“এখানে স্বজন হারানোর বেদনা যেমন আছে, তেমনি আছে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বপ্ন হারানোর হাহাকার।”
Published : 24 Mar 2025, 08:31 AM
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সেই রুদ্ধ দিনগুলোতে কবি আবুল হাসান ছিলেন ঢাকাতেই, তবে তাকে বারবার জায়গা বদল করতে হয়েছে। একবার তিনি সদরঘাটে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে নিগৃহীতও হয়েছিলেন।
যুদ্ধদিনের অভিজ্ঞতা এবং পরবর্তী বাংলাদেশের বেদনার কথা তিনি লিখেছেন ‘উচ্চারণগুলি শোকের’ কবিতায়। যেখানে মুক্তিযুদ্ধে হারানো স্বজনদের কথা এসেছে চিরকালীন এক অমোঘ বেদনার চিত্রকল্পে।
কবি লিখেছেন-
লক্ষ্মী বউটিকে
আমি আজ আর কোথাও দেখিনা,
হাটি হাটি শিশুটিকে কোথাও দেখিনা,
কতগুলি রাজহাঁস দেখি
নরম শরীর ভরা রাজহাঁস দেখি,
কতগুলি মুখস্ত মানুষ দেখি, বউটিকে কোথাও দেখিনা
শিশুটিকে কোথাও দেখিনা।এই না দেখার মধ্য দিয়ে কবি যে চিত্রকল্প এঁকে দেন পাঠকের মনে, তা চিরকালীন অপার বেদনার কাব্য হয়ে ওঠে। যার কারণে সকল সময়ের সামষ্টিক জীবনের সংকটে কবিতাটি অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক বলে মনে করেন এ প্রজন্মের কবি, সাহিত্যিক এবং আবৃত্তিশিল্পীরাও।
“মুক্তিযুদ্ধের কবিতায় আমরা সচরাচর যেমনটা দেখি, এটি তেমন নয়। আবুল হাসানের শক্তির জায়গা হলো, তিনি শৈল্পিক মান ক্ষুণ্ণ না করেই সমকালীন অনেক ঘটনাকেও চিরকালীন একটা ভাষায় চিত্রিত করতে পেরেছেন। মুক্তিযুদ্ধে বিপুল মানুষের আত্মত্যাগ আবুল হাসানের মনে যে অভিঘাত তৈরি করেছিল, তারই প্রকাশ এই কবিতা,” ‘উচ্চরণগুলি শোকের’ কবিতাটিকে সংক্ষেপে এভাবেই মূল্যায়ন করেন কবি পিয়াস মজিদ।
লেখা আছে অশ্রুজলে বলা হয়ে থাকে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কালোত্তীর্ণ সাহিত্য খুব একটা হয়নি। তবে যা হয়েছে, তা-ও নেহায়েত কম নয়। যুদ্ধকালীন এবং যুদ্ধোত্তর সময়ে রচিত সেই সব কবিতা, গল্প, উপন্যাস ও নাটকের কয়েকটি নিয়ে এই বিশেষ আয়োজন। পঞ্চম পর্ব কবি আবুল হাসানের ‘উচ্চারণগুলি শোকের’ কবিতা নিয়ে। |
প্রথম পর্ব: পাড়াতলী থেকে কোটি প্রাণে মুক্তি আকাঙ্ক্ষা ছড়িয়েছিল ‘স্বাধীনতা তুমি’
দ্বিতীয় পর্ব: চিরকালীন মুক্তিসংগ্রামের গল্প 'সময়ের প্রয়োজনে'
তৃতীয় পর্ব: জীবনের বাস্তবতাই মূলত 'রাজনৈতিক বাস্তবতা'
চতুর্থ পর্ব: 'পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়'- মুক্তির পদধ্বনি
মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে বিধ্বস্ত-বিকলাঙ্গ সমাজ, রাজনৈতিক অবক্ষয় এবং রাষ্ট্রব্যবস্থা অবলোকন করে একজন নগর-সচেতন কবির সাহসী উচ্চারণ ‘রাজা যায় রাজা আসে’ কাব্যগ্রন্থ।
আবৃত্তিশিল্পী আশরাফুল হাসান বাবু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই গ্রন্থের কবিতার অন্তর্গত গতি ও প্রকৃতি তুলে ধরে আমাদের পরম্পরাময় সংগ্রামে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধ এবং যুদ্ধপরবর্তী দেশে মানুষের আত্মকেন্দ্রিকতা সবই কবি দেখেছেন, উপলব্ধি করেছেন, আর আহত হৃদয়ের সেই অনুভূতিই ‘উচ্চারণগুলি শোকের’ কবিতায় তুলে ধরেছেন।”
কবে লেখা?
