প্রতিটি ছাগলের চামড়ার গায়ে লেগে থাকা অল্প কিছু মাংস বেশ যত্ন করে ছুরি দিয়ে আলাদা করতে দেখা গেল এই তরুণকে।
Published : 17 Jun 2024, 11:56 PM
গত কয়েক বছরের কোরবানির ঈদের মত এবারও খাসির চামড়ার বিক্রি করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে।
সোমবার বিকালে ঢাকায় চামড়ার পাইকারি আড়ত পোস্তায় গিয়ে দেখা গেছে, যারা খাসির চামড়া নিয়ে গেছেন, তাদেরকে হতাশ হতে হয়েছে।
ছাগলের চামড়া কিনছে, এমন আড়তের খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে একজনকে দেখা গেছে ১০ টাকা দরে চামড়া সংগ্রহ করতে।
গত বছর একই দাম ছিল বলে জানালেন মো. সোহেল নামে এক ব্যবসায়ী। সন্ধ্যা সাতটার দিকে তিনি বলেন, “আমি ৪০৯ এর মত নিছি।”
গুলশানে অখিল চন্দ্র দাস নামে একজন ৫ টাকা করে কিনেছেন। পরে ২৫টি চামড়া বিক্রি করেছেন ১০০ টাকায়। তবে তারপরও বেশ ভালোই মুনাফা হয়েছে।
১৭৫ টাকায় চামড়া কিনে ১০০ টাকায় বেচে মুনাফা করার পেছনে আছে অখিলের অন্য পরিশ্রম।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “ছাগলের চামড়ার তো কোনো মূল্যই নাই। কেউ নেয় না। রাস্তায় ফেলে দেওয়ার মত অবস্থা। আমরা ৫ টাকা করে কিছু কিনছি মাংসের জন্য।
“ছাগলের চামড়ায় যে মাংস আছে সেগুলো ছাড়িয়ে আবার আমরা চামড়া বিক্রি করার চেষ্টা করি।”
অখিলকে প্রতিটি ছাগলের চামড়ার গায়ে লেগে থাকা অল্প কিছু মাংস বেশ যত্ন করে ছুরি দিয়ে আলাদা করতে দেখা গেল।
ছাগলের মাংসের দাম এখন কেজিতে হাজার টাকার বেশি। সামান্য এই মাংসই সেই হিসেবে অখিলকে মুনাফার মুখ দেখাতে সাহায্য করে।
চামড়ার এই দর সরকারের ঘোষণা করা দরের তুলনায় অনেক কম। এবার ট্যানারিতে প্রতি বর্গফুট ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা দরে খাসির চামড়া বিক্রির ঘোষণা এসেছে, গত বছর যা ছিল ছিল ১৮ টাকা থেকে ২০ টাকা।
বকরির চামড়ার দাম এবার ঘোষণা হয়েছে প্রতি বর্গফুট ১৮ টাকা থেকে ২০ টাকা, যা আগের বছর ছিল ১২ থেকে ১৪ টাকা।
একটি খাসিতে যদি ৫ থেকে ৬ বর্গফুট চামড়া হয়, তাহলে লবণ দেওয়ার পর দাম পাওয়া যাবে ১০০ থেকে দেড়শ টাকা।
এটা ঠিক আড়তে বর্গফুটের হিসাবে চামড়া কেনা হয় না, আর কাঁচা চামড়া কেনার পর তাতে লবণ দেওয়া ও সংরক্ষণের খরচ আছে, তার পরেও ১০ টাকা দাম অনেক কম বলেই মনে করছেন বিক্রি করতে আসা বিক্রেতারা।
তবে পোস্তার ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন বলেছেন, পোষায় না বলে এই চামড়া কেনেন তা তারা।
“আগে ছাগলের চামড়া কিনতাম, অহন গরুর চামড়া কিনি”, বলেন তিনি।
তিনি বলেন, “সরকার পোস্তারে খালি কইরা দিচে। সব নিয়া নিচে হেমায়েতপুর। ছাগলের কোনো আড়ত পোস্তায় নাই। আগে ট্যানারি আছিল হাজারীবাগ, এহন গেচেগা সাভার। ব্যবসাটা আসলে তারাই করতেচে।”
দেলোয়ারের মতো ৬ বছর ব্যবসা করেছেন শরীফ আহমেদ। তিনি ট্যানারি মালিকদের আচরণে বিরক্ত হয়ে ব্যবসা ছেড়েছেন। বললেন, “বাকি নিয়া ট্যানারিরা ট্যাকা দেয় না। পিছন পিছন ঘুরতে হয়।
“হেরা কয় বিদেশে নাকি কন্ট্রাক্ট নাই, মাল যায় না। আমি তো নগদে মানুষের থেইক্যা মাল কিনছি। আমি ট্যাকার লাইগ্যা ঘুরুম ক্যান?”