গুচ্ছ ভর্তি নিয়ে আগামী ১ জানুয়ারি রাতে বসবেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উপাচার্যরা। ওই সভায় ভর্তি প্রক্রিয়া শুরুর দিন তারিখ চূড়ান্ত হতে পারে।
Published : 29 Dec 2024, 11:47 PM
নতুন শিক্ষাবর্ষে সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (জিএসটি) বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য গুচ্ছ পদ্ধতির পরীক্ষাই হচ্ছে।
‘শিগগিরই’ এ ভর্তির কার্যক্রম শুরু হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক এবং মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ।
যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, তাদের বাদ দিয়ে অন্য ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের কথা ভাবা হচ্ছে।
গুচ্ছ ভর্তি নিয়ে আগামী ১ জানুয়ারি রাতে বসবেন বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উপাচার্যরা। ওই সভায় ভর্তি প্রক্রিয়া শুরুর দিন তারিখ চূড়ান্ত হতে পারে।
গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করেছে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ও ইতোমধ্যে গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
রোববার শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আনোয়ারুল আজীম আখন্দও ছিলেন ওই বৈঠকে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “শিক্ষা উপদেষ্টা মহোদয়ের সঙ্গে আমরা তিনজন উপাচার্য আলোচনা করেছি। তিনি ভর্তি প্রক্রিয়া শুরুর পরামর্শ দিয়েছেন।
“আমরা আগামী ১ জানুয়ারি রাতে সব উপাচর্যরা বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেখানে আবেদন শুরু, ফি, ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ইত্যাদি বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে। আশা করছি ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে শিগগিরই গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে।”
এদিকে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এবং গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও গুচ্ছ থেকে বের হয়ে যেতে চায়।
এ বিষয়ে আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পদ্ধতি ভর্তি চলানোর সক্ষমতা নেই, কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের আছে। এমন বাস্তবতায় কোনো বিশ্ববিদ্যালয় যদি বের হয়ে যেতে চায়, সেটি তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। তবে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দুর্ভোগ বিবেচনায় নিয়ে গুচ্ছভর্তি প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।”
চলতি ডিসেম্বর মাসে তিনবার গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের চিঠি দিয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি চালানোর অনুরোধ জানানো হয়।
গত ১ ডিসেম্বর উপাচার্যদের পাঠানো এক চিঠিতে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এককভাবে সিদ্ধান্ত নিতে থাকলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হবে।”
গত ১০ ডিসেম্বর গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের একই অনুরোধ জানিয়ে একটি চিঠি পাঠায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সর্বশেষ গত ২৩ ডিসেম্বর গুচ্ছে থাকার অনুরোধ জানিয়ে উপাচার্যদের চিঠি দেয় মন্ত্রণালয়।
সবশেষ চিঠিতে মন্ত্রণালয় বলে, “উচ্চশিক্ষার উন্নয়ন ও শিক্ষার্থীবান্ধব কার্যক্রম হিসেবে গুচ্ছ পদ্ধতি ইতোমধ্যে জনমনে আস্থা অর্জন করেছে। এই পদ্ধতিতে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পৃথকভাবে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের যাতায়াত, আবাসন, এবং অন্যান্য খরচ বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছে।
“গুচ্ছ পদ্ধতির মাধ্যমে একটি মানসম্মত প্রশ্নপত্রের ভিত্তিতে মেধাভিত্তিক ভর্তি নিশ্চিত হওয়ার পাশাপাশি অভিভাবকগণ একাধিক ভর্তি পরীক্ষার দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেয়েছেন। এমন অবস্থায় উপাচার্যদের নেতৃত্বে তার বিশ্ববিদ্যালয়টি যেন গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হল।”