আগুনের ঘটনায় বঙ্গবাজারের হাজার হাজার দোকানী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
Published : 04 Apr 2023, 03:01 PM
বঙ্গবাজারের মাঝামাঝি জায়গার নিচে তলায় ভুঁইয়া ফ্যাশনের মালিক মোশাররফ কামাল ভুঁইয়ার দোকানে ঈদের আগে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকার পোশাক তোলা হয়েছিল। আগুন লাগার পর ধোঁয়ার কারণে দোকানে ঢুকতে না পারায় একটি পণ্যও বের করা যায়নি, ভয়াবহ আগুনে পুড়ে ছাই হয়েছে কামাল ভুঁইয়ার জীবিকার সম্বল।
কামালের বাড়ি চাঁদপুরের কচুয়া ঘাগরা গ্রামে, শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় ম্যানেজার জাহাঙ্গীর ও কয়েকজন স্টাফকে নিয়ে দোকান চালাতেন কামাল।
“দোকানের ১৫-২০ লাখ টাকার মালামাল শেষ, সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।”
কামাল ভূঁইয়ার মত আরও অনেকে ব্যবসায়ীর দোকান, গুদাম সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে ভয়াবহ এই আগুনে।
মঙ্গলবার ভোর ৬টা ১০ মিনিটে দেশের অন্যতম বড় কাপড়ের মার্কেট বঙ্গবাজারে আগুন লাগে। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিস মিনিট দুইয়ের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে গেলেও বাতাসের মধ্যে ঘিঞ্জি ওই মার্কেটের আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিটের চেষ্টায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও ততক্ষণে বঙ্গবাজার মার্কেট, মহানগর মার্কেট, আদর্শ মার্কেট ও গুলিস্তান মার্কেট পুরোপুরি ভষ্মীভূত হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় পাশের এনেক্সকো টাওয়ার এবং আরও কিছু ভবন।
ব্যবসায়ী কামাল বলেন, ভোরে ম্যানেজার তাকে জানায় বঙ্গবাজারের কোনো এক মার্কেটের উপরের কোথাও আগুন লেগেছে, ভেতরে ঢোকা যাচ্ছে না। কোনো মালামালই সরাতে পারেনি কর্মচারীরা।
বলতে বলতে ভেঙে পড়েন কামাল। বলেন, “অল্প পুঁজি দিয়ে শুরু করা এ দোকান ধীরে ধীরে বড় হচ্ছিল, আগুনে সব শেষ হয়ে গেলরে ভাই।”
তার মতো বঙ্গবাজারে আরও পাঁচ হাজারের মত দোকানিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানান কামাল।
ঈদ সামনে রেখে বঙ্গবাজার ও আশপাশের মার্কেটের সব দোকানেই প্রচুর নতুন পণ্য তোলা হয়েছিল। কীভাবে সেখানে আগুন লাগল তা এখনও স্পষ্ট নয়।
সকালে আগুন লাগার পর ব্যবসায়ী ও দোকানকর্মীদের কাউকে কাউকে মরিয়া হয়ে মালামাল সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে দেখা যায়। অসহায়ভাবে কাঁদছিলেন অনেকে।
বঙ্গবাজারের উল্টো দিকে বঙ্গ হোমিও কমপ্লেক্স মার্কেটের ফ্যাশন ওয়্যার হাউজের মালিক মোহাম্মদ শুক্কুর আলী বলেন, “মূল বঙ্গবাজারে ছয়টা মার্কেটে ছিল। এখন আর নেই, পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।“
বেলা ১ টার দিকে তিনি জানান, বঙ্গ হোমিও কমপ্লেক্স ও পাশে আরও তিনটা মার্কেটও অগ্নিকাণ্ডে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
“আমাদের মার্কেটের ছয় তলায় শার্টের কাপড়ের গুডাউন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পাশের মার্কেটের নিচ তলায় আমাদের শো রুম। যা ছিল তাও শেষ। এখানে ১২-১৩ লাখ টাকার মালামাল ছিল।”