চক্রটি গত ৭ বছর যাবৎ সংঘবদ্ধভাবে টিকেট কালোবাজারি করে আসছে।
Published : 20 Oct 2022, 09:04 PM
রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকা থেকে টিকেট কালোবাজারি চক্রের ‘হোতা’সহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলমান অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করার পাশাপাশি বিভিন্ন ট্রেনের ৮৮টি টিকিট এবং ১৮ হাজার ৪৪৭ টাকা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- মো. সেলিম (৪৮), মো. শাহ আলম (৩৪), মো. লিটন (৩৫), মো. আ. রশিদ ফকির (৩০) ও খোকন মিয়া (৫৮)।
বিকালে টিকাটুলিতে র্যাব-৩ এর সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সম্প্রতি কালোবাজারি চক্রের সদস্যরা কাউন্টার ও অনলাইন থেকে টিকেট কিনে কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকায় অধিক মূল্যে বিক্রয় করে আসছিল।
গেল কোরবানির ঈদের আগে চক্রের ছয় সদস্য গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সাম্প্রতিক তথ্য ও অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার চক্রটির হোতা সেলিমসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান তিনি।
র্যাব-৩ অধিনায়ক আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, “কমলাপুর রেলস্টেশনে এই কালোবাজারি চক্রটির ‘হোতা’ সেলিম এবং অন্যান্য সদস্যরা মিলে রেলস্টেশনে লাইনে দাঁড়িয়ে একেকটি এনআইডি দিয়ে ৪টি করে টিকিট সংগ্রহ করে।
“অনলাইনেও বিভিন্ন পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও মোবাইল ফোন নম্বর ব্যবহার করে টিকিট সংগ্রহ করে থাকে। এরপর সেলিমের নেতৃত্বে এক একটি ট্রেন ছাড়ার দুই ঘণ্টা আগে থেকে তারা অধিক মূল্যে টিকিট বিক্রির তৎপরতা শুরু করে।”
ট্রেন ছাড়ার সময় যত ঘনিয়ে আসে, চক্রটি টিকিটের দাম তত বাড়াতে থাকে জানিয়ে র্যাব কর্মকর্তা আরিফ বলেন, “তারা সাধারণত দ্বিগুণ মূল্যে টিকেট বিক্রি করে থাকে। সুযোগ এবং সময় বুঝে অনেক ক্ষেত্রে তারা টিকেটের দাম আরও বাড়িয়ে দেয়।”
চক্রটি মূলত তিস্তা এক্সপ্রেস, এগারো সিন্দুর প্রভাতী, মহানগর প্রভাতী, চট্টলা এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস, ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ও পারাবত এক্সপ্রেসের টিকেট কালোবাজারি করে থাকে বলে জানান তিনি।
“এই চক্রটির আরও সক্রিয় সদস্য রয়েছে, যারা ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি করে সাধারণ যাত্রীদের নিকট চড়াদামে বিক্রি করে থাকে।”
জিজ্ঞাসাবাদের পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৩ অধিনায়ক জানান, চক্রটি গত ৭ বছর যাবৎ সংঘবদ্ধভাবে টিকেট কালোবাজারি করে আসছে।
“এই চক্রটির হোতা সেলিম এবং অন্যান্য সদস্যরা মিলে কমলাপুর রেলস্টেশনে লাইনে দাঁড়িয়ে একেকটি এনআইডি দিয়ে ৪টি করে টিকিট সংগ্রহ করে। এমনকি অনেক সময় তারা রিকশাওয়ালা, কুলি, দিনমজুরকে অল্প টাকার বিনিময়ে লাইনে দাঁড় করিয়ে তাদের মাধ্যমে টিকিট সংগ্রহ করে।
“হোতা সেলিম জানিয়েছে, তারা গত কোরবানির ঈদের সময় ৫০০ টাকার টিকেট ২০০০ টাকায়ও বিক্রি করেছে।”
সেলিমের নামে টিকেট কালোবাজারির দায়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মোট ৭টি মামলা রয়েছে জানিয়ে র্যাব কর্মকর্তা আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, “বিভিন্ন মেয়াদে ইতোপূর্বে সে জেলও খেটেছে। জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও একই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।”