দেড়বছর আগে একবার দখলকারীদের তালিকা চেয়েছিল আদালত, তা এখনও জমা পড়েনি।
Published : 29 Apr 2024, 03:30 PM
রাজধানীর ফুটপাত অবৈধভাবে দখল ও ভাড়া দেওয়ার সঙ্গে কারা জড়িত, তাদের তালিকা দাখিল করতে ফের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।
এ ছাড়া দখলকারীদের বিরুদ্ধে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তাও জানতে চেয়েছে আদালত।
জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ– এইচআরপিবির করা একটি রিট মামলার শুনানিতে সোমবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চে এ আদেশ দেয়।
এইচআরপিবির পক্ষে রিট আবেদনটি করেছিল অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ঢাকার বিভিন্ন স্থানের ফুটপাত ‘বিক্রি ও ভাড়া দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা চাঁদাবাজি করে’ কিছু ব্যক্তি অসৎ উপায় অর্থ উপার্জন করছেন এবং জনগণের স্বাভাবিক চলাচল বিঘ্নিত করছেন। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হলে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ জনস্বার্থে একটি রিট আবেদন করে।
“ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্ট ডিভিশন ২০২২ সালের ২১ নভেম্বর রুল জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করার নির্দেশনা দেয় এবং দখলকারীদের তালিকা ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দেয়।”
ওই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার স্বরাষ্ট্র সচিবের পক্ষে এভিডেভিট দাখিল করে ২০২৩ সালের ২১ মে সাত সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠনের কথা জানানো হয়।
ওই কমিটির সদস্যরা হলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব, সিআইডির ডিআইজি পদমর্যাদা সম্পন্ন একজন অফিসার, রাজউকের একজন সদস্য এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের একজন উপসচিব।
মনজিল মোরসেদ প্রতিবেদনের বরাতে বলেন, ওই কমিটির সভাপতি ড. মলয় চৌধুরীর সভাপতিত্বে ২০২৩ সালের ২৪ অগাস্ট তারিখে এক সভা হয়। সভার আলোচ্যসূচিতে ফুটপাতে দোকান বসানো ও দখলের সঙ্গে ‘রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ততার’ কথা বলা হয়।
ওই সভায় ১৫ দিনের মধ্যে রাজউক ও ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনকে নিজ নিজ অধিক্ষেত্রে বিদ্যমান ওয়াকওয়ে ও ফুটপাতের তালিকা এবং অবৈধভাবে তা দখলের তালিকা দাখিলের সিদ্ধান্ত হয়। অপর এক সিদ্ধান্তে ফুটপাত ভাড়া ও বিক্রি অবৈধ অর্থ আদায়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের তালিকা ১৫ দিনের মধ্যে দাখিলের জন্য জননিরাপত্তা বিভাগ, ঢাকার শুধু দুই সিটি কর্পোরেশন ও রাজউককে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সোমবার এইচআরপিবির পক্ষে শুনানিকালে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, ১৫ দিনের মধ্যে তালিকা ও দখলকারীদের নাম দেওয়ার নির্দেশনা থাকলেও ৮ মাস অতিক্রান্ত হওয়ার পরও কোনো তালিকা দাখিল করা হয়নি। ফুটপাত দখল করে অবৈধ ব্যবসা ও চাঁদাবাজি অব্যাহত রয়েছে এবং কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে। এ কারণে জনগণের ফুটপাত দিয়ে চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
মনজিল মোরসেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শুনানি শেষে আদালত আগামী ১৩ মে স্বরাষ্ট্র সচিব বা স্থানীয় সরকারের সচিবকে যারা ফুটপাত দখল করেছে বা বিক্রি করেছে তাদের নামের তালিকা এফিডেভিট আকারে দাখিল করতে বলেছে। এ ছাড়া দখলকারীদের বিরুদ্ধে কি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তাও জানাতে বলেছে।”
শুনানিতে মনজিল মোরসেদের সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট সঞ্জয় মন্ডল, অ্যাডভোকেট জাহিদ তালুকদার ও অ্যাডভোকেট সেলিম রেজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিত তালুকদার।
পুরনো খবর
‘ফুটপাত বিক্রিকারীদের’ তালিকা দাখিলে নির্দেশনা: অগ্রগতি জানতে চায় হাই কোর্ট