আগামী ৩ বছর তিনি এই দায়িত্ব পালন করবেন।
Published : 28 Oct 2024, 05:33 PM
বাংলা একাডেমিতে সভাপতি হিসেবে যোগ দিয়েছেন প্রাবন্ধিক ও গবেষক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক।
সোমবার সকালে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, সচিব মোহা. নায়েব আলী ও পরিচালকরা।
অধ্যাপক আবুল কাসেম এসময় বলেন, “বাংলা একাডেমি প্রকৃত অর্থেই জাতির মননের প্রতীক। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের পর জাতীয় অভিপ্রায়ে বাংলা একাডেমির জন্ম হয়। পাকিস্তান রাষ্ট্রের ঘেরাটোপে থেকেও একাডেমি তার স্বাধীন সত্তা নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেছে এবং অতি অল্প সময়ের মধ্যে গবেষণা ও অনুবাদ কার্যক্রমে সফলতার স্বাক্ষর রেখেছে।”
তিনি বলেন, “বাংলা একাডেমির সঙ্গে সম্পর্ক বহুযুগের। এখন এ সম্পর্কে একটি নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে। মহাপরিচালক ও একাডেমি পরিবারের সকলের সহায়তায় আমার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের চেষ্টা করে যাব।”
৮৪ বছর বয়সী আবুল কাসেম ফজলুল হক বাংলা একাডেমিতে সেলিনা হোসেনের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন। সোমবার থেকে পরবর্তী ৩ বছর তিনি এই দায়িত্ব পালন করবেন।
২০২২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি একাডেমির সভাপতি পদে দায়িত্ব পাওয়া কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ১৭ অক্টোবর পদত্যাগ করেন।
আবুল কাসেম ফজলুল হকের জন্ম ১৯৪০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায়। ময়মনসিংহ জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং আনন্দমোহন কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষে করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই শিক্ষকতা শুরু করেন আবুল কাসেম ফজলুল হক। পরে বাংলা বিভাগের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
তার লেখা ২১টির মতে বই প্রকাশিত হয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশের সংগ্রামের ইতিহাস নিয়ে ‘মুক্তিসংগ্রাম’; ‘কালের যাত্রার ধ্বনি’; ‘একুশে ফেব্রুয়ারি আন্দোলন ’এর মত বই যেমন আছে, তেমনি আছে রাজনীতি, রাষ্ট্র ও সমাজ চিন্তার ফসল ‘নৈতিকতা: শ্রেয়োনীতি ও দুর্নীতি’; ‘যুগসংক্রান্তি ও নীতিজিজ্ঞাসা’, ‘মাও সেতুঙের জ্ঞানতত্ত্ব’; ‘রাজনীতি ও দর্শন’ ‘আশা-আকাঙ্ক্ষর সমর্থনে’; ‘বাঙলাদেশের রাজনীতিতে বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা’; ‘অবক্ষয় ও উত্তরণ’; ‘রাজনীতি ও সংস্কৃতি: সম্ভাবনার নবদিগণ্ত’; ‘রাষ্ট্রচিন্তায় বাংলাদেশ’।
সাহিত্য নিয়ে তার কাজের মধ্যে ‘উনিশ শতকের মধ্যশ্রেণি ও বাঙলা সাহিত্য ‘; ‘বাঙলাদেশের প্রবন্ধ সাহিত্য’, ‘সাহিত্যচিন্তা’; ‘সাহিত্য ও সংস্কৃতি প্রসঙ্গে’; ‘সংস্কৃতির সহজ কথা’; ‘আধুনিকতাবাদ ও জীবনানন্দের জীবনোৎকণ্ঠা’ অন্যতম।
এ ছাড়া ‘বার্ট্রান্ড রাসেল প্রণীত: রাজনৈতিক আদর্শ’; ‘বার্ট্রান্ড রাসেল প্রণীত: রাজনৈতিক আদর্শ’ নামে দুটি অনুবাদগ্রন্থও আছে তার। কয়েকটি বইয়ের সম্পাদনাও করেছেন।
আশির দশক থেকে লোকায়ত নামে একটি মননশীল পত্রিকার সম্পাদনা করে আসছেন আবুল কাসেম ফজলুল হক। আহমদ শরীফ প্রতিষ্ঠিত স্বদেশ চিন্তা সংঘের সভাপতির দায়িত্বও তিনি পালন করেছেন। পত্র-পত্রিকায় কলাম লিখেছেন নিয়মিত।
১৯৮১ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পান এই লেখক।
তার দুই সন্তানের মধ্যে শুচিতা শরমিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। আর ফয়সল আরেফিন দীপন জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী। ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর দীপনকে হত্যা করে জঙ্গিরা।
পুরনো খবর