“কোনো ফুলের বাগানে তো নানান রকম ফুলই থাকবে, নানান ফুলের কারণেই বাগানকে সমৃদ্ধ মনে হয়। এই উৎসবের মধ্য দিয়ে আমরা সেই বার্তা দিতে চাই, যে শত ফুল ফুটুক।”
Published : 14 Feb 2025, 02:13 PM
সম্প্রীতির ঐক্য আর বৈষম্যহীন সমতার বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানিয়ে রাজধানীতে উদযাপিত হচ্ছে ‘বসন্ত উৎসব-১৪৩১’।
‘এসো মিলি প্রাণের উৎসবে’ প্রতিপাদ্য নিয়ে শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় এই আয়োজনের সূচনা হয় সমবেত বাদ্যযন্ত্র পরিবেশনায়। পরিবেশন করে বেঙ্গল পরস্পরা সংগীতালয়।
প্রতি বছরের মতো এবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলাসহ নগরীর তিনটি স্থানে বসন্ত উৎসবের অনুষ্ঠান সাজায় ‘জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষৎ’।
তবে বাধার কারণে উত্তরার ৩ নম্বর সেক্টরের উন্মুক্ত মঞ্চের আয়োজনটি বাতিল করা হয় বলে জানান উৎসব সংশ্লিষ্টরা।
ঢাবি চারুকলা এবং পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কে সকাল থেকেই চলে বসন্ত উৎসবের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। নানান রঙে সেজে বসন্ত উৎসবে আসেন অনেকে।
ধানমন্ডি থেকে মেয়েকে নিয়ে এসেছিলেন সুরাইয়া তাবসসুম।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ও বসন্ত উৎসবে আসতাম। এবার মেয়েকে নিয়ে এসেছি। ভালো লাগছে।”
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নাচ, গান, আবৃত্তিতে মুখরিত হয় অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণ। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীদের পাশাপাশি অন্যান্য নৃ-গোষ্ঠীর পরিবেশনাও দর্শকদের মুগ্ধ করে। সাংস্কৃতিক পরিবেশনার পাশাপাশি ছিল বসন্ত কথন এবং আবির বিনিময় পর্বও।
জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষৎ-এর সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রকৃতির মাঝে যে সাম্যের বার্তা, তা ছড়িয়ে দিতেই আমরা এই উৎসব আয়োজন করি।
“কোনো ফুলের বাগানে তো নানান রকম ফুলই থাকবে, নানান ফুলের কারণেই বাগানকে সমৃদ্ধ মনে হয়। এই উৎসবের মধ্য দিয়ে আমরা সেই বার্তা দিতে চাই, যে শত ফুল ফুটুক। বাংলাদেশ হোক সম্প্রীতির এবং বৈষম্যহীন সমতার বাংলাদেশ।”
মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে বাংলাদেশ অর্জিত হয়েছে, সেই মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা পরবর্তী সময়ে পূরণ হয়নি বলে মন্তব্য করেন সন্ত উৎসব উদযাপন পরিষৎ-এর সহসভাপতি কাজল দেবনাথ।
তিনি বলেন, “ফুল তো বিশেষ কারো জন্য ফোটে না। ফুল সবার জন্যই ফোটে। এটাই সাম্যবাদের বার্তা। প্রকৃতি আমাদেরকে বৈষম্যহীন বার্তা দেয়। বসন্তকে বলা হয় ঋতুরাজ। বসন্ত উৎসবের মধ্যদিয়ে সাম্যের বার্তা ছড়াক।
“মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার বয়স ছিল ২১ বছর, আজকে যারা বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে আমাদেরকে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখাচ্ছে, তারাও তরুণ। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা সাম্যের সমাজ গড়তে চেয়েছি, তা পূরণ হয়নি। এই অভ্যুথানের মধ্য দিয়ে আমরা আবার বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। তা যেন পূরণ হয়। এটাই বসন্ত উৎসব থেকে আমাদের প্রত্যাশা।”
উত্তরায় বসন্ত উৎসব করতে না পারার প্রতিক্রিয়ায় কাজল দেবনাথ বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা হলো।
অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন নায়লা তারামননুম চৌধুরী কাকলি ও আহসান দিপু।
বাধার মুখে বাতিল উত্তরার বসন্ত উৎসব
ফাগুন হাওয়ায় এল ভালোবাসার দিন