এই হামলাকারীদের সঙ্গে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
Published : 17 Sep 2024, 04:42 PM
অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করার অপচেষ্টা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে মাজার ও দরগায় হামলা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন কবি ও তাত্ত্বিক ফরহাদ মজহার।
এই হামলাকারীদের সঙ্গে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
ফরহাদ মজহার বলেন, “গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে যে নতুন বাংলাদেশ যাত্রা শুরু করেছে, সে যাত্রা ভেঙে দেওয়ার অপচেষ্টা হিসেবে এই মাজারগুলোতে হামলা চালানো হচ্ছে।"
দেশের বিভিন্ন স্থানে একের পর একে মাজার ও দরগায় হামলার প্রতিবাদে ঢাকায় গণপ্রতিরোধ যাত্রায় অংশ নিয়ে ফরহাদ মজহার এ কথা বলেন।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ‘সারাদেশে মাজারে-দরবারে ফ্যাসিবাদী হামলার প্রতিবাদে গণপ্রতিরোধ কর্মসূচি’ ব্যানারে ঢাকার হাই কোর্ট মাজার গেইটের সামনে থেকে এই যাত্রা শুরু হয়।
এই যাত্রায় ফরহাদ মজহার, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, লেখক ও সাংবাদিক সালাহউদ্দিন শুভ্র, শিল্পী অরুপ রাহীসহ আরো অনেক কবি, লেখক, রাজনীতিকসহ সুফি ঘরানার মানুষরাও অংশ নেয়।
এ সময় তারা ‘জ্ঞানের আলো, ঘরে-ঘরে জ্বালো’, ‘বোধের আলো, ঘরে-ঘরে জ্বালো’, ‘দেশটা কারো বাপের না, মাজার ভাঙা চলবে না’ বলে স্লোগান দেন।
প্রতিরোধ যাত্রার আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মজহার বলেন, “এই দেশে যে ইসলাম এসেছে এটা বাংলাদেশের ইসলাম। এটাকে আরবের ইসলাম বানাবার চেষ্টা করবেন না। এটাকে ইরান, টার্কির ইসলাম বানানোর চেষ্টা করবেন না। বাংলার ইতিহাস, একইসঙ্গে ইসলামেরও ইতিহাস।
“আপনারা এতদিন পর্যন্ত বাঙালি মুসলমান বলে অস্বীকার করেছিলেন, এখন তাদেরকে বাঙালি বলে অস্বীকার করা শুরু করেছেন। দুটোই একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। দুরকম শত্রুর বিরুদ্ধে কী করে লড়াই করতে হয়, আমাদের তরুণরা কিন্তু দেখিয়ে দিয়েছে।“
জোনায়েদ সাকি বলেন, “ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যে বাংলাদেশ আমরা পেয়েছি, সেই বাংলাদেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের একটি চক্র এ হামলায় ইন্ধন জোগাচ্ছে। এটি তাদেরই একটি চক্রান্ত।”
গণপ্রতিরোধ যাত্রাটি পল্টন, প্রেস ক্লাব, গোলাপ শাহ মাজার হয়ে সচিবালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
সেখান থেকে একটি প্রতিনিধিদল সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি জমা দেন।
স্মারকলিপিতে তারা সাম্প্রতিক সময়ে মাজারে হামলার ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তোলা হয়েছে। এছাড়া এ ধরনের হামলা বন্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সজাগ থাকার কথাও বলা হয়েছে।
এর আগে সারাদেশে মাজারে হামলা ঠেকাতে ডিসিদের ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
এছাড়া মাজার, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্থাপনায় হামলা রুখতে অন্তর্বর্তী সরকার ‘কঠোর অবস্থান নিয়েছে’ বলে সতর্ক করেছে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের দপ্তর। শনিবার দপ্তরের এক বার্তায় এ ধরনের স্থাপনায় হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
এ ধরনের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বিচার দাবি করেছেন দেশের ৪৬ নাগরিক।