সরকার বিষয়টিকে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে তা বোঝাতে গাড়ি রেখে ফাইল নিয়ে মোটর সাইকেলে করে রওয়া হওয়ার কথা সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন জনপ্রশাসন সচিব।
Published : 30 Sep 2024, 05:29 PM
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে নানা কর্মসূচির মধ্যে বিষয়টি নিয়ে পরামর্শ নিতে একটি ‘উচ্চ ক্ষমতার’ কমিটি গঠন করেছে সরকার; জনপ্রশাসন সচিব বলেছেন, এই কমিটির অর্থ কোনো আশ্বাস না, ব্যবস্থা নেওয়ার পদক্ষেপ।
কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরীকে, যিনি সচিব ছিলেন অবসরে গেছেন, ২০০১ সালে বিচারপতি লতিফুর রহমানের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাও ছিলেন। গত ২১ অগাস্ট তাকে বাংলাদেশ বিমানের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান করে অন্তর্বর্তী সরকার।
চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর দাবিতে সোমবার প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ ও পুলিশের কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ার মধ্যে এই সিদ্ধান্ত এল।
সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান বলেন, “বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।”
কতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, সেটা বোঝাতে ফাইল নিয়ে গাড়ি বাদ দিয়ে মোটর সাইকেলে করে রওনা হওয়ার কথাও সাংবাদিকদের জানান তিনি।
সচিব বলেন, “সরকার চাকরিতে বয়স বৃদ্ধির বিষয়ে যে নানাভাবে আন্দোলন, এই আন্দোলনের দাবির প্রেক্ষিতে একটা কমিটি করা হয়েছে। এই কমিটির মেম্বার সেক্রেটারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব। কমিটির আহ্বায়ককে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে যে কয়েকজন সদস্য দরকার, উনি নেবেন। সাত দিনের মধ্যে এই কমিটি সরকারকে পরামর্শ দেবে বয়স বৃদ্ধির বিষয়ে।”
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা এখন ৩০ বছর। এটি ৩৫ করার দাবিতে কয়েক বছর ধরেই নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে একদল মানুষ।
‘চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ’এর ব্যানারে নিয়মিত কর্মসূচি পালন করে আসছে। আওয়ামী লীগ সরকার তাদের দাবির বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া নেয়নি, বরং না একাধিকবার নাকচ করে দেওয়া হয়েছে।
প্রবল গণ আন্দোলনে গত ৫ অগাস্ট সরকার পতনের তিনদিন পর মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হলে নানা দাবিতে বিভিন্ন সংগঠনের কর্মসূচির মধ্যে মাঠে নামে বয়সসীমা নিয়ে আন্দোলনকারীরাও।
সোমবার প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে জমায়েত হলে পুলিশ তাদেরকে বাধা দেয়। তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে সেখান থেকে ১৩ জনকে পুলিশ আটক করেছে বলে দাবি এ আন্দোলনের সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা শরিফুল ইসলাম শুভ। আহত কয়েকজনকে হাসপাতালে যেতে হয়েছে বলেও দাবি তার।
সেখান থেকে ছত্রভঙ্গ হয়ে যাওয়ার পর আন্দোলনকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য পাদদেশে অবস্থান নেয়।
আন্দোলনকারীদের উপর আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর বল প্রয়োগ এবং তাদের দাবিকে কীভাবে দেখছেন- এই প্রশ্নে জনপ্রশাসন সচিব বলেন, “সরকার তো কমিটির অংশ। এটি উচ্চ ক্ষমতার কমিটি। এর মানে হচ্ছে ‘তোমাদের কোনো আশ্বাস না, ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে’।”
কমিটির কাজ দ্রুত বাস্তবায়নে গাড়ি বাদ দিয়ে বাইকে করে উপদেষ্টার কাছে পৌঁছাতে রওনা হচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনারা যেহেতু এই ক্রাইসিসে আমাদের সাথে কাজ করছেন তাই শেয়ার করলাম। হাউ গভর্নমেন্ট ইজ ফাংশনিং, গিভিং টপ প্রায়োরটি।”
আরও পড়ুন
চাকরিতে ঢোকার বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশীরা যমুনার সামনে, পুলিশের টিয়ারশেল