Published : 06 May 2025, 07:59 PM
ইউরোপের দেশ ইতালিতে বৈধ অভিবাসন বাড়াতে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে বাংলাদেশ।
ঢাকায় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে মঙ্গলবার দুই দেশের মধ্যে ‘মাইগ্রেশন ও মোবিলিটি’ সংক্রান্ত এমওইউ স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।
এমওইউতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাতিও পিয়ানতেদোসি সই করেন।
পরে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, “বৈধ পথে মাইগ্রেশন বৃদ্ধি করতেই আমাদের এই উদ্যোগ। যারা ইতালি গমনেচ্ছু, তারা যেন নিরাপদে যেতে পারেন, ভালো পারিশ্রমিক পান সেটাই লক্ষ্য আমাদের।”
ইতালি সিজনাল ও নন-সিজনাল দুভাবেই লোক নেবে আর সে অনুযায়ী পরিকল্পনা করে মন্ত্রণালয় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ করবে বলেও জানান তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, “তারা (ইতালি) বছরে একবার করে মিটিং করবে। আমাদের টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার আছে, যেখানে ইতালি আমাদের কর্মীদের ইতালি ভাষা শেখাতে পারে এই বিষয়ে কাজ করছি।”
ইতালিসহ ইউরোপীয় দেশগুলোতে বৈধ অভিবাসন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ চলছে বলে জানান আসিফ নজরুল। ইতোমধ্যে পর্তুগাল ও অস্ট্রিয়াসহ ইউরোপের ছয়টি দেশের সঙ্গেও এমওইউ সইসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার কথা তুলে ধরেন তিনি।
সমঝোতা স্মারকের অনুষ্ঠানে দূতাবাসের ফাইল দ্রুত কার্যকর ও ইতালিতে বাংলাদেশি ছাত্রদের ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার বিষয়ে আলোচনার তথ্য দিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, “অভিবাসনের দিক দিয়ে আমাদেরকে যেন ইতালির সরকারের ঝুঁকিপূর্ণ তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়, সে বিষয়টিও আলোকপাত করা হয়েছে।”
ইতালিতে কোন কোন সেক্টরে কী পরিমাণ লোক পাঠানো হবে, সে বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, “সমঝোতা স্মারকে এত ডিটেইলস থাকে না। বর্তমানে আমাদের যে কোটা আছে, সেটা বাড়ানো হবে। কোটা বৃদ্ধির বিষয়ে ইতালি চিন্তাভাবনা করবে। আমরা আশা করছি, অবৈধ পথে যাওয়া অনেকটা বন্ধ হয়ে যাবে।”
ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাতিও পিয়ানতেদোসি অনুষ্ঠানে বলেন, “বাংলাদেশ-ইতালি সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। আমরা সবসময় শ্রমিকদের বৈধ পথে আসার জন্য অনুপ্রাণিত করি। ইতালি সরকার দীর্ঘদিন থেকে এটা নিয়ে কাজ করে আসছে। এই সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে দুই দেশের বন্ধুত্ব আরও বৃদ্ধি পাবে।”
এর আগে সোমবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাতিও পিয়ানতেদোসি। বৈধভাবে কর্মী নিতে ইতালি আগ্রহের কথা পরে তুলে ধরেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
সৌদি আরবে অভিবাসন নিয়ে প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, দেশটিতে অবৈধভাবে বসবাসকারী নারী কর্মীদের বৈধ করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি সংখ্যক দক্ষ ও অদক্ষ কর্মী প্রেরণের বিষয়েও সৌদি সরকারের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।”
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ জর্ডানে পুরুষকর্মীর সংখ্যা বাড়ানো বিষয়ে দেশটির সরকারের সঙ্গে আলোচনার কথা তুলে ধরেন প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা।
সেইসঙ্গে নারী কর্মীদের ব্যাপারে তিনি বলেন, “জর্ডানে যে সকল নারীকর্মী নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মস্থল পরিবর্তনসহ নানা কারণে অবৈধ হয়েছেন, তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে স্বীকারোক্তির মাধ্যমে বৈধ হতে পারবেন। ফলে তারা জরিমানা ছাড়াই বৈধতা পাবেন।”
আরও পড়ুন-