তুচ্ছ কারণে ক্ষিপ্ত চাচার ছুড়ে মারা ঢিলের আঘাতে আহত হয়েছিল শিশুটি। সঙ্গে সঙ্গেই তাকে নিয়ে স্বজনরা ছুটে এসেছিলেন ঢাকা মেডিকেলে; কিন্তু বাঁচানো যায়নি।
Published : 06 Dec 2023, 06:01 PM
ঢাকা মেডিকেলে বুকচাপড়ে আহাজারি করছিলেন বিথী আক্তার; কারণ কিছুক্ষণ আগেই তিনি হারিয়েছেন তার একমাত্র বুকের ধনকে।
দেড়মাস বয়সী যে শিশুটি হাত-পা ছুড়ছিল মায়ের কোলে, কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে তার মরদেহের ঠাঁই হয়েছে হাসপাতালের মর্গে। মায়ের আহাজারি তাই তীব্র।
“আমি জীবনে অনেক কষ্ট করছি। ওরে আমি গোসল করায়ে কপালে কালো টিপ দিলাম যেন নজর না লাগে। কিন্তু পোলা আমার চইলা গেল। কি নিয়ে থাকব,” বুকফাটা আর্তনাদের মধ্যেই বলছিলেন বিথী।
ঘটনাটি ঘটে বুধবার দুপুরে রাজধানীর মাতুয়াইলের এক বাসায়। তুচ্ছ কারণে ক্ষিপ্ত চাচার ছুড়ে মারা ঢিলের আঘাতে আহত হয়েছিল শিশুটি। সঙ্গে সঙ্গেই তাকে নিয়ে স্বজনরা ছুটে এসেছিলেন ঢাকা মেডিকেলে; কিন্তু বাঁচানো যায়নি।
বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে শিশুটি মারা যায় বলে জানান হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া।
“শিশুটির বয়স এক মাস ২২ দিন। তার মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।”
শিশুটির বাবা দ্বীন মোহাম্মদ বৈদ্যুতিক সুইচ তৈরির কারখানায় কাজ করেন। স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানকে নিয়ে তিনি থাকেন মাতুয়াইল কবরস্থান রোডের এক ভাড়া বাসায়। সেখানেই এই ঘটনা ঘটে।
হাসপাতালে শিশুটির বাবা বলেন, তারা চার ভাই। দুপুরে ছোট ভাইয়ের বাই সাইকেল নিয়ে বের হচ্ছিলেন ছোট ভাই খায়রুল (১৯)। ব্রেক না থাকায় তিনি সাইকেল নিতে মানা করেন। এতে খায়রুল ক্ষেপে গিয়ে ভাঙা মাটির হাড়ি একটি ঠুকরো তাকে ছুড়ে মারেন।
“সে সময় শিশুটিকে গোসল করিয়ে ঘরে নিয়ে যাচ্ছিল আমার স্ত্রী। ঢিলটি পাশের দেওয়ালে লেগে ছিটকে আমার বাচ্চার মাথায় লাগলে তার নড়াচড়া বন্ধ হয়ে যায়। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসি,” বলেন শিশুটির বাবা।
শিশুটির চাচা খায়রুল ঘটনার পর থেকেই পলাতক। তিনিও একটি সুইচ কারখানায় কাজ করেন।