সাম্প্রতিক দিনগুলোতে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়েছে কি-না, সেটাও ইইউ মিশন জানতে চেয়েছে।
Published : 10 Jul 2023, 07:30 PM
বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচনে সহিংসতা হওয়ার মত কোনো পরিস্থিতি বিরাজ করছে কি-না, তা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে জানতে চেয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রাক-নির্বাচনী অনুসন্ধানী দল।
সোমবার ছয় সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা জানিয়েছেন কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ।
বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “মানবাধিকার ইস্যুতে আমাদের সঙ্গে কিছু কথা বলেছেন। মানবাধিকার পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে এখানে, ইলেকশনে কোনো ভায়োলেন্স বা ইত্যাদি হওয়ার মত কোনো পরিস্থিতি বিরাজ করছে কি-না।”
এ বছরের শেষে বা পরবর্তী বছরের শুরুতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ সফর করছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের ছয় সদস্যের ইলেকশন এক্সপ্লোরেটরি মিশন বা অনুসন্ধানী অগ্রগামী দল।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঢাকার ইইউ মিশন জানিয়েছে, ৮ থেকে ২৩ জুলাই এ সফরে মূল নিবার্চন পর্যবেক্ষণ মিশনের কর্মপরিধি, পরিকল্পনা, বাজেট, লজিস্টিক্স ও নিরাপত্তা– ইত্যাদি বিষয় মূল্যায়ন করবে ওই মিশন।
এর আগে ঢাকায় ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি জানিয়েছিলেন, স্বাধীন এই প্রতিনিধি দল ইউরোপীয় জোটের পররাষ্ট্র বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ জোসেফ বোরেলের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে। প্রতিবেদনের আলোকে বাংলাদেশের নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন তিনি।
সফরের দ্বিতীয় দিন রোববার ঢাকায় ইউরোপীয় দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দূতাবাসের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করে প্রতিনিধিদল।
সোমবার সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত সচিব আসাদ আলম সিয়ামের নেতৃত্বে কয়েকজন কর্মকর্তা ইইউ মিশনের সঙ্গে বসেন। সেখানে ঘণ্টাখানেকের বৈঠক শেষে তারা যান রাজধানীর কারওয়ান বাজারে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে।
প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ঘণ্টাখানেক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ।
তিনি জানান, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়েছে কি-না, সেটাও ইইউ মিশন জানতে চেয়েছে।
গত দুই মাসে পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় তেমন জটিলতা না হওয়ার কথা ইইউ প্রতিনিধিদলের কাছে তুলে ধরার কথা জানিয়ে কামাল উদ্দিন বলেন, “ওরা জিজ্ঞেস করেছে যে, ‘আপনারা কোনো ইমপ্রুভমেন্ট দেখতে পাচ্ছেন কি-না’।
“তো, আমরা বলেছি যে, আমার মনে হয় এখন পর্যন্ত এই ইলেকশগুলোতে ইমপ্রুভমেন্ট আছে। আর এছাড়া হরহামেশা আমাদেরতো স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলো প্রায়ই হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন স্থানে, এমন কোনো বড় রক্তক্ষয় ছাড়াই ইলেকশনগুলো হচ্ছে। সে হিসাবে আমরা আশা করি যে, ইলেকশনের পরিবেশ এখনকার অবস্থায় ভালোই। কিন্তু তীব্র বাদানুবাদ অবশ্যই হয়, হবে, তাতে ভয় পাওয়ার মত কোনো কারণ নাই।”
সব বড় রাজনৈতিক দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি-না, এমন প্রশ্নে
মানবাধিকার কমিশন চেয়ারম্যান বলেন, “এ ধরনের ব্যাপারে আমাদের সঙ্গে আলাপ হয়নি।
“তবে ইলেকশন কেমন হবে এবং কীভাবে করলে এটা ভালো হতে পারে, সে বিষয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে। এবং মানবাধিকারের দৃষ্টিকোণ থেকে আলাপ হয়েছে। সেক্ষেত্রে আমরা আমাদের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছি।”
পর্যবেক্ষক মিশন পাঠানোর বিষয়ে ইইউ প্রতিনিধিদলের মনোভাবের বিষয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “এত আগে বলা ঠিক হবে কি-না, জানি না। তবে, ব্যক্তিগত ধারণা থেকে আমার মনে হচ্ছে যে, তারা বোধহয় অবজারভেশন টিম পাঠাতে পারে।”
ইইউ প্রতিনিধিদল এদিন সচিবালয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠানোর সম্ভাব্যতা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আমিনুল ইসলাম।