গেণ্ডারিয়ার শতবর্ষী পুকুরটি যেমন আছে, তেমন রাখার নির্দেশ

পুকুরটি দখল কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, এই রুলও দিয়েছে হাই কোর্ট।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 June 2023, 12:50 PM
Updated : 5 June 2023, 12:50 PM

পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়ায় শত বছরের পুরোনো ডিআইটি পুকুর ভরাট-দখল ও অবকাঠামো নির্মাণের উপর স্থিতাবস্থা জারির নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। অর্থাৎ পুকুরটি এখন যেমন আছে, আপাতত সেই অবস্থায়ই রাখতে হবে।

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের করা রিট আবেদনে সোমবার এই আদেশ দেয় বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর বেঞ্চ।

আদালত প্রাথমিক শুনানি নিয়ে স্থিতাবস্থা জারির পাশাপাশি একটি রুলও দিয়েছে বলে জানান রিট আবেদনকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

পুকুরটি দখল কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং এসএ ও সিএস অনুসারে পুকুর রক্ষার জন্য কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানাতে বলা হয়েছে রুলে।

পরিবেশ সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার, ঢাকা জেলা প্রশাসক, শ্যামপুর ও গেণ্ডারিয়া থানার ওসি, শ্যামপুরের ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহানা আক্তার, সাবেক কাউন্সিলর সাইদুর রহমান শহীদসহ ১১ জনকে এই রুলের জবাব দিতে হবে।

Also Read: গেণ্ডারিয়ায় শতবর্ষী পুকুর ‘দখল করে’ দোকান ও কাউন্সিলর কার্যালয়, সংরক্ষণ চেয়ে রিট মামলা

গত ৩ জুন দৈনিক কালবেলায় ‘পুকুর দখল করে মার্কেট, কাউন্সিলরের অফিস’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

সেখানে বলা হয়, পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়ায় ১৯৬৩ সালে ১৩ দশমিক ৫৭ একর সম্পত্তি অধিগ্রহণ করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এর মধ্যে দুই একরের একটি পুকুরও ছিল। এলাকাবাসী খাওয়ার পানি সংগ্রহ থেকে ধোয়া-মোছাসহ নানাকাজে পুকুরের পানি ব্যবহার করতেন। পুকুর থেকে মাছও ধরতেন তারা।

“শত বছরের ঐতিহ্যবাহী সেই পুকুরটি ব্যক্তিমালিকানাধীন দাবি করে প্রায় ভরাট করে ফেলা হচ্ছে। চারপাশে ছোট ছোট মার্কেট, দোকান ও রিকশার গ্যারেজও গড়ে তোলা হয়েছে। দখল নিশ্চিত করতে পুকুরের একটি অংশ ভরাট করে নির্মিত দোতলা ভবন স্থানীয় ৪৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহানা আক্তারের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বছরের পর বছর ধরে দখল চললেও উচ্ছেদ না করায় ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।”

রাজউকের সম্পত্তি বিভাগের বরাত দিয়ে পত্রিকাটি লিখেছে, “পুকুরটি রাজউকেরই। এটি দখলে নেওয়ার জন্য প্রভাবশালীরা ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে একটি মামলা করেন। সেই মামলা এখনও চলছে। তবে গেজেটভুক্ত সম্পত্তি হওয়ায় পুকুরটি দখলে নিতে পারছেন না দখলদাররা। অবৈধ দখল উচ্ছেদে রাজউকের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে বলে মনে করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, সদিচ্ছা থাকলে এক ঘণ্টায় উচ্ছেদ করে পুকুরটি রাজউকের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা সম্ভব।”

ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর পুকুরটি রক্ষায় আদালতে যান মনজিল মোরসেদ।