৭২৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণিতে আগামী বছর আর শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে না।
Published : 20 Mar 2025, 02:22 PM
সর্বশেষ জাতীয় শিক্ষানীতি মেনে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চালু হওয়া নিম্নমাধ্যমিক পর্যায়ের শ্রেণিগুলো বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
পরীক্ষামূলকভাবে যে ৭২৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিম্নমাধ্যমিক পর্যায়ের ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির চালু ছিল, সেগুলোর ওই তিন শ্রেণি আগামী বছর থেকে বন্ধ করে দেওয়া হবে।
ওই স্কুলগুলোর ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণিতে আগামী ২০২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে শিক্ষার্থী ভর্তির না করার নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের বিদ্যালয় অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মাসুদ আকতার খান বৃহস্পতিবার সকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "আমরা প্রাথমিক শিক্ষায় মনোযোগ দিতে চাচ্ছি, তাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাই চালু থাকবে।
"যে প্রাইমারি স্কুলগুলোতে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি চালু ছিল, সেগুলোর ওই তিন শ্রেণির পাঠদান বন্ধ করা ও নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি না করার বিষয়ে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে সিদ্ধান্তে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা। তাই ওই স্কুলগুলোর ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণিতে আগামী শিক্ষাবর্ষে নতুন করে শিক্ষার্থী ভর্তি না করতে বলা হয়েছে।"
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ৭২৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণি চালু আছে। গত ১২ মার্চ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ওই স্কুলগুলোর নিম্নমাধ্যমিক পর্যায়ে নতুন করে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়ে আদেশ জারি করেছে। ওই শ্রেণিগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখার ব্যবস্থা নিতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে বলেছে মন্ত্রণালয়।
বর্তমানে দেশের প্রাথমিক শিক্ষা পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত। ২০১০ সালে করা সর্বশেষ জাতীয় শিক্ষানীতিতে প্রাথমিক শিক্ষার স্তর অষ্টম শ্রেণি ও মাধ্যমিক শিক্ষার স্তর দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত করার কথা বলা আছে।
২০১৩ সাল থেকে পরীক্ষামূলকভাবে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি চালুর অনুমোদন দেওয়া শুরু হয়। ২০১৬ সালে প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত করার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছিল। যদিও সে উদ্যোগ বাস্তবায়ন হয়নি।
সর্বশেষ ২০২৪ সালের মে মাসে প্রাথমিক শিক্ষাকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বিস্তৃত করে তা অবৈতনিক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সেসময় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকার।
অতিরিক্ত সচিব মাসুদ আকতার খান মনে করেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি চালু করার সিদ্ধান্ত 'খুব ভেবে-চিন্তে নেওয়া হয়নি'।
"আমাদের প্রাইমারি স্কুলগুলোর পর্যাপ্ত অবকাঠামো ও জনবল ছিল না। ফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির পাঠদান খুব ভালো হয়নি। তখনকার সরকার খুব ভেবে-চিন্তে সে সিদ্ধান্ত দেয়নি। আর আমাদের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষা চালুই ছিল।"
তাই এখন থেকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষায় মনোযোগ দেবে বলে এ কর্মকর্তার ভাষ্য।