“আমরা বলেছি, বাংলাদেশের গণমাধ্যম মূলত বেসরকারি,” বলেন হাছান মাহমুদ।
Published : 12 Jul 2023, 07:30 PM
বাংলাদেশের গণমাধ্যম এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের কাজের বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলকে অবহিত করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ মূল্যায়ন করতে আসা ছয় সদস্যের এই প্রতিনিধি দল বুধবার সচিবালয়ে গিয়ে তথ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে।
পরে তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তারা দেশের গণমাধ্যম এবং আমাদের মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। আমরা বলেছি, বাংলাদেশের গণমাধ্যম মূলত বেসরকারি।
“বাংলাদেশ টেলিভিশন আর ৩৫টি বেসরকারি টিভি চ্যানেল এখন সম্প্রচারে আছে। সাড়ে ১২শ দৈনিক পত্রিকা, কয়েক হাজার অনলাইন, এফএম ও কমিউনিটি রেডিও সবই বেসরকারি, বাংলাদেশ বেতার ছাড়া।”
তথ্যমন্ত্রী জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়ানোর ফলে অনেক সময় যে হানাহানি হয়, সেজন্য সেই প্ল্যাটফর্মের যে দায়িত্ব রয়েছে, সেসব নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
“ইউরোপীয় ইউনিয়ন এ বছরের গোড়ায় আইন সংশোধন করে বলেছে, প্রত্যেক সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্মকে ইউরোপে রেজিস্টার্ড হতে হবে। আমরা ফেইসবুক, টুইটার, ইউটিউবসহ সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোকে বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী এখানে রেজিস্টার্ড হওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বলে আসছি, কিন্তু এখনও পর্যন্ত তা হয়নি।”
গুজব বা বিতর্কিত পোস্ট সরাতে বললেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর কর্তৃপক্ষ দেরি করে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “যদিও সরায়, তার হারটা হচ্ছে ১০ শতাংশ, ৯০ শতাংশ সরায় না। এতে রাষ্ট্রে, সমাজে যে হানাহানি তৈরি হয় সেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।”
হাছান মাহমুদ বলেন, ইউরোপের দেশগুলোতে যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তারা ক্ষমতায় থেকেই নির্বাচন হয়। বাংলাদেশেও আইন অনুযায়ী তাই হবে, সে বিষয়টি তিনি ইইউ প্রতিনিধিদের জানিয়েছেন।
“নির্বাচনের সময় সরকারের রুটিন কাজ করা ছাড়া আর কোনো কাজ করার ক্ষমতা থাকে না। সরকারের যে প্রতিষ্ঠানগুলো নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্ট, তাদের সবার চাকরি নির্বাচন কমিশনের হাতে ন্যস্ত হয়, সেটি আমি তাদের জানিয়েছি।”
তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং বিরোধী দলকে নির্বাচনে আনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা, এ প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। আসলে এ নিয়ে কারো কোনো মাথাব্যথা নাই। এটি একমাত্র বিএনপির মাথাব্যথা।
“আর তারা এসেছে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের ব্যাপারে, বিরোধী দলকে নির্বাচনে আনার জন্য আসে নাই। তবে আমি তাদেরকে বলেছি, আমরা চাই বিএনপিসহ সমস্ত রাজনৈতিক দল আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক।”
এ বছরের শেষে বা পরবর্তী বছরের শুরুতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ সফর করছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ছয় সদস্যের এই ইলেকশন এক্সপ্লোরেটরি মিশন বা অনুসন্ধানী অগ্রগামী দল।
৮ থেকে ২৩ জুলাই এ সফরে মূল নিবার্চন পর্যবেক্ষণ মিশনের কর্মপরিধি, পরিকল্পনা, বাজেট, লজিস্টিক্স ও নিরাপত্তা– ইত্যাদি বিষয় মূল্যায়ন করবে এই মিশন। এর অংশ হিসেবে তারা নির্বাচন সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করছেন।
স্বাধীন এই প্রতিনিধি দল ইউরোপীয় জোটের পররাষ্ট্র বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ জোসেফ বোরেলের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে। প্রতিবেদনের আলোকে বাংলাদেশের নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন তিনি।