কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে ‘সন্ত্রাসীদের’ মূল লক্ষ্য ছিল পুলিশ।
Published : 23 Jul 2024, 11:04 PM
aকোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতা রাজধানীতে ছড়িয়ে পড়ার মধ্যে পুলিশকে রাস্তায় পেয়ে শুধু ‘হত্যা করা হয়নি’, তাদের বাসা খুঁজে বের করে হামলা চালানোর ঘটনাও তুলে ধরেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের এক কর্মকর্তা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন মঙ্গলবার বলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের নামে সন্ত্রাসীরা রামপুরা এলাকায় পুলিশের বাসা খুঁজে খুঁজে হামলা চালিয়েছে। তিন পুলিশ সদস্যদের ভাড়া বাসায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা হয়। হামলায় কয়েকজন আহত হন।
“আমরা অতিরিক্ত ফোর্স নিয়ে সেসব পুলিশ সদস্যদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠাই।”
তিনি বলেন, পুলিশের এক সদস্যের সন্তান তার বাবার পুলিশের পোশাক নিয়ে লন্ড্রিতে যাওয়ার সময় ওই সন্তানকেও পেটানো হয়েছে।
সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটাবিরোধী আন্দোলন চলাকালে রেল, নৌ, সড়ক পথে অবরোধের মধ্যে দেশজুড়ে সহিংসতায় ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এরমধ্যেই পুলিশের উপর হামলার এসব ঘটনা ঘটে। পরে বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের মধ্যে নজিরবিহীন নৈরাজ্য শুরু হলে কারিফিউ জারি করা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান সোমবার বলেন, কোটা আন্দোলনের নামে নাশকতাকারীরা শুধু পুলিশ সদস্যকে নয়, তাদের সন্তানদেরও পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে।
তিনি জানান, ট্রাফিক পুলিশের প্রায় ৫৪টি পুলিশ বক্স পুড়িয়ে ফেলা হয়। গুলশানে ট্রাফিকের উপ কমিশনারের অফিস, রমনা, রামপুরা মহখালীসহ চারটি ট্রাফিকের সহকারী কমিশনার কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
“ঢাকা মহানগর ট্রাফিক বিভাগের অফিস, যানবাহনসহ প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”
ওয়ারি বিভাগে উপ কমিশনার ইকবাল হোসাইন বলেন, তার আওতাধীন ছয়টি থানা (ডেমরা, যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, শ্যামপুর, গেন্ডারিয়া ও ওয়ারী) এলাকায় পুলিশের বাসায় গিয়ে হামলার ঘটনা না থাকলেও পুলিশ বাজার করতে বের হয়েছে বা বাসা থেকে বের হয়ে দায়িত্বপালনকালে যাওয়ার সময় বা সাদা পোশাকে ছিল এমন একাধিক পুলিশ সদস্য হামলার শিকার হয়েছেন।
“শুধু তাই নয়, তারা দুইজনকে মেরেই ফেলে, আহত করে তিনজনকে। এদের মধ্যে কাজলায় একজনকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে পিটিয়ে মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। দনিয়ায় একজন কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। তার অবস্থা আশঙ্খজনক।”
তিনি বলেন, একজন পুলিশ সদস্য ছুটিতে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকার কদমতলীর বাসায় আসার সময় তাকে ধাওয়া করা হয়। পরে ডোবায় আত্মরক্ষার জন্য লাফ দিয়েও রক্ষা পাননি তিনি। সেখান থেকে তুলে এনে তাকে কোপানো হয়। তাকে পরে উদ্ধার করা হয়। এখন আইসিইউতে রেখে চিকৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সহিংসতায় পুলিশের উপর হামলা ও হতাহতের তথ্য তুলে ধরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল মঙ্গলবার বলেন, আন্দোলন চলাকালে বিভিন্ন স্থানে হামলায় তিনজন পুলিশ ও এক আনসার সদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় ১ হাজার ১১৭ জন। এখনও প্রায় দেড়শত জন হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আইসিইউতে আছেন তিনজন। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আগের দিন রাতে মন্ত্রী বলেন, যারা আহত বা নিহত হয়েছেন তাদের সবার মাথায় আঘাত করা হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে ‘সন্ত্রাসীদের’ মূল লক্ষ্য ছিল পুলিশ।