সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিম শরীফুর রহমান এ আদেশ দেন।
Published : 30 Dec 2024, 12:33 PM
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে গুলশান থানার হত্যা মামলায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে চার দিন হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছে পুলিশ।
সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিম শরীফুর রহমান এ আদেশ দেন।
এছাড়া হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় ইনু, শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছে একই আদালত।
ইনুর রিমান্ড আবেদন ছিল ১০ দিনের
গুলশান থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই মোক্তার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, সকালে কড়া নিরাপত্তায় ইনুকে আদালতে আনা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির গুলশান জোনাল টিমের উপ পরিদর্শক আবু জাফর বিশ্বাস ইনুকে জিজ্ঞাসাবাদে নিতে ১০ দিন রিমান্ড আবেদন করেন।
আসামির রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করে আসামিপক্ষের আইনজীবী শাহীনুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড চেয়ে শুনানি করেন।
উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সাবেক এই মন্ত্রীর ৪ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেয়।
শুনানিতে ইনুর আইনজীবী আদালতকে বলেন, “রাজনৈতিক কারণে হাসানুল হক ইনুকে হয়রানি করার জন্য এ মামলায় আসামি করে রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। এ মামলায় রিমান্ড না দেওয়ার অনুরোধ করছি, প্রয়োজনে জেলগেইটে জিজ্ঞাসাবাদ দেন।“
তদন্ত কর্মকর্তা আবু জাফর শুনানিতে বলেন, “আসামি ইনু হত্যা মামলায় ৯ নম্বর আসামি। হত্যাকাণ্ডের সময় নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে তার ভূমিকা ছিল। মামলার সত্য উদঘাটনের জন্য তার ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।“
পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, “ইনু এ মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। ইনুদের মত ১৪ দলীয় জোটের নেতাদের ইন্ধনে শেখ হাসিনা এতবড় গণহত্যা চালিয়েছেন। তাই তার রিমান্ড প্রার্থনা করছি। “
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ১৯ জুলাই আন্দোলন চলার সময় গুলশানের প্রগতি সরণিতে মো. বাহাদুর হোসেন মনির রাস্তা পার হয়ে বাসায় সময় গুলিবিদ্ধ হন। পরে মনিরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন৷
এ ঘটনায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর মনিরের বাবা মো. আবু জাফর গুলশান থানায় শেখ হাসিনাসহ ১০৫ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এতে আরও ২০০ থেকে ৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
আরো মামলায় গ্রেপ্তার সালমান-ইনু-শাজাহান-পলক-আতিকুল
শাহবাগ, বিমানবন্দরসহ ঢাকার বিভিন্ন থানার হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় ইনু, শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, ঢাকা উত্তর সিটির করপোরেশনের সাবেক মেয়র আতিকুল ইসলাম ও আইনজীবী মনোয়ার ইসলাম চৌধুরী রবিনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের সরকারি কৌসুলি (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন, শুনানি নিয়ে ঢাকা মহানগর হাকিম শরীফুর রহমান সাবেক সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, উপদেষ্টা, মেয়রের গ্রেপ্তারের আদেশ দিয়েছেন।
সকালে তাদেরকে কড়া নিরাপত্তায় আদালতে উপস্থিত করে পুলিশ। এরপর সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন।
এর মধ্যে সালমান এফ রহমানকে মিরপুর থানার হত্যা মামলায়, শাহবাগ থানার হত্যা মামলায় পলককে, বিমানবন্দর থানার হত্যাচেষ্টা ও উত্তরা পশ্চিম থানার হত্যা মামলায় আতিকুল ইসলামকে, হাতিরঝিল থানার হত্যা মামলায় শাজাহান খানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
এছাড়া ইনুকে গুলশান থানার হত্যা মামলায় এবং আইনজীবী রবিনকে উত্তরা পশ্চিম থানার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।