সাংবাদিক রোজিনাকে অব্যাহতির আবেদনে বাদীর আপত্তি

বাদী নারাজি আবেদন দেবেন বলে সময় চেয়েছেন। সে কারণে রোজিনার মামলা থেকে অব্যাহতি আবেদনের ওপর শুনানি হয়নি।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Jan 2023, 12:42 PM
Updated : 15 Jan 2023, 12:42 PM

সরকারি নথি ‘চুরির চেষ্টার’ অভিযোগে ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস’ আইনের মামলা থেকে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে অব্যাহতি দেওয়ার যে আবেদন গোয়েন্দা পুলিশ করেছে, তাতে আপত্তি জানাবেন বাদী।

মামলার বাদী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপসচিব শিব্বির আহমেদ ওসমানীর আইনজীবী রোববার গোয়েন্দা পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে ‘নারাজি’ জানাতে সময়ের আবেদন করলে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আসাদুজ্জামান নূর তা মঞ্জুর করেন।

এদিন বাদীর উপস্থিতিতে রোজিনার মামলা থেকে অব্যাহতি আবেদনের ওপর শুনানি হওয়ার কথা ছিল। বাদীর সময়ের আবেদনের কারণে তা পিছিয়ে যায়।  

রোজিনার অন্যতম আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কমর্কার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলার বাদীর পক্ষে একজন আইনজীবী ওকালতনামা জমা দিয়ে সময় আবেদন করেছেন। বিচারক সময়ের আবেদন মঞ্জুর করেছেন।“

তবে মামলার পরবতী শুনানির কোনো তারিখ ঠিক করেননি বিচারক। প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলাম এদিন আদালতে হাজির ছিলেন।

তাকে এ মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ রেখে গত ১১ অক্টোবর হাকিম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মোর্শেদ আলম খান। আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগের ‘সত্যতা’ পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদনে তিনি আদালতকে জানান।

Also Read: সাংবাদিক রোজিনার বিরুদ্ধে মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে

Also Read: ছয় দিন পর কারামুক্ত সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম

Also Read: সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম পেলেন ‘ফ্রি প্রেস অ্যাওয়ার্ড’

প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ২০২১ সালের ১৭ মে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে গেলে স্বাস্থ্য সচিবের পিএস সাইফুল ইসলামের কক্ষে তাকে আটকে ফেলে কর্মচারীরা। তারা অভিযোগ করেন, ওই কক্ষ থেকে সরকারি নথি সরানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি।

কয়েক ঘণ্টা ওই কক্ষে আটকে রাখার পর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন রোজিনা। পরে এই সাংবাদিক তাকে নির্যাতনের অভিযোগও করেছিলেন।

সেই রাতে রোজিনাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় শাহবাগ থানায়।

স্বাস্থ্য বিভাগ তখন ব্রিটিশ আমলের অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ও দণ্ডবিধির কয়েকটি ধারায় মামলা করে রোজিনার বিরুদ্ধে।

তবে রোজিনা ওই সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। আর তার সহকর্মীরা বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ‘অনিয়ম-দুর্নীতি’ নিয়ে প্রতিবেদন করায় তাকে ‘হয়রানি’ করা হচ্ছে।

পরদিন আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয় রোজিনাকে। দেশে-বিদেশে সাংবাদিকসহ অধিকারকর্মীদের ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে ছয় দিন পর জামিনে মুক্তি পান রোজিনা।