মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে হাই কোর্ট।
Published : 09 Jul 2024, 04:40 PM
চাঁদপুরের পারভীন আক্তার হত্যা মামলায় আলোচিত খুনি রসু খাঁর মৃতুদণ্ড বহাল রেখেছে হাই কোর্ট।
মঙ্গলবার বিচারপতি সৈয়দ মো. জিয়াউল করিম ও বিচারপতি কে এম ইমরুল কায়েশের হাই কোর্ট বেঞ্চ মামলার আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের দিনব্যাপী এই রায় ঘোষণা করে।
রায়ে নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জহিরুল ইসলাম ও ইউনুসের সাজা বদলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা পরিশোধ না করলে তাদেরকে অতিরিক্ত একবছর করে সাজা খাটতে হবে। আসামিদের মধ্যে ইউনুস পলাতক রয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনিরুল ইসলাম। আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. সফি উল্লাহ।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুল ইসলাম বলেন, শুনানিতে তারা এই হত্যার আসামি রসু খাঁসহ তিনজনের অপরাধের ভয়াবহতা তুলে ধরেছেন। রসুর মৃত্যুদণ্ড বহালে তিনি সন্তুষ্ট।
বিচারপতি কে এম ইমরুল কায়েশ বেলা সাড়ে ১১টায় রায় পড়া শুরু করেন। শেষ হয় বিকাল ৪টার কিছু আগে।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, “রসু খাঁ কোনোভাবে অনুকম্পা পেতে পারে না। এ পৃথিবীতে তার বেঁচে থাকার কোনো অধিকার নেই। অন্যথায় সে এ সমাজের জন্য ক্ষতিকর হবে।”
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২০ জুলাই রাতে রসু খাঁ ও অপর আসামিরা ফরিদগঞ্জ উপজেলার মধ্য হাঁসা গ্রামের মাঠে পারভীন আক্তারকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এ ঘটনার পরদিন স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, পারভীনের স্পর্শকাতর অঙ্গসহ শরীরের নানা স্থানে ২০টি সিগারেটের পোড়া দাগ ছিল। ওই সময়ে পারভীনের পরিচয় জানা না থাকায় পরদিন (২১ জুলাই) ফরিদগঞ্জ থানার এসআই মীর কাশেম আলী বাদী হয়ে মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোশফিকুর রহমান একই বছরের ১৩ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
২০১৮ সালের ৬ মার্চ চাঁদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুল মান্নান এ রায় দেন। এরপর মামলার নথিসহ ডেথ রেফারেন্স হাই কোর্টে আসে। একইসঙ্গে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন আসামিরা।
রসু খাঁ চাঁদপুর সদর উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের মদনা গ্রামের মুন খাঁ ওরফে আবু খাঁর ছেলে। জহিরুল পার্শ্ববর্তী ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের সৈয়াল বাড়ির মো. মোস্তাফার ছেলে। আর ইউনুস একই গ্রামের মৃত মিসির আলীর ছেলে।
হত্যার শিকার পারভীন আক্তার ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা ইউনিয়নের পালতালুক গ্রামের আবুল কালামের স্ত্রী। তার বাবার নাম কাজল খান।