“শহীদ আবু সাঈদ জাতির জন্য যা করেছেন তা বাংলাদেশ কখনো ভুলবে না,” বলেন অধ্যাপক ইউনূস।
Published : 06 Nov 2024, 04:40 PM
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত শিক্ষার্থী আবু সাঈদের দুই ভাই প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সরকারপ্রধানের সঙ্গে সাঈদের ভাই রমজান আলী ও আবু হোসেনের সাক্ষাৎ হয় বলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় জানিয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অধ্যাপক ইউনূস তার ভাষণে আবু সাঈদ ও অন্যান্য শহীদদের আত্মত্যাগের কথা যখন বলছিলেন, তখন আবু সাঈদের পরিবার কান্নায় ভেঙে পড়েন বলে বৈঠকে জানানো হয়।
সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী অধ্যাপক ইউনূসকে বলেন, “বিপ্লবে তার (সাঈদ) বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা আপনি তুলে ধরেছেন এবং প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার একদিন পরই রংপুরে আমাদের গ্রামে আমাদের সঙ্গে দেখা করেছেন এতে আমরা সম্মানিত বোধ করেছি।”
মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টাকে যখন পিজিআর সদস্যরা গার্ড স্যালুট দিচ্ছিলেন, তখন তার পাশে সাঈদের দুই ভাইও উপস্থিত ছিলেন।
রমজান আলী বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমরা মঞ্চে দাঁড়িয়েছিলাম এবং সৈন্যরা আমাদেরকে গার্ড স্যালুট দিয়ে সম্মান জানিয়েছে; তখন আমাদের কেমন লেগেছে তা আমি বলতে পারব না।”
বৈঠকে সাঈদ হত্যা মামলার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে জানানোর পাশাপাশি হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান নিহতের দুই ভাই।
তারা সাঈদের নামে একটি ফাউন্ডেশন এবং গ্রামে একটি ‘মডেল মসজিদ’ ও একটি মেডিকেল কলেজ তৈরির উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান। এ বিষয়ে সহায়তার জন্য দুটি মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করা হয়েছে জানিয়েছেন রমজান ও হোসেন।
সাঈদের ছোট ভাই হোসেন বলেন, “ফাউন্ডেশনটি দরিদ্র এবং জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের জন্য কাজ করবে।”
আবু সাঈদের পরিবারকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পুলিশকে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত দ্রুত শেষ করতে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে।
“শহীদ আবু সাঈদ জাতির জন্য যা করেছেন তা বাংলাদেশ কখনো ভুলবে না। তার আত্মত্যাগ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানে বিরাট ভূমিকা রেখেছিল।”
সাঈদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তাদের জন্য তার দরজা সবসময় খোলা থাকবে।
“আমি সবসময় তোমাদের সাথে থাকব। তোমাদের বাবা-মাকে আমার সালাম জানাবে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বাদশ ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ গুলিতে নিহত হন। এ ঘটনায় তার বড় ভাই রমজান আলী বাদী হয়ে মহানগরের তাজহাট থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করছে পিবিআই।