দাবি আদায়ে মঙ্গলবার সকালে পিএসসি সচিবালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রার্থীরা।
Published : 07 Apr 2025, 07:57 PM
চুয়াল্লিশতম বিসিএসের ভাইভা শেষে এবং ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন প্রার্থীরা।
বর্তমান কমিশন বিসিএসকে ‘একটা জটলার ভাগাড়ে’ পরিণত করেছে বলে দাবি করে তারা বিসিএসের ‘জট নিরসনের’ দাবি জানিয়েছেন।
দাবি আদায়ে মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সচিবালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন প্রার্থীরা।
সোমবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীরা চলমান ভাইভা ও ইতোমধ্যে অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর আরেক বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানান।
এর আগে রোববার প্রার্থীরা বিসিএসের জট নিরসন ও ৪৪ থেকে ৪৭তম বিসিএসের বিষয়ে সুস্পষ্ট রোডম্যাপের দাবিতে পিএসসি সচিবালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন এবং কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইমতিয়াজ আহমেদ সিয়াম নামের এক প্রার্থী ওই আলোচনার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, “আমরা প্রতিনিধিরা ভেতরে গিয়ে কমিশন সভায় উপস্থিত হলে, তারা আমাদের দাবি জানতে চান। আমরা আমাদের দাবির মূলভাব ব্যক্ত করি ও স্মারকলিপি প্রদান করি। আমরা একই সাথে ৪৪, ৪৫, ৪৬, ৪৭তম বিসিএসের বাস্তবতা তুলে ধরি। জট নিরসনে আমাদের সংস্কার দাবি জোরালোভাবে ব্যক্ত করি।
“এরপর সদস্য স্যারেরা আমাদের নানান যুক্তি দিয়ে আটকে দিতে থাকেন। তারা বলেন যে, ‘আপনারা আজকে না আসলেও আমাদের একটা রোডম্যাপ ছিল, হয়ত দ্রুত এর বহিঃপ্রকাশও পেত’। তখন আমাদের জানানো হয়, চুয়াল্লিশের ভাইভা কার্যক্রম অবিলম্বে রুটিন প্রকাশ করে শুরু করা হবে এবং মে মাসে তারা ৪৪ শেষ করতে না পারলেও জুনে অবশ্যই শেষ করবেন, ৮ মে থেকে লিখিত পরীক্ষা শুরু হবে, একই সাথে লিখিত ও ভাইভা চলবে বলে আমাদের জানান এবং এই পরিকল্পনা তাদের পূর্ব-স্থিরকৃত।”
‘প্রার্থীদের ওপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়ে কৃত্রিম সম্মতি নিয়ে সভা শেষ করা হয়’ দাবি করে সিয়াম আরও বলেন, “আমরা ব্যথিত মনে বলতে চাই, পিএসসি এখন একটা প্রিলি-রিটেন প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে। এভাবে তারা বিসিএসকে একটা জটলার ভাগাড়ে পরিণত করেছেন।
“আমরা পিএসসিকে জানিয়ে দিতে চাই আপনারা ভুলবেন না এই পিএসসি জুলাইয়ের তাজা রক্তের ওপর ভেসে আছে। আমরা এটাও স্মরণ করাতে চাই জুলাই অভ্যুত্থান যারা শুরু করেছিলেন তারা প্রায় সবাই ছিলেন চাকরিপ্রার্থী মূলত বিসিএস-প্রার্থী, যাদের অধিকাংশ এখন দেশসেবায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছেন।”
পিএসসির কর্মকাণ্ড ‘জুলাই চেতনার সাথে অসমঞ্জস্যপূর্ণ’ মন্তব্য করে সিয়াম আরও বলেন, “পিএসসির এই অমানবিক সিদ্ধান্ত আমরা প্রত্যাখ্যান করলাম। আমরা আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালিয়ে যাব। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, ৪৬তম লিখিত পরীক্ষা হুট করে নেওয়া যাবে না।”
এসময় মঙ্গলবার সকালে পিএসসি সচিবালয়ের সামনে দাবি আদায়ে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেন ইমতিয়াজ আহমেদ সিয়াম।
পরে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমাদের মূল দাবি হল বিসিএসের যে জট লেগে গেছে ৪৪, ৪৫, ৪৬ ও ৪৭তম এর মধ্যে; বিসিএসের কার্যক্রমগুলো ধারাবাহিকভাবে চলুক। একটা শেষ করে আরেকটা অগ্রগতি হোক। একটার মাঝে যাতে আরেকটা ওভার ল্যাপিং না করে।
“আমরা চাচ্ছি, ৪৪তম বিসিএসের প্রায় ৬ হাজার প্রার্থীর ভাইভা বাকি আছে। তাদের ভাইভা শেষ করতে পিএসসির (৪৬তম লিখিত পরীক্ষা শুরুর) নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বড়জোড় অতিরিক্ত এক মাস বেশি সময় লাগবে। চুয়াল্লিশতমর ৭০ শতাংশের বেশি প্রার্থী ৪৬তম লিখিত পরীক্ষাও দেবেন। তাদের ৪৪ এর মৌখিক পরীক্ষা শেষ করে ৪৬ এর লিখিততে বসার সুযোগ করে দেওয়া হোক।”