চলতি বছরে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯২ হাজার ৫৯৫ জন; গত বছর এই সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৮২ জন।
Published : 26 Nov 2023, 03:17 PM
মহামারীর পর প্রথমবার পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ে হওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা গত বছরের তুলনায় কমে প্রায় অর্ধেক হয়েছে।
চলতি বছরে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯২ হাজার ৫৯৫ জন; গত বছর এই সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৮২ জন।
অর্থাৎ, জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে হাজার ৮৩ হাজার ৬৮৭ জন।
এবারে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১৩ লাখ ৫৭ হাজার ৯১৫ জন শিক্ষার্থী এবার পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে পাস করেছেন ১০ লাখ ৬৭ হাজার ৮৫২ জন। সার্বিক পাসের হার ৭৮.৬৪ শতাংশ।
এর আগে ২০২২ সালের এইচএসসি পরীক্ষা কোভিড মহামারী আর বন্যার কারণে বিলম্বিত হয়েছিল। বিষয়, নম্বর ও সময় কমিয়ে আনা সেই পরীক্ষায় ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করে।
এই হিসাবে ২০২৩ সালের পরীক্ষায় পাসের হার কমেছে ৭ দশমিক ৩১ শতাংশ পয়েন্ট।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি রোববার সকালে সব শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠান সরকারপ্রধানের হাতে ২০২৩ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফলের সারসংক্ষেপ হাতে তুলে দেন।
পরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সংবাদ সম্মেলন করে এবারের ফলাফলের বিস্তারিত তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
গত চার বছরের চিত্র
মহামারী শুরুর আগে ২০১৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষায় সার্বিকভাবে পাস করে ৭৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে মোট ৪৭ হাজার ২৮৬ জন শিক্ষার্থী পাঁচে পাঁচ জিপিএ পায়।
২০২০ সালে দেশে মহামারীর প্রকোপে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া যায়নি। জেএসসি ও এসএসসির ফলের ভিত্তিতে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে তাদের মূল্যায়ন ফল প্রকাশ করা হয়। তাতে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা সবাই পাস করে, জিপিএ-৫ পান এক লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ জন।
কোভিড মহামারীর দ্বিতীয় বছর ২০২১ সালের এইচএসসি পরীক্ষাও বিলম্বিত হয় মহামারীর কারণের। স্বাভাবিক সময়ে এপ্রিলে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও ২০২১ সালে এই পরীক্ষা শুরু হয় ডিসেম্বরে। সেবার সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে ছয়টি পত্রে এইচএসসি পরীক্ষা হয়। সময় কমিয়ে আনা হয় দেড় ঘণ্টায়।
তাতে ৯৫ দশমিক ২৬ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করে। জিপিএ-৫ পায় এক লাখ ১ লাখ ৮৯ হাজার ১৬৯ জন।
গত বছর বিশেষ পরিস্থিতিতে ২০২২ সালের পরীক্ষা এগিয়ে আনার পরিকল্পনা থাকলেও বন্যার কারণে তা আবার পিছিয়ে শুরু হয় ৬ নভেম্বর থেকে, সেই ফল দেওয়া হয় এ বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি। সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে হওয়া সেই পরীক্ষায় ৮৫ দশমিক ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করে। জিপিএ-৫ পায় ১ লাখ ৭৬ হাজার ২৮২ জন।
তিন বছর পর ২০২৩ সালে এসে পূর্ণ নম্বর ও পূর্ণ সময়ে পরীক্ষা দেন শিক্ষার্থীরা। কেবল তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে ১০০ এর পরিবর্তে পরীক্ষা হয় ৭৫ নম্বরে।
এমনিতে প্রতিবছর সব বোর্ডের পরীক্ষা একসঙ্গে হলেও এবার প্রবল বৃষ্টি আর ঢলের কারণে তিন বোর্ডের পরীক্ষা শুরু হয় দেরিতে। তবে ফল প্রকাশ করা হয়েছে একসঙ্গেই।