সিভিল মেরিটাইম সিকিউরিটি এবং মেরিটাইম সেফটি বিষয়ে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই।
Published : 31 Oct 2024, 07:30 PM
অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টনি ব্রুককে বাংলাদেশ থেকে আরও রোহিঙ্গাদের অস্ট্রেলিয়ায় নেওয়ার অনুরোধ করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার টনি ব্রুক সচিবালয়ে তার দপ্তরে সাক্ষাৎ করতে এলে উপদেষ্টা এই অনুরোধ জানান।
পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “তারা দুই হাজারের মত (রোহিঙ্গা) মনে হয় নিয়ে গেছে। আমরা বলছি আরও কিছু যেন নিয়ে যায়।
“আরেকটা বিষয় ছিল আমাদের ৯৭ জন বাংলাদেশি যারা অবৈধভাবে অস্ট্রেলিয়ায় ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ায় যারা এ রকম ঢুকতে চায় তাদের ওখানে একটা দ্বীপে রাখে। সেখানে খাবার-দাবারের কোনো সমস্যা হয় না। তারা বলছে এদের যেন আমরা তাড়াতাড়ি নিয়ে আসি। আমরা বলছি যে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমরা এদের নিয়ে আসব।”
এক প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, “অস্ট্রেলিয়ায় মাত্র ৯৭ জন অবৈধ বাংলাদেশি আছে। আর যারা আছে সবাই বৈধভাবে আছেন। সেখানে অনেক স্টুডেন্ট আছে। অনেক বাংলাদেশি সেখানকার নাগরিক হয়েছে, তাদের ভোটাধিকারও আছে।”
বৈঠকে বৈঠকে দুদেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি, আন্তঃরাষ্ট্রীয় অপরাধ মোকাবিলায় সহযোগিতা, সিভিল মেরিটাইম সিকিউরিটি এবং মেরিটাইম সেফটি বিষয়ে সহায়তা, প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধি, মানব পাচার ও অনিয়মিত অভিবাসন প্রতিরোধ বিষয়ে সহযোগিতাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়।
সমঝোতা স্মারক সই
দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার একটা সমঝোতা স্মারকও সই হয়েছে বলেও জানান তিনি। বলেন, “ভারত মহাসাগরে তো দুই দেশেরই অবস্থান রয়েছে।”
এতে বাংলাদেশের পক্ষে সই করেন কোস্টগার্ড এর মহাপরিচালক রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সই করেন দেশটির মেরিটাইম বর্ডার কমান্ড এর কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল ব্রেট সনটের।
উপদেষ্টা বলেন, “সন্ত্রাসবাদ, সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন এবং অর্থ পাচারসহ আন্তর্জাতিক অপরাধের ক্রমবর্ধমান হুমকি প্রতিরোধে বাংলাদেশ সর্বদা আন্তর্জাতিক সহযোগিতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়। এ বিষয়ে তথ্য বিনিময় এবং সহযোগিতা জোরদার ও সুসংহত করার ক্ষেত্রে আমাদের অভিন্ন দৃষ্টি ও আগ্রহ রয়েছে।”
মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়, “অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী জানান, অস্ট্রেলিয়াসহ অনেক দেশ নানা ধরনের সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকিতে রয়েছে। তরুণ প্রজন্ম অনলাইন ও বিভিন্ন মাধ্যমে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়াও সাইবার হামলাসহ এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও তথ্য আদান-প্রদানকে সর্বাধিক গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে।”
সংবাদ সম্মেলনে রাজধানীর কচুক্ষেতে আইন-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে পোশাক কর্মীদের সংঘাত নিয়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করলেও উপদেষ্টা জবাব দেননি।
এই সংঘাতে শ্রমিকরা সেনাবাহিনীর গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। যৌথ বাহিনী গুলি করলে দুইজন শ্রমিক আহত হয়েছেন।
বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার নারদিয়া সিম্পসন, বাংলাদেশ বিষয়ক প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট কর্নেল জন ডিম্পসি, নয়াদিল্লীতে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক কাউন্সেলর জেইড ডনি ও অস্ট্রেলিয়ান বর্ডার ফোর্স বিষয়ক কাউন্সিলর সুপারিন্টেন্ডেন্ট ব্লেইস টেইলরও উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ আবদুল মোমেন, পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. ময়নুল ইসলাম, বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মোহাম্মদ নুরে আলমসহ আরও কয়েকজন।