ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, “যে সব দেশ তাদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়, সেই সব দেশ ও সংস্থাকে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।“
Published : 22 Nov 2023, 11:24 AM
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য প্রতিবেশী ভারত, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, সার্ক ও ওয়াইসিসহ বিশ্বের ৩৮ দেশ ও সংস্থাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
গত ১৫ নভেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপর এসব সংস্থা ও দেশকে ৭ জানুয়ারির নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
তিনি বলেন, “যেসব দেশ তাদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায়, সেইসব দেশ ও সংস্থাকে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।“
ইসির আমন্ত্রিত দেশগুলো হল- ভারত, ভুটান, মালদ্বীপ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফ্রান্স, জর্জিয়া, ইন্দোনেশিয়া, কাজাখস্তান, রাশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, মিশর, তুরস্ক, উজবেকিস্তান, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, সেনেগাল, থাইল্যান্ড, আজারবাইজান, মালয়েশিয়া, মরিশাস, তিউনিশিয়া, ব্রুনাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ওমান, কুয়েত, সৌদি আরব, চীন, জাপান ও সিঙ্গাপুর।
এছাড়া সার্ক ও ওআইসি মহাসচিব, ফেম্বোসা এবং এ-ওয়েব চেয়ারপারসনকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসব দেশ ও সংস্থাকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি দেওয়া হচ্ছে।
আমন্ত্রিতদের মধ্যে যারা আসবেন, তাদের ব্যয় বহন করবে নির্বাচন কমিশন। আমন্ত্রণকারী দেশ বা সংস্থাকেই এ ব্যয় বহন করতে হয়। তবে বিদেশি পর্যবেক্ষক ও সাংবাদিকদের ব্যয় ইসি বহন করে না। সেক্ষেত্রে আগ্রহীদের নিজ খরচে আসতে হয় বলে জানিয়েছে কমিশন।
এ পর্যন্ত ১২টি দেশ ও সংস্থার ৪৪ জন পর্যবেক্ষক এবং সাংবাদিক ভোট পর্যবেক্ষণের আবেদন করেছেন বলে জানান অতিরিক্ত সচিব কুমার দেবনাথ।
তিনি বলেন, আগামী ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদেশিদের আবেদনের সময় বাড়ানো হয়েছে।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হয়েছে গত ১ নভেম্বর থেকে। এর দুই সপ্তাহ পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল গত ১৫ নভেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর; বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর।
রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়ের ও নিষ্পত্তি তারিখ ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। ভোট হবে আসছে বছরের ৭ জানুয়ারি।
কোন নির্বাচনে কত পর্যবেক্ষক
২০১৮ ও ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ ও দশম সংসদ নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাষ্ট্র পর্যবেক্ষক পাঠায়নি। পরে এ দুটি নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্নও তুলেছিল তারা।
২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে ৮১টি দেশি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠানের ২৫ হাজার ৯০০ জন প্রতিনিধি। এছাড়া ৩৮ জন (ফেমবোসা, এএইএ, ওআইসি ও কমনওয়েলথ থেকে আমন্ত্রিত) বিদেশি পর্যবেক্ষক, বিভিন্ন বিদেশি মিশনের ৬৪ জন কর্মকর্তা এবং দূতাবাস ও বিদেশি সংস্থায় কর্মরত ৬১ জন ভোট পর্যবেক্ষণ করেন।
দশম সংসদ নির্বাচনে সব দল অংশ না নেওয়ায় পর্যবেক্ষকও কম ছিল। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ওই নির্বাচনে মাত্র চারজন বিদেশি এবং স্থানীয় ৩৫টি সংস্থার ৮ হাজার ৮৭৪ জন ভোট পর্যবেক্ষণ করেন।
২০০৮ সালে ৫৯৩ জন বিদেশি এবং ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৩ জন দেশি ভোট পর্যবেক্ষণ করেন।
২০০১ সালে ভোট পর্যবেক্ষণে আসেন ২২৫ জন বিদেশি এবং ২ লাখ ১৮ হাজার জন দেশি পর্যবেক্ষক ভোট পর্যবেক্ষণ করেন।
১৯৯৬ সালে প্রায় ৪০ হাজার দেশি এবং ২৬৫ জন বিদেশি ভোট পর্যবেক্ষণ করেন।
১৯৯১ সালে ৩০ হাজার দেশি এবং ৫৯ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক ভোট পর্যবেক্ষণ করেন।
পুরনো খবর