বর্ষবরণে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ঘরোয়া এ আয়োজন রঙিন হয়ে উঠেছিল বিভিন্ন অঙ্গনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে।
Published : 14 Apr 2025, 10:41 PM
ঘরোয়া আনন্দ-আড্ডায়, ভাব ও ভাবনার প্রাণখোলা বিনিময়ের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন অঙ্গনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের নিয়ে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করেছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
বেলা গড়িয়ে দুপুর হতে না হতেই একে একে এসেছেন অতিথিরা; দিনের পরের অংশে সবাই ছিলেন গল্পে মশগুল। ফাঁকে ফাঁকে বৈশাখের ঐতিহ্যবাহী ও মুখরোচক খাবারে রসনা বিলাসে পূর্ণতা পায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের বৈশাখী এ আয়োজন।
প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী অতিথিদের স্বাগত জানান; আপ্যায়ন করান ঘরে তৈরি খাবারে। সঙ্গে ছিল বৈশাখের অনুষজ্ঞ খই, বাতাসা, নাড়ু ও পান্তা ইলিশ।
রাজনীতিবিদ, শিল্পী, সাহিত্যিক, অভিনেতা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রশাসনের সাবেক কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও কূটনীতিকসহ নানান পেশার অতিথিরা পড়ন্ত বিকালেও মুখরিত করে রাখেন অনুষ্ঠানস্থল।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের এসেছিলেন এ আয়োজনে।
বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেনও যোগ দেন এ আয়োজনে।
সহধর্মিনী মানু ভার্মাকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন ঢাকায় ভারতীয় হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মা; নববর্ষের পোশাক জড়িয়ে ছিলেন তারা।
বর্ণিল বৈশাখী পোশাকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের আনন্দ-আয়োজনে যোগ দেন ঢাকায় জার্মানির রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টার ও তার সহধর্মিণী বেটিনা ট্র্যোস্টার।
বাঙালিয়ানার আয়োজনে এসেছিলেন ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মেরি মাসদুপুই, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত রামিস সেন, আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত মার্সেলো সেসা এবং দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিকসহ কূটনীতিকরা। ছিলেন ঢাকায় রুশ কালচারাল সেন্টারের পরিচালক পাভেল দভইচেনকভ।
বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি ও বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ, বিল্ডিং টেকনোলজি অ্যান্ড আইডিয়াস (বিটিআই) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফয়জুর রহমান খান, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মিনহাজ মান্নান এবং পর্যটন ও কৃষি উদ্যোক্তা মোস্তফা শিবলীও যোগ দেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের আনন্দ আয়োজনে।
স্ত্রী শিরিন সুলতানাকে সঙ্গে নিয়ে বৈশাখী পরবে আসেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক, বীর মুক্তিযোদ্ধা এএসএম রকিবুল হাসান। এসেছিলেন মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়া মুক্তিযুদ্ধ বন্ধু জুলিয়ান ফ্রান্সিস, সাবেক সচিব ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুজ্জামান চৌধুরী (মঞ্জু) এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুল আলম বীরপ্রতীক।
আয়োজনে অংশ নেন স্পেন, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ায় বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত শাহেদ আখতার, বিনিয়োগ উন্নয়ন বোর্ডের (বিডা) সাবেক নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম।
আয়োজনে এসেছিলেন ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়দুল্লাহ মাসুদ ও স্থপতি ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট আবু সাঈদ এম. আহমেদও।
বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. এম এ আলী এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেনও এসেছিলেন বৈশাখী আনন্দ আয়োজনে।
বৈশাখী ঘরোয়া আড্ডায় যোগ দেন স্পেন প্রবাসী আন্তর্জাতিক খ্যাতনামা চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলাম ও চিত্রশিল্পী রশীদ আমিনও।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের আয়োজনে এসেছিলেন অভিনয়শিল্পী তৌকীর আহমেদ, আহসান হাবিব নাসিম, নাট্যনির্দেশক ও অভিনেতা মোহাম্মদ বারী, নাট্যকার মাসুম রেজা ও সেলিনা শেলী।
অভিনয়শিল্পী স্ত্রী দম্পতি ম. হামিদ ও ফাল্গুনী হামিদ, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় ও জয়শ্রী কর জয়া এবং শহীদুজ্জামান সেলিম ও রোজী সিদ্দিকী এসে আড্ডাকে জমিয়ে তোলেন। শেষবেলায় নাট্যকার স্ত্রী জিনাত হাকিমকে সঙ্গে নিয়ে আসেন অভিনয়শিল্পী আজিজুল হাকিমও।
আবৃত্তিশিল্পী ভাস্বর বন্দ্যেপাধ্যায় আর ব্যান্ডশিল্পী নকীব খান ও নাসিম আলী খান যোগ দেন ঘরোয়া আড্ডার এ আয়োজনে।
অভিনয়শিল্পী দুই ছেলে দিব্য ও সৌম্যকে নিয়ে এসেছিলেন অভিনয়শিল্পী শাহনাজ খুশি ও নাট্যকার বৃন্দাবন দাশ দম্পতি।
আলোকচিত্রী নাসির আলী মামুন ও যুগান্তরের উপসম্পাদক এহসানুল হক বাবু এসেছিলেন নিয়মিত এ আয়োজনে। স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন সাংবাদিক মাসুদ কামাল।
বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশেনের প্রতিষ্ঠাতা মশহুরুল আমিন ও সংগঠক জিকরুল আহসানও অংশ নিয়েছিলেন বৈশাখী অনুষ্ঠানে।
তাপদাহের এ সময়ে কাঁচা আম ও লেবুর শরবৎ, তেঁতুলের শরবত আর ডাবের পানি দিয়ে শুরু হয় অতিথিদের আপ্যায়ন পর্ব। খই, বাতাসা, নাড়ুর মত বৈশাখী অনুষঙ্গও স্থান পায় আপ্যায়নে। সিঙ্গারা, ডালপুরি আর চটপটির মত মুখরোচক খাবার তো ছিলই।
পান্তা ভাত, সরষে ইলিশ, ইলিশ ভাজা, লাল চালের ভাত, সালাদ, ইলিশের ডিম, ছুরি শুঁটকি, লইট্যা শুঁটকি ভুনা, লাল আলু ভর্তা, টাকি ভর্তা, চিংড়ি ভর্তা, বেগুন ভর্তা, কালজিরা ভর্তা, মাছের চচ্চড়ি, করল্লা চিংড়ি, খাসির রেজালা, আচার গরুর গোস্ত, রুই ভুনা, মুরগি ভুনা, ইলিশ মাছের মাথার সঙ্গে কচুর লতি ছিল রসনা বিলাসে।
সিরাজগঞ্জের ছানার জিলাপি, বরিশালের রসগোল্লা, টাঙ্গাইলের চমচম, পায়েস, বরিশালের রসমালাই, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী আর যশোরের সাদেক গোল্লা ছিল শেষ পদ হিসেবে।