দাবি মানা না হলে প্রধান বিচারপতির বাসভবন ঘেরাওয়েরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
Published : 10 Aug 2024, 12:33 PM
প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের বিচারপতিদের পদত্যাগের দাবিতে সুপ্রিম কোর্ট ঘেরাও করে বিক্ষোভ করছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আন্দোলনকারীরা।
তাদের দাবি মানা না হলে প্রধান বিচারপতির বাসভবন ঘেরাওয়েরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
শনিবার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ডাকে শনিবার বেলা ১১ টার দিকে আন্দোলনকারীরা হাই কোর্টের এনেক্স ভবনের সামনে অবস্থান নেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “দুপুর ১টার মধ্যে ফ্যাসিবাদের মদদপুষ্ট প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের সব বিচারপতিদের পদত্যাগ করতে হবে। অন্যথায় আমরা প্রধান বিচারপতির বাসভবন ঘেরাও করব।”
এর আগে শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল থেকে মিছিল নিয়ে শিক্ষাচত্বরের সামনে দিয়ে হাই কোর্টে প্রবেশ করেন। শিক্ষার্থীরা এনেক্স ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে 'এক দুই তিন চার, বিচারপতি গদি ছাড়', 'হাসিনার দালালেরা হুঁশিয়ারি সাবধান', 'অ্যাকশন অ্যাকশন বিচারপতির বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন', 'ঘেরাও ঘেরাও ঘেরাও হবে, বিচারপতির ভবন ঘেরাও হবে,' ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
এর আগে সকালে প্রধান বিচারপতি হাই কোর্টের বিচারপতিদের নিয়ে ফুলকোর্ট সভা আহ্বান করার করলেও আন্দোলনকারীরা ঘেরাওয়ের ডাক দেওয়ার পর তা স্থগিত করা হয়।
ফুলকোর্ট সভা আহ্বানের পরই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক, বর্তমানে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ফেইসবুক পোস্টে লেখেন, “ফ্যাসিবাদের মদদপুষ্ট ও নানান অপকর্মে জড়িত সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সরকারের সঙ্গে কোনো প্রকার আলোচনা না করে ফুলকোর্ট মিটিং ডেকেছেন।
“পরাজিত শক্তির যেকোনো প্রকার ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না। আইনজীবীরা এরইমধ্যে এর প্রতিবাদে জড়ো হয়েছেন। আমরা আগেই প্রধান বিচারপতিকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছিলাম। ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তাদের উস্কানি দিলে এর ভয়াবহ পরিণাম ভোগ করতে হবে।
“অনবিলম্বে বিনা শর্তে প্রধান বিচারপতি পদ থেকে পদত্যাগ করুন এবং ফুল কোর্ট মিটিং বন্ধ করুন।”
আসিফ মাহমুদের পোস্টটি পরে সারজিস আলমসহ কয়েকজন সমন্বয়ক শেয়ার করেন।
এর মধ্যে আব্দুল হান্নান মাসুদ নামের এই আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক তার পোস্টে ‘হাই কোর্ট ঘেরাওয়ের ডাক দেন।
তিনি তার পোস্টে সবাইকে দ্রুত সকাল ১০টার মধ্যে কার্জন হলের গেটে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানান।
এর পরপরই প্রধান বিচারপতির ডাকা ফুলকোর্ট সভা স্থগিত করার খবর পাওয়া যায়।
শেখ হাসিনার পতনের পর সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সংস্কারের যে দাবি উঠেছে, তার ছোঁয়া লেগেছে বিচার বিভাগে।
শেখ হাসিনার মেয়াদে নিয়োগ পাওয়া প্রধান বিচারপতিসহ অন্য বিচারপতিদের পদত্যাগের দাবি উঠেছে।
বদলে যাওয়া পরিস্থিততে গত বুধবার পদত্যাগ করেছেন শেখ হাসিনার সময় নিয়োগ পাওয়া অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান, বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক এবং দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা।