তার প্রশ্ন, নির্ধারিত সময়ের পর উদীচী যে অনুষ্ঠান করেছে সেখানে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায়দায়িত্ব কে নিত?
Published : 15 Apr 2024, 06:29 PM
বাংলা নববর্ষ উদযাপনে সরকারের নির্দেশনা উপেক্ষা করে উদীচীর অনুষ্ঠান করা ও ‘বিবৃতি দেওয়াকে’ অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক বলেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। প্রশ্ন রেখেছেন, উদীচী যে অনুষ্ঠান করেছে সেখানে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায়দায়িত্ব কে নিত?
বর্ষবরণের পরদিন সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের কাছে এই প্রতিক্রিয়া দেন তিনি। সংগঠনটির বিবৃতিকে তিনি নেতিবাচক হিসেবেও মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “আমরা মনে করি নিয়ম বা নির্দেশনা মেনে অনুষ্ঠান যারা করবেন, তাদেরকেই সেই দায়দায়িত্ব নিতে হবে।”
তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, “সরকারের নিরাপত্তা বিষয়ক সংস্থা পহেলা বৈশাখের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য যে নির্দেশনা জারি করেছিল, সেই নির্দেশনা উপেক্ষা করে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর অনুষ্ঠান করা ছিল হঠকারী ও দুঃখজনক। তাদের এই আচরণে সরকার খুবই ব্যথিত ও মর্মাহত।”
গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও বর্ষবরণের আয়োজন সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছিল সরকার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসে সব আয়োজন বিকাল ৫টার মধ্যে শেষ করতে বলেছিল।
তবে উদীচী সেই নির্দেশনা মানেনি। তারা সন্ধ্যা ৬টা থেকে শাহবাগে ‘বর্ষবরণ মানে না শৃঙ্খল' শিরোনামে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করে।
উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে এক বিবৃতিতে বলেন, “উদীচী মনে করে, এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপনে ‘হঠকারী’ সিদ্ধান্ত প্রকৃতপক্ষে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির কাছে নির্জলা আত্মসমর্পণ ছাড়া কিছুই নয়। এর মাধ্যমে পক্ষান্তরে আবহমান বাংলার সংস্কৃতিবিরোধী অন্ধকারের শক্তিকেই আশকারা দেওয়া হচ্ছে। এ ধরনের অযাচিত সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মত নয়।"
তথ্য প্রতিমন্ত্রী ২০০১ সালে রমনা বটমূলসহ নানা সময় উগ্রবাদীদের হামলার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “পহেলা বৈশাখে রমনা বটমূলে এবং যশোরের উদীচীর অনুষ্ঠানে বোমা হামলায় অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং অনেকে পঙ্গু হয়েছে। হোলি আর্টিজান, শোলাকিয়া ময়দান ও সিলেটে ঈদের জামাতের জঙ্গি হামলা প্রতিরোধ করতে গিয়ে পুলিশের কয়েকজন সদস্য জীবন উৎসর্গ করেছেন এবং জনগণের জীবন বাঁচিয়েছেন।
“প্রতিটি অনুষ্ঠানে সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে সবসময় সতর্ক থাকায় নিকট অতীতে বাংলাদেশে কোনো জঙ্গি হামলা বা সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটতে পারেনি। এই বিষয়ে সরকার সকলের সহযোগিতা কামনা করে।”
নিরাপত্তা দেওয়া সরকারের কর্তব্য জানিয়ে তিনি বলেন, “আশা করব এক্ষেত্রে সবাই সবসময় সহযোগিতা করবেন, যাতে আনন্দের অনুষ্ঠান বিষাদে পরিণত না হয়ে যায়।”
‘বর্ষবরণ মানে না শৃঙ্খল' আয়োজন করল উদীচী
রমনায় বোমা হামলা: ২৩ বছরেও শেষ হয়নি বিস্ফোরক মামলার বিচার
১৯৯৩ সালে বাংলা ১৪০০ সাল বরণ করার আয়োজনে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি সরকার বাধা দিয়েছিল জানিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্যোগে যথাযথভাবে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করা হয়।
“প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার পহেলা বৈশাখ উদযাপনের জন্য বাংলা নববর্ষ ভাতার ব্যবস্থাও করেছে। তার সরকারের সময়ে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা ইউনেস্কো ২০১৬ সালে বাংলাদেশের ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’কে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায়ও অন্তর্ভুক্ত করে।”