“এ প্রতিবেদন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার তদন্তে পাওয়া তথ্য-প্রমাণে মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই,” বলেন তিনি।
Published : 13 Feb 2025, 11:27 PM
জুলাই-অগাস্টে ছাত্র-জনতার ওপর আওয়ামী লীগ সরকারের চালানো মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে অকাট্য দলিল হিসেবে জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনের প্রতিবেদন ব্যবহার করার কথা বলেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার নিজ কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার ওপর শেখ হাসিনা সরকার ও আওয়ামী লীগ যে দমন-নিপীড়ন ও হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, সেটির তদন্ত করে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাই কমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর), সে প্রতিবেদন ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার তদন্তে পাওয়া তথ্য-প্রমাণে মৌলিক কোনো পার্থক্য নেই।
“জাতিসংঘের প্রতিবেদনে সুস্পষ্ট হয়েছে যে দল হিসেবে আওয়ামী লীগ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরদের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও নির্দেশে বিভিন্ন বাহিনীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ সরাসরি প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেছে।”
জাতিসংঘের প্রতিবেদনকে মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি সুস্পষ্ট এবং অসম্ভব জোরালো প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরে তাজুল বলেন, “এই প্রমাণ তদন্ত সংস্থার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (এভিডেন্স) সাক্ষ্য হিসেবে আসবে এবং অকাট্য দলিল হিসেবে এটা ট্রাইব্যুনালে ব্যবহার করা যাবে। সেটা আমরা ব্যবহার করব।”
২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ অগাস্ট বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাবলি নিয়ে তৈরি করা এ প্রতিবেদন বুধবার প্রকাশ করা হয়।
জেনিভায় সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিবদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ফলকার টুর্ক।
প্রতিবেদনে গত জুলাই-অগাস্টে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দ্বারা সংগঠিত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্বিচারে গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও অতিরিক্ত বল প্রয়োগের মতো ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা উঠে এসেছে। এসব ঘটনায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন গোষ্ঠী, সংগঠন এবং বিভিন্ন নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা জড়িত ছিলেন বলে প্রতিবেদনটিতে তুলে ধরা হয়েছে।
সরকার পতনের পর ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে বলপ্রয়োগের ফলে হতাহতের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারে থাকা মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। শেখ হাসিনাসহ অনেকের বিরুদ্ধে ’গুমের’ অভিযোগও আনা হয়েছে।
অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বেশ কয়েকটি অভিযোগের তদন্তও শুরু করেছে। ট্রাইব্যুনাল ভারতে অবস্থান করা হাসিনাসহ অনেকের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করেছে।
জুলাই আন্দোলনে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য জাতিসংঘের প্রতিবেদন
র্যাব বিলুপ্ত, বিজিবি ও ডিজিএফ আইকে সীমায় বাধার সুপারিশ জাতিসংঘের
আন্দোলন দমাতে অভিযান শেখ হাসিনার নির্দেশ ও তদারকিতে: জাতিসংঘ