“বেশি বাড়াবাড়ি করলে যমুনা সেতু ব্লকড হয়ে যাবে,” বলেন সমন্বয়ক মাহিন।
Published : 12 Nov 2024, 08:10 PM
অন্তর্বর্তী সরকারে উত্তরাঞ্চলের দুই বিভাগ থেকে দুজন করে মোট চারজন উপদেষ্টা নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন একদল শিক্ষার্থী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে মঙ্গলবার বিক্ষোভ-সমাবেশ থেকে তারা এই দাবি তুলে ধরেন।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, “১৯৭১ সালের প্রথম শহীদ উত্তরবঙ্গের সন্তান। ২০২৪ সালের বিপ্লবের প্রথম শহীদ উত্তরবঙ্গের আবু সাঈদ।
“ফ্যাসিবাদের হাতকে শক্তিশালী করার জন্য সর্বোচ্চ শক্তি ব্যবহার করেছে যারা, তাদেরকে উপদেষ্টা বানানো হচ্ছে। অথচ উত্তরবঙ্গের ১৬টি জেলার গণমানুষের প্রশ্ন- কেন উত্তরবঙ্গ থেকে কোনো উপদেষ্টা নেই?”
মাহিন বলেন, “সচিবালয়ে উত্তরবঙ্গের ১৬টি জেলা থেকে মাত্র দুইজন সচিব। উত্তরবঙ্গের মানুষ কি শুধু রিকশাচালক আর কৃষক হবে? তারা কি নীতি নির্ধারণের জায়গায় কখনও যেতে পারে না?”
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে উত্তরবঙ্গ থেকে দ্রুত উপদেষ্টা নিয়োগ না দিলে বঙ্গবন্ধু সেতু অবরোধের হুঁশিয়ারিও দেন মাহিন।
তার ভাষ্য, “বেশি বাড়াবাড়ি করলে যমুনা সেতু ব্লকড হয়ে যাবে।”
ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনে গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গণ আন্দোলনের আকাঙ্ক্ষা পূরণের প্রতিশ্রুতি নিয়ে ৮ অগাস্ট গঠিত হয় মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। প্রথম দফায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ১৬ জন এবং পরে সম্প্রসারণ করে আরও চারজন উপদেষ্টা পরিষদে যুক্ত হন। আর দ্বিতীয় দফায় নতুন তিনজনকে নিয়ে প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টার সংখ্যা হল ২৪ জন।
গণআন্দোলনে উত্তরবঙ্গের আখতার হোসেন আর সারজিস আলমদের ভূমিকার মূল্য কেন দেওয়া হয়নি, সেই প্রশ্ন তোলেন সমন্বয়ক মাহিন সরকার। উত্তরবঙ্গ থেকে উপদেষ্টা নিয়োগ ছাড়াও আরও দুটি দাবি উত্থাপন করেছেন আন্দোলনকারীরা।
সেটি হল- বিতর্কিত ও জুলাই বিপ্লবকে ধারণ করে না, এমন উপদেষ্টাকে অপসারণ এবং পলিসি প্রণয়নে উত্তরবঙ্গের বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতাদের পরামর্শ গ্রহণ ও সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আমলা ও কর্মকর্তা নিয়োগে আঞ্চলিক বৈষম্য না করা।
অন্তর্বর্তী সরকারে নতুন উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পাওয়া মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর প্রসঙ্গে সমাবেশে মাহিন সরকার বলেন, “তিনি কখনও বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে ধারণ করেন না। তাকে কীভাবে এই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। যে বাংলাদেশের মানুষের সংস্কৃতিকে ধারণ করে না আমরা তার অপসারণ চাই।”
বিক্ষোভে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রিফাত রেদোয়ান জামি বলেন, “বাংলাদেশের মানুষের ৫০ শতাংশ ভাত আসে উত্তরবঙ্গ থেকে। বিভিন্ন বিপ্লবে রক্ত দিয়ে বিজয় এনেছেন উত্তরবঙ্গের সাহসী সন্তানরা। কিন্তু ভোগ করে অন্যরা। একটি বিভাগ থেকেই ১৩ জন উপদেষ্টা, অথচ উত্তরবঙ্গের ১৬টি জেলা থেকে কোনো উপদেষ্টা নেই। বীজ বপন করবে একজন, ফল পাবে অন্যরা, এমনটা কখনই ছাত্রজনতা মেনে নেবে না।”
তিনি বলেন, “এই সরকার শহীদের রক্তের বিনিময়ে দাঁড়িয়ে আছে। শহীদের রক্তের সঙ্গে গাদ্দারি করে ফ্যাসিবাদকে বরণ করে নিচ্ছে। উপদেষ্টা পরিষদেও তৈরি হচ্ছে কোরাম। উপদেষ্টারা ক্ষমতায় বসার পর অন্ধ আর বোবা হয়ে গেছে।”
উপদেষ্টা নির্বাচনে বিভাগ ভিত্তিক বৈষম্য হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “এর বিরুদ্ধে উপদেষ্টা পরিষদকে সরব হওয়ার আহ্বান করছি। জুলাই অভ্যুত্থানের ধারা বজায় রাখতে আমরা পুনরায় রক্ত ঝরাতে প্রস্তুত, তবুও বৈষম্যকে মেনে নেব না ”