খুব বেশি দিন বাঁচেননি আবুল হাসান। ১৯৭৫ সালের নভেম্বরে মাত্র ২৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। এই স্বল্পায়ু জীবনে তার তিনটি কবিতার বই প্রকাশ পায়। যার মধ্যে ১৯৭২ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত হয় আবুল হাসানের প্রথম কবিতার বই ‘রাজা যায় রাজা আসে’। বইটি প্রকাশ করেছিল খান ব্রাদার্স অ্যান্ড কোম্পানি।
বইটিতে আবুল হাসানের ‘উচ্চারণগুলি শোকের’ কবিতাটি প্রথম সংকলিত হয়েছে বলে জানান কবি ও কথাসাহিত্যিক মোশতাক আহমদ।
তবে কবিতাটি ঠিক কত তারিখে লেখা হয়েছে, তা এখনও উদ্ঘাটন করতে না পারার অপারগতা স্বীকার করলেন আবুল হাসানের জীবনভিত্তিক উপন্যাসের রচিয়তা মোশতাক আহমদ।
আবুল হাসানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু নাট্যজন মামুনুর রশীদ বলেন, “কবিরা অনেক কিছুই তাৎক্ষণিক প্রকাশ করেন না, তা লালন করেন এবং ধারণ করেন। সেটা নিয়ে ভাবেন এবং পরবর্তীকালে তিনি তা থেকে কবিতা লেখেন। আবুল হাসান মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতাগুলো পরবর্তীতে কাব্যগ্রন্থে তুলে ধরেছেন। মুক্তিযুদ্ধের পর পরই ‘রাজা যায় রাজা আসে’ প্রকাশ হয় এবং ‘পৃথক পালঙ্ক’ নামেও আরেকটি বই প্রকাশ হয় কাছাকাছি সময়ে।”
আবুল হাসানের জীবনীভিত্তিক উপন্যাস ‘ঝিনুক নিরবে সহো’ লিখেছেন মোশতাক আহমদ। এছাড়া ‘আবুল হাসান ও ঝিনুকের সন্ধান’ নামে আরেকটি নন-ফিকশন বইও লিখেছেন তিনি।
মোশতাক আহমদ বলেন, “‘উচ্চারণগুলি শোকের’ কবিতাটি সম্ভবত ১৯৭২ সালের যুদ্ধোত্তর দিনেই লেখা হয়। এই কবিতায় মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী অভিজ্ঞতা এবং বিষাদ ছায়া ফেলেছে। এই সময়টাতে কবির ব্যক্তিগত জীবন, সাংবাদিক জীবন ও কবিজীবনকে ফিরে দেখলে এই কবিতাটি আমরা হয়তো বুঝতে পারব। কবিতাটি যত আবৃত্তি হয়েছে, কবিতাটি নিয়ে তত আলোচনা হয়নি।”
কবিতাটি কবে লেখা হয়েছে, তা বলতে পারেননি আবুল হাসানের ভগ্নিপতি হাফিজুর রহমানও।
“এই কবিতাটি মুক্তিযুদ্ধের পরপরই লিখেছিলেন বলে মনে হয়। তবে ঠিক কোন তারিখে লিখেছিলেন, তা এখন মনে করতে পারছি না।”
একরোখা কবি
আবুল হাসানের সঙ্গে কাটানো সময়ের স্মৃতিচারণ করে মামুনুর রশীদ বলেন, “আবুল হাসান, নির্মলেন্দু গুণ এবং আমি- অনেক সময় কাটিয়েছি একসঙ্গে। হাসান একটু একরোখা টাইপ ছিল। কেউ কেউ তো চাকরি-বাকরি নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপন করেন। কিন্তু সে তা করেনি। নির্মলেন্দু গুণও সেটা করেনি। বৈষয়িক জীবনযাপন তারা করেনি।
“মুক্তিযুদ্ধের পর আমরা ছিটকে পড়লাম। এর আগে আমরা একসঙ্গেই থাকতাম। আমি ওদের কবিতা লেখার সাক্ষী। সারারাত ধরে নির্মল কবিতা লিখছে, হাসান কবিতা লিখছে। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে চলে গেলাম। সেখানে নির্মলেন্দু গুণের সঙ্গে দেখা হলো। কিন্তু হাসানের সঙ্গে তখন আর দেখা হয়নি।”
