"শি জিনপিং আপনার সফরকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছেন", বলেন চীনের উপ-প্রধানমন্ত্রী।
Published : 27 Mar 2025, 10:58 PM
দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে (বিআরআই) যোগ দিতে পেরে বাংলাদেশ ‘গর্ব অনুভব’ করে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার চীনে দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী ডিং জুয়েক্সিয়াংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তিনি বলেন, "আজকের বৈঠক বাংলাদেশ-চীন অংশীদারত্বের ক্ষেত্রে আরেকটি মাইলফলক।
“আসুন, আমরা একসঙ্গে কাজ করি; বন্ধুত্ব, সহযোগিতা ও কৌশলগত সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করি।"
এদিন স্থানীয় সময় রাত ১০টা ২০ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা বেইজিং পৌঁছান বলে তার কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে।
বেইজিং ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান চীনের উপমন্ত্রী সান ওয়েইডং।
এর আগে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় হাইনান থেকে বেইজিংয়ের উদ্দেশে রওনা হন ইউনূস। রওনা হওয়ার আগে সেখানে বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া বার্ষিক সম্মেলনে ব্যস্ত সময় কাটান তিনি।
ওই সম্মেলনের ফাঁকেই তিনি বৈঠক করেন ডিং জুয়েক্সিয়াংয়ের সঙ্গে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় বলেছে, বৈঠকে বাংলাদেশ ও চীন তাদের সম্পর্ক আরও গভীর করতে সম্মত হয়।
ডিং বলেন, "রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং আপনার সফরকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছেন।"
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের ওয়ান-চায়না নীতির প্রতি দৃঢ় সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, “বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে (বিআরআই) যোগ দিতে পেরে গর্ব অনুভব করে।”
বৈঠকে বাংলাদেশ বিভিন্ন উন্নয়ন ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন প্রকল্পে চীনের সহায়তা চাওয়ার পাশাপাশি চীনা ঋণের সুদের হার কমিয়ে ১ থেকে ২ শতাংশ করার অনুরোধ জানায়।
চীনের অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পগুলোর ‘কমিটমেন্ট ফি’ মওকুফের আহ্বানও জানায় ঢাকা।
প্রধান উপদেষ্টা চীনের তৈরি পোশাক কারখানা, বৈদ্যুতিক যানবাহন, হালকা যন্ত্রপাতি, উচ্চ প্রযুক্তির ইলেকট্রনিকস, চিপ উৎপাদন ও সৌর প্যানেল শিল্প বাংলাদেশে স্থানান্তর সহজ করতে বেইজিংয়ের সহায়তা চান।
উপপ্রধানমন্ত্রী ডিং বলেন, ২০২৮ সাল পর্যন্ত চীনে বাংলাদেশি পণ্য শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার পাবে, যা বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণের দুই বছর পর পর্যন্ত বহাল থাকবে।
বাংলাদেশের সঙ্গে চীন মুক্ত বাণিজ্য আলোচনা শুরু করতে আগ্রহী বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
উপপ্রধানমন্ত্রী বলেন, তার দেশ মোংলা বন্দরের আধুনিকায়ন ও দাশেরকান্দি পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্পের উন্নয়নেও অর্থায়ন করবে।
চীনা সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আরও বেশি স্কলারশিপ প্রদান করবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে হাজার হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে।
উপপ্রধানমন্ত্রী ঢাকার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের জন্য চারটি সমুদ্রগামী জাহাজ কেনায় চীনের অর্থায়নের আশ্বাস দেন।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের প্রচেষ্টায় চীন বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকে নিয়ে সংলাপ করবে।
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, জ্বালানি, রেল ও সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা ফওজুল কবির খান, প্রধান উপদেষ্টার উচ্চ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান ও বিডা নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।