপের মাধ্যমে বিমানবন্দরের কাছে বহুতল ভবন নির্মাণের আগে বেবিচকের অনুমোদন নেওয়া যাবে।
বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বুধবার বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকভাবে বেবিচকের তিনটি অ্যাপ উদ্বোধন করেন।
এভিয়েশন খাতে নারীদের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করতে ছয় শিক্ষানবিশ নারী পাইলটের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এনজিএপি শিক্ষাবৃত্তিও বিতরণ করেন প্রতিমন্ত্রী।
আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইকাও) প্রবর্তিত নেক্সট জেনারেশন এভিয়েশন প্রফেশনালস (এনজিএপি) ইনিশিয়েটিভের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই বৃত্তি চালু করা হয়েছে।
এভসেক আইডি সিস্টেমে কী হবে
বেবিচকের সদস্য (নিরাপত্তা) আবু সালেহ মাহমুদ মান্নাফী জানান, গত ৫০ বছরে বিমানবন্দরে ২০ হাজার ৬৪০টি নিরাপত্তা পাস ইস্যু করা হয়েছে। এর মধ্যে নানা কারণে ৩ হাজার ৩০৭টি পাস বাতিল করা হয়েছে।
বাকি ১৭ হাজার ৩৩৩টি নিরাপত্তা পাস ডিজিটালাইজেশনের আওতায় আনতে নতুন এই অ্যাপের প্রবর্তন করা হয়েছে। এই পাসগুলো বিমানবন্দরে কর্মরত ৪২৯টি সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার কর্মীরা ব্যবহার করছেন। গত আট মাসে ৭১টি সংস্থাকে তালিকাভূক্ত করতে পেরেছেন তারা।
এই কর্মকর্তা বলেন, আগামীতে এই পাস ছাড়া বিমান বন্দরে কেউ ঢুকতে পারবেন না। কে কোন ফটক দিয়ে ঢুকবেন সেটাও নির্ধারণ করা থাকবে। কেউ বিমানবন্দরের ভেতরে তার দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকার বাইরে যেতে চাইলে সেটাও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
বেবিচকের কর্মকর্তারা জানান, বিমানবন্দরে ক্লিনার, শ্রমিকসহ অনেক রকম জনবলের প্রয়োজন হয়। নিরাপত্তা পাস নিয়ে বিমানবন্দরে ঢুকে অপরাধ ঘটানোরও নজির রয়েছে। অ্যাভসেক আইডি সিস্টেমে পাসের অপব্যবহার রোধ করা যাবে বলে তারা মনে করছেন।
বেবিচক চেয়ারম্যান মফিদুর রহমান বলেন, বিমানবন্দরের কয়েকটি ফটকে অ্যাভসেক আইডি সিস্টেমের যন্ত্রগুলো বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। বুধবার থেকেই এ ব্যবস্থা চালু হয়েছে।
তবে পাসধারীদের অ্যাপের আওতায় আনতে এখনও অনেক কাজ বাকি বলে জানিয়েছেন আবু সালেহ।
তিনি বলেন, ডিজিটাইজেশনের আওতায় আসতে পাসধারীদের নিজেদেরই অনলাইনে আবেদন করতে হবে। আবেদন না করলে কোনো পাস ডিজিটাইজেশনের আওতায় আসবে না। পাস ডিজিটাইজেশনের জন্য তারা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কর্মীদের অনলাইনে আবেদন করতে অনুরোধ জানিয়েছেন।
দুই অ্যাপ
বিমানবন্দর ব্যবহারকারী যাত্রীদের জন্যবেবিচকের চালু করা অ্যাপটির নাম ‘ডিজিটাল এয়ারপোর্ট সার্ভিস’। অ্যাপটি অ্যান্ড্রয়েড প্লেস্টোর পাওয়া যাচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যে তা আইওএস প্ল্যাটফর্মেও আসবে।
অ্যাপটি ব্যবহার করে যাত্রীরা বিমানবন্দরের ভেতরের সেবাগুলো সম্পর্কে তথ্য পাবেন। পাশাপাশি ফ্লাইটের শিডিউল, কোন ফ্লাইটের জন্য যাত্রীদের কোন ফটক দিয়ে ঢুকতে হবে এসব তথ্যও পাওয়া যাবে অ্যাপে।
দেশের সকল বিমানবন্দর সংলগ্ন অঞ্চলে ভবন নির্মাণে উচ্চতার ছাড়পত্র দেওয়ার জন্য বেবিচকের‘হাইট ক্লিয়ারেন্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’অ্যাপটিও অ্যান্ড্রয়েড প্লেস্টোরে পাওয়া যাচ্ছে।
এই অ্যাপের মাধ্যমে ভূমির মালিকেরা সর্বোচ্চ কতো উচ্চতার ভবন নির্মাণ করতে পারবেন সেই পরিমাপ জানতে পারবেন। পাশপাশি এই অ্যাপে আবেদন করেই পাওয়া যাবে অবকাঠামো নির্মাণের জন্য‘উচ্চতার ছাড়পত্র’।
অ্যাপ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন ও বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।