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে হাসানের সঙ্গে আবার দেখা হয় জানিয়ে এই নাট্যজন বলেন, “হাসান বই বের করল, ‘রাজা যায় রাজা আসে’ এবং ‘পৃথক পালঙ্ক’। আবুল হাসান যে অনেক কবিতা লিখেছে তা নয়, তবে অল্পতেই সে দুর্দান্ত কিছু লিখেছে। সে ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র ছিল। ওর মধ্যে একটা ‘রোমান্টিক পোয়েট্রিস’ ব্যাপার আছে। জীবনানন্দ দাশেরও ছিল। কবিতা লিখতে গিয়ে জীবনের অনেক গভীরে ঢুকে গেছেন। জীবনানন্দ দাশ আর আবুল হাসান- দুজনের বাড়িই কিন্তু বরিশাল।”
মুক্তিযুদ্ধ, গভীর বিষাদের ছায়া
কবি ও কথাসাহিত্যিক মোশতাক আহমদ বলছিলেন, “মুক্তিযুদ্ধ হাসানের মনে এক গভীর বিষাদের ছায়া ফেলে। একাত্তরের ২৫ মার্চ তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের বিছানায় শুয়ে শুয়ে কালরাতের সেই প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ শুনে খুব অসহায় বোধ করতে থাকেন। সে রাতে তিনি মা, বাবা, ভাই, বোন আর কবিবন্ধুদের নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন।
“পরে খবর পান বন্ধু নির্মলেন্দু গুণ, আবিদ আজাদ বা হেলাল হাফিজ বেঁচে গেলেও অধ্যাপক জিসি দেব আর নাই, জ্যোতিপ্রকাশ দত্তের বদৌলতে যার লাইব্রেরি তিনি ব্যবহার করেছেন। জিসি দেবকে নৃশংসভাবে জগন্নাথ হলে হত্যা করা হয়েছিল। কবি আবুল কাশেমের ভাসমান মৃতদেহ পাওয়া গেল ইকবাল হলের পুকুরে। পরে ‘কবির ভাসমান মৃতদেহ’ নামে হাসান একটি কবিতা লিখেছিলেন।”
মুক্তিযুদ্ধের সময় আবুল হাসান সবার কবিতা অনুসরণ করতেন জানিয়ে মোশতাক আহমদ বলেন, “রণাঙ্গনে যারা কবিতা লিখেছিলেন, তাদের অনেকেই প্রতিষ্ঠিত কবি ছিলেন না। কিন্তু তাদের কবিতায় যুদ্ধের ভয়াবহতা, গ্রেনেড, স্টেনগান কিংবা বাংকারের অনুষঙ্গ এসেছে। আবুল হাসান স্বাধীন বাংলা বেতারে এইসব কবিতা শুনেছেন, কিছু পত্রিকা নানা চোখ ফাঁকি দিয়ে ঢাকাতেও চলে আসত।”
“রণাঙ্গনের কবিতা আবুল হাসানকেও তাড়া করত,” বলেন মোশতাক আহমদ।
“স্বাধীনতার পর সবাই নানা কাজ খুঁজে নিচ্ছিল, নতুন জীবনে অভ্যস্ত হয়ে উঠছিল। কিন্তু আবুল হাসান এক গভীর বিষাদের সাথে লক্ষ্য করলেন, তাকে তাড়া করছে নাম না জানা হাজারো শহীদ যুবক, তরুণী, মা ও শিশু। যারা যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন, তাদেরকে তো আমরা আক্ষরিক অর্থে কখনও পাব না, কিন্তু হাসান দেখলেন আমাদের নাগরিক চর্চা, স্মরণসভা, আড্ডা কিংবা লেখালেখির পরিসরে তাদেরকে কেউ সেভাবে ধারণ করতে পারছে না বা করছে না। তিনি কবিতায় সে কথা তুলে আনলেন।”
কবিতাটির বিশেষত্ব কোথায়?
কবি পিয়াস মজিদের ভাষ্য, এই কবিতাটি স্লোগানধর্মী নয়। কিছু কবিতার ক্ষেত্রে যেমন একটা লাইন বা দুটো লাইন বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এই কবিতায় কিন্তু তা নয়। এখানে পুরো কবিতাটা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ‘উচ্চারণগুলি শোকের’ কবিতা বুঝতে হলে পুরো কবিতাটিই পড়তে হবে। এটা একটা সামগ্রিক কবিতা। কোনো একটা লাইন দিয়ে এই কবিতাকে ব্যাখ্যা করা যাবে না।
“মুক্তিযুদ্ধে যাদেরকে হারিয়েছি, তাদেরকে হারানোর যে বেদনা- তা এই কবিতায় অত্যন্ত শৈল্পিকভাবে এসেছে। এই কবিতাকে শুধু মুক্তিযুদ্ধের কবিতা হিসেবে বিচার না করে আরও বড় পরিসরেও বিবেচনা করা যায়। জাতির সামষ্টিক যে সংকট, সেখানেও কবিতাটি প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে। এই কবিতার আরেকটা বৈশিষ্ট্য হলো সহজে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করতে পারা। যে কোনো পাঠকই এই কবিতার সাথে সহজে যোগাযোগ করতে পারেন।”
জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মোহন রায়হান বলেন, “আবুল হাসানের কবিতা আমার কাছে প্রথমত প্রেম ও প্রকৃতির। তবে আবুল হাসানের কবিতায় দেশ, জনগণের অধিকার, লড়াই-সংগ্রামও উঠে এসেছে।
“বাঙালির শ্রেষ্ঠতম অর্জন মুক্তিযুদ্ধ। আবুল হাসান ‘উচ্চারণগুলি শোকের’ কবিতায় মুক্তিযুদ্ধকে এক অন্যরকম প্রতীকে তুলে ধরেছেন। মুক্তিযুদ্ধে যাদের হারিয়েছি, তাদের গভীরভাবে স্মরণ করা হয়েছে এই কবিতায়। যাদের জীবনের বিনিময়ে আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি, পতাকা পেয়েছি। ওই স্বাধীন পতাকা আমার ভাই। ওই স্বাধীনতার উৎসবের বেদীই আমার বোন। এটাই কাব্যিকতা এবং শৈল্পিকভাবে আবুল হাসান তুলে এনেছেন ‘উচ্চারণগুলি শোকের’ কবিতায়।”
আবুল হাসান লিখেছেন-
তবে কি শিশুটি আজ
সবুজ মাঠের সূর্য, সবুজ আকাশ?
কবিতার শেষে লিখেছেন-
তবে কি আমার ভাই আজ
ঐ স্বাধীন পাতাকা?
তবে কি আমার বোন, তিমিরের বেদীতে উৎসব?”
আবৃত্তিশিল্পী আশরাফুল হাসান বলেন, “এত কিছু হারিয়ে, এত যুদ্ধ, রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে বাস্তবতার নিরিখে তিনি কোথাও কোনো শুভ সময়ের ছাপ দেখতে পাননি, তাই যেন মনে হয়েছে- স্বাধীনতা কেবল পতাকা অর্জন নয়, কেবল দিবসগুলোতে উৎসবের আয়োজন নয়। চাই মানুষের অধিকার, মানবের মুক্তি।
“কবি আবুল হাসান একাত্তরে স্বাধীনতা অর্জনের এক বছরের মধ্যেই স্বদেশের যে স্বপ্ন হারানোর বেদনা দেখেছেন, তা আজও প্রবহমান। এ দেশে স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরোলেও আজও মানুষের অধিকার আদায়ের লড়াই চলমান।”
ক্ষণজন্মা আবুল হাসানের কবিতায় তীব্র নিঃসঙ্গতাবোধ আছে বলেও মনে করেন আশরাফুল হাসান।
‘উচ্চারণগুলি শোকের’ কবিতাটিও এর ব্যতিক্রম নয় বলে মন্তব্য করে বলেন, “এখানে স্বজন হারানোর বেদনা যেমন আছে, তেমনি আছে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বপ্ন হারানোর হাহাকার। তিনি বোধহয় জন্মেছিলেনই মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা নিয়ে। তাই তো তিনি বলেছিলেন, ‘মৃত্যু আমাকে নেবে, জাতিসংঘ আমাকে নেবে না...’। ‘পৃথিবীতে তবু আমার মতোন কেউ রাত জেগে/নুলো ভিখিরীর গান, দারিদ্রের এত অভিমান দেখলো না’।”