Published : 04 May 2025, 03:42 PM
অনলাইন জুয়ার সব ওয়েবসাইট, লিংক, অ্যাপ, গেইটওয়ে এবং এ সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন অপসারণে সরকারকে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে রুল জারি করেছে হাই কোর্ট।
একইসঙ্গে অনলাইন জুয়া বন্ধে এবং জড়িতদের কার্যক্রম সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য একটি মনিটরিং সেল গঠনের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার বেঞ্চ রোববার এ আদেশ দেয়।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট এবং পুলিশ মহাপরিদর্শককে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
পাশাপাশি অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার এবং আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে ৩০ দিনের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওিয়া হয়েছে।
রিট আবেদনের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। তাকে সহযোগিতা করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাউছার, নাঈম সরদার ও বায়েজীদ হোসাইন।
অনলাইন জুয়া বন্ধে গত ১৬ এপ্রিল সরকারকে আইনি নোটিস দেয় ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট। বিবাদীরা কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় রিট মামলাটি করা হয়।
মামলায় বলা হয়, বাংলাদেশের প্রচলিত আইন এবং সংবিধান অনুযায়ী যেকোনো ধরনের জুয়া খেলা বেআইনি ও অপরাধ। কিন্তু নোটিস গ্রহীতাদের নিষ্ক্রিয়তার কারণে অনলাইন জুয়া বাংলাদেশের মহামারী আকার ধারণ করেছে। বিভিন্ন পত্রপত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, দেশের প্রায় ৫০ লাখ মানুষ অনলাইন জুয়ায় আসক্ত। হাতে হাতে স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট থাকায় প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি কোমলমতি শিশুরাও জুয়ায় আসক্ত হচ্ছে। এর মাধ্যমে লাখ লাখ মানুষ নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে।
আবেদনে বলা হয়, অনলাইন জুয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব লিংক, সাইট, গেটওয়ে, অ্যাপ্লিকেশন বন্ধ বা ব্লক করতে হবে। গুগল বা অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন যাতে অনলাইন জুয়ার কোনো ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার বা প্রসার করতে না পারে, সে বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।
অনলাইন জুয়ার প্রচার-প্রচারণার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তারকা, টাকা লেনদেনকারী মোবাইল ব্যাংকিং কোম্পানি এবং তপসিলি ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে আবেদনে। গুগল, ফেইসবুক, ইউটিউব, এক্স, হোয়াটসঅ্যাপসহ কোনো সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে যাতে জুয়া সংশ্লিষ্ট কোনো সাইটে ঢোকা না যায় তা নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে গত ২৭ এপ্রিল আরেক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে অনলাইন জুয়া বন্ধে সাত দপ্তরের সাত কর্মকর্তাকে নিয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, বিটিআরসি, বিএফআইইউ ও পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এসব সদস্য নিতে হবে।
অনলাইন জুয়া বন্ধে ৭ জনের কমিটি করার আদেশ