“যারা গণহত্যা করেছে, সেই আওয়ামী লীগ রাজনীতি করার আর বিন্দু পরিমাণ অধিকার রাখে না,” বলেন আখতার।
Published : 12 Feb 2025, 11:32 PM
চব্বিশের গণআন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি তুলেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
তিনি বলেছেন, “আর কোনো নয়-ছয় নয়, আইনি প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিচারিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দলটির রাজনীতি বাংলাদেশে চিরতরে নিষিদ্ধ করতে হবে।
“আমরা বাংলাদেশের ছাত্রজনতা সরকারের সিদ্ধান্তর পক্ষে রাজপথে আমাদের উপস্থিতি জানান দেব। কিন্তু কোনোভাবেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে গণহত্যাকারী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী আওয়ামী লীগকে ফিরতে দেব না।”
ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বুধবার রাত ৯টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য মো. কাশেমের জানাজায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
আক্তার বলেন, “আমাদের ভাইকে হত্যার পেছনে যারা সক্রিয়, হুমকি দিয়েছে, পরিকল্পনা করেছে তারা সকলেই পতিত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ।
“যারা গণহত্যা করেছে, সেই আওয়ামী লীগ রাজনীতি করার আর বিন্দু পরিমাণ অধিকার রাখে না। শহীদ ভাইয়ের লাশের শপথ নিয়ে বলছি, আওয়ামী লীগ যদি আর কোনো আপত্তিকর ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করে, শরীরের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে আমরা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে লড়ে যাব।”
আওয়ামী লীগ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, “ফ্যাসিবাদের সময়ের আয়নাঘর দেখেছি। ২ ফিট বাই ৪ ফিট রুমে আমাদের ভাইদের রেখেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় অভ্যুত্থানের সময়ও আমাদের ভাইদের আয়নাঘরে রাখা হয়েছিল।
“জাতিসংঘের রিপোর্টে আমরা দেখেছি পুলিশ শেখ হাসিনার নির্দেশে বাংলাদেশ গণহত্যা করেছিল, মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছিল। ভারতে থাকুক আর যেখানেই থাকুক, শেখ হাসিনাকে দেশে এনে বিচার করতে হবে।”
গাজীপুরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাবেক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলা ঠেকাতে গিয়ে আহত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য কাশেম বুধবার বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। শহীদ মিনারে প্রাঙ্গণে তার জানাজা শেষে কফিন নিয়ে মিছিল করেন জানাজায় অংশগ্রহণকারীরা।
আখতার বলেন, “ছয় মাস পরেও বিপ্লবীদের শহীদ হতে হচ্ছে। ছয় মাসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কী করল? আজকে আমাদের ভাইয়ের রক্তকে সামনে রেখে শপথ করতে হবে। যারা নতুন করে আওয়ামী লীগের পক্ষে জনমত তৈরি করছেন, তাদেরও বিচার করতে হবে।”
কাশেমের জানাজায় অংশ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি তোলেন।
তিনি বলেন, “আমরা দেখছি কালচারাল অ্যাক্টিভিজম, শ্যাডো অ্যাক্টিভিজমের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ রাজনীতি করেছে। এখন সেটার বৈধতা উৎপাদন করছে।
“আমাদের সার্বভৌমত্ব রেখে আওয়ামী লীগ নিজের ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করেছিল। হয় আওয়ামী লীগ থাকবে, না হয় আমরা থাকব। আমরা একসঙ্গে থাকতে পারি না।”
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনাদের আর কী লাগবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে।”