দুদক বলছে, ৩০.২৫ কাঠা জমি ক্রয় দেখিয়ে প্রায় ৯৫ কোটি টাকা আত্মসাত করার চেষ্টা এবং সাড়ে ৮ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে তাদের তদন্তে।
Published : 27 May 2024, 08:39 PM
জমি কেনায় অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রোববার কমিশনের বৈঠকে এই অভিযোগপত্র অনুমোদন করা হয় বলে দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম জানিয়েছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজী শিগগিরই অভিযোগপত্রটি আদালতে দাখিল করবেন।
দুদক বলছে, ৩০.২৫ কাঠা জমি ক্রয় দেখিয়ে প্রায় ৯৫ কোটি টাকা আত্মসাতের করার চেষ্টা এবং সাড়ে ৮ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে তাদের তদন্তে।
বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চুর পাশাপাশি তার স্ত্রী শিরিন আক্তার, তার ভাই শেখ শাহরিয়ার পান্না, বাচ্চুর ছেলে শেখ রাফা হাই ও শেখ ছাবিদ হাই অনিক এবং ক্যাপিটাল বনানী ওয়ানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন আহমেদকে আসামি করা হয়েছে অভিযোগপত্রে।
দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক নুরুল হুদা ২০২৩ সালের ৩ অক্টোবর এ মামলা দায়ের করেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসামি বাচ্চু ২০১২ সালের ৮ জুলাই ক্যান্টনমেন্ট বাজার এলাকার ৬ নম্বর প্লটের ৩০.২৫ কাঠা জমি ১১০ কোটি টাকায় কেনার জন্য অপর আসামি আমিন আহমেদের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তিপত্র করেন। চুক্তি করা জমির মূল্য ১১০ কোটি টাকা ও চুক্তিপত্র স্বাক্ষরের সময় পরিশোধিত অর্থ ১০ কোটি টাকা।
চুক্তিপত্র অনুযায়ী দুটি দলিলে ভূমির রেজিস্ট্রি করা হয়। যার মধ্যে ২০১২ সালের ১৬ অক্টোবর প্রথম দলিলে ১৮ কাঠা জমির দাম ৯ কোটি টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। ক্রেতা দেখানো হয়েছে শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু, শেখ শাহরিয়ার পান্না ও শিরিন আক্তারকে।
দ্বিতীয় দলিলে ওই একই বছরে ১২.২৫ কাঠার দাম ৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। সেখানে ক্রেতা হলেন শেখ ছাবিদ হাই অনিক ও শেখ রাফা হাই।
দুদক বলছে, জমির মোট রেজিস্ট্রেশন মূল্য ধরা হয়েছে ১৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। রেজিস্ট্রেশনে মূল্য ৯৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা কম দেখিয়ে অবৈধ আয় গোপন করার চেষ্টা করেছেন আসমিরা। এ ছাড়া জমির মূল্য কম দেখিয়ে সরকারের ৮ কোটি ৫২ লাখ ৭৫ হাজার টাকার রাজস্বও ফাঁকি দিয়েছেন তারা।
বেসিক ব্যাংক ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় বিভিন্ন সময় ৫৯টি মামলা দায়ের করে দুদক। সেসব মামলার কোনটিতেই আসামি হিসেবে আবদুল হাই বাচ্চুর নাম ছিল না ।
গত বছরের ১২ জুন আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। সেখানে চার্জশিটে ৫৯টি মামলার মধ্যে ৫৮টিতেই আসামি হিসেবে বাচ্চুর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।