সাইফুল ইসলাম বলেছেন, তাকে ফোনে বলা হয়েছে বেশি বাড়াবাড়ি করলে মেয়েকে মেরে ফেলা হবে।
Published : 18 Feb 2024, 09:10 PM
ফোনে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এনে ঢাকার মুগদা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী সিনথিয়া ইসলাম তিশার বাবা মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি দাবি করেছেন, তাকে বলা হয়েছে ‘বেশি বাড়াবাড়ি করলে তার মেয়েকে মেরে ফেলা হবে।’
থানায় অভিযোগ করার পাশাপাশি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন সাইফুল। সেখানে তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, তাকে হুমকি দিয়েছেন তিশাকে বিয়ে করা খন্দকার মুশতাক আহমেদ।
মুগদা থানার ওসি তারিকুজ্জামান জানান, সাইফুল তার অভিযোগে লিখেছেন, গত ১২ ফেব্রুয়ারি একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়েছে।
“বলা হয়েছে, বেশি বাড়াবাড়ি কইরেন না, বেশি বাড়াবাড়ি করলে আপনার মেয়েকে মেরে ফেলব।”
মেয়ে বলতে তিশাকে বোঝানো হয়েছে কি না, এই প্রশ্নে ওসি বলেন, “না, তিশার আরো বোন রয়েছে। আর আমিও জানতে চেয়েছি কোন মেয়ের ক্ষতির কথা বলা হয়েছে। তখন তার বাবা বলেছেন ‘জানি না’।”
ঢাকার মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল ও কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় তিশাকে বিয়ে করেন সেই প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদ, যার বয়স ৬০ এর বেশি।
তিশার বাবা অভিযোগ করেছিলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে গ্রামের বাড়ি থেকে তার মেয়েকে গত বছরের ১২ জুন অপহরণ করে নিয়ে যায় মুশতাকের সহযোগীরা।
ঠাকুরগাঁওয়ে অপহরণের মামলার পর ওই তরুণী ১৬ জুলাই আদালতে জবানবন্দি দিয়ে জানান, তিনি স্বেচ্ছায় এসেছেন। সেদিনই আদালত থেকে নিজ জিম্মায় মুক্তি নিয়ে তিনি মুশতাকের সঙ্গে আবার ঢাকায় চলে আসেন।
একটি রিট আবেদনের পর মুশতাককে আইডিয়াল কলেজের ত্রিসীমানায় ঘেঁষতেও নিষেধ করেছে হাই কোর্ট।
তিশা ও মুশতাকের বিয়ে নিয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। মুশতাক তাদের মধ্যকার প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে এবারের বইমেলায় বইও প্রকাশ করেছেন। মেলায় গিয়ে আবার দুয়োধ্বনির মুখে প্রাঙ্গণ ছেড়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন।
তিশার বাবা সাইফুল ইসলাম আইনি লড়াই থামাচ্ছেন না। তিনি সংবাদ সম্মেলনে এসে দাবি করেছেন, তার মেয়েকে জিম্মি করে বিয়েতে সায় দিতে বাধ্য করা হয়েছে।
মুগদা থানায় অভিযোগ করার পর রোববার বিকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা কার্যালয়ে যান গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদের সঙ্গে দেখা করতে।
সেখান থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, খন্দকার মুশতাক আহমেদই তাকে ‘নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন।’
আইডিয়ালের সেই ছাত্রীকে জিম্মায় পেতে বাবার রিট আবেদন
ডিবি কর্মকর্তা হারুনকে কী জানালেন মুশতাক-তিশা দম্পতি?
আইডিয়াল স্কুল ও কলেজের সীমানায়ও ঘেঁষা যাবে না, নির্দেশ মুশতাককে
“আমার ধারণা খন্দকার মুশতাক আহমেদ তার লোকজনকে দিয়ে নানাভাবে আমাকে চাপে রাখার জন্য হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। বিষয়টির একটা আইনগত পদক্ষেপ জরুরি। সেজন্য মুগদা থানায় জিডি করেছি, আজ ডিবিতে লিখিত অভিযোগ করলাম।”
গোয়েন্দা কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ বলেন, “তিশার বাবা হঠাৎ করে আমাদের কাছে এসেছেন এবং এসে মেয়ের কথা, মেয়ের জামাইয়ের কথা বলেছেন এবং একটি জিডির কপি দিয়েছেন।
“আসলে উনি একজন বাবা। বাবা হিসেবে একটি অভিযোগ করেছেন, সেটা আমরা খতিয়ে দেখব, কী ঘটনা থেকে এটি হয়েছে?”
মুশতাকও তাদের কাছে গিয়েছিলেন জানিয়ে হারুন বলেন, “দুটি অভিযোগকে একত্রিত করে যাচাই বাছাই করব আসলে কী ঘটেছিল? তারপর বলতে পাবর কোথা থেকে কী ঘটনার উৎপত্তি, তা পরে জানাব।”
তিশার বাবার অভিযোগের বিষয়ে মুশতাকের বক্তব্য জানতে পারেনